BRAKING NEWS

আমরণ অনশনে অসুস্থ দু’জনকে নেয়া হল হাসপাতালে, ধৃতরাষ্ট্র রাজ্য সরকার, কৃষি অফিসারদের সমিতির সাথে কথা বলতে অনিহা মুখ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ এপ্রিল৷৷ চাকুরীর দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও অনশন জারি রেখেছেন কৃষি ও উদ্যান স্নাতকরা৷ ২১

আমরণ অনশনরত কৃষি ও উদ্যান স্নাতকদের দুই জনকে জিবি হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে, আরও কয়েকজনের অবস্থা গম্ভীর৷ ছবি নিজস্ব৷

জন ছেলে মেয়ে চাকুরীর দাবিতে অনশন করছেন৷ তাদের মধ্যে দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷ তাদের জি বি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ অথচ গতকাল কৃষি ও উদ্যান দপ্তরের অধিকর্তা তাদের সাথে দেখা করে যাওয়ার পর আজ পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে আর কেউ অনশনকারীদের সাথে কথা বলতে আসেননি৷ রাজ্যের কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নে রাজ্য সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না, গুরুতর এই অভিযোগ এনেছে কৃষি স্নাতক সমিতি৷ এদিকে, রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারীক অনশনস্থলে গিয়ে তাদের খোজখবর নিয়ে গেছেন৷ কৃষি দপ্তরের অফিসারদের সংগঠন ত্রিপুরা কৃষি স্নাতক সমিতির সদস্যরা আজ দুপুরে অনশনস্থলে গিয়ে অনশনকারীদের খোজ খবর নিয়েছেন৷ তাদের দাবি পূরণ করার জন্য রাজ্য প্রশাসনের কাছে সমিতির তরফেও আবেদন জানানো হবে অনশনকারীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷
এদিন সমিতির সম্পাদক উৎপল দত্ত জানিয়েছেন, ১৫ দিন আগে অন্যান্য বিষয় সহ কৃষি স্নাতকদের চাকুরীর বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং কৃষিমন্ত্রীর সময় চাওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, তাদের এখনও পর্যন্ত কেউ সময় দেননি৷ তবে, আবারও মুখ্যমন্ত্রী এবং কৃষিমন্ত্রীর সাথে দেখা করার চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন৷ উৎপলবাবু এদিন বলেন, অনশনকারীদের আন্দোলন যুক্তিযুক্ত৷ কৃষি দপ্তরে প্রচুর পদ খালি পড়ে রয়েছে৷ রাজ্যে কৃষির উন্নয়ননে ঐ পদগুলি পূরণ হওয়া খুবই জরুরী৷ কিন্তু, রাজ্য সরকার এবিষয়ে কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না, তাই সমিতির তরফে মুখ্যমন্ত্রী এবং কৃষি মন্ত্রীর সাথে দেখা করার আবেদন জানানো সত্বেও তাঁরা কোন পাত্তা দিচ্ছেন না৷ অনশনকারীদের প্রতি সহানুভূতি এবং সমর্থন জানিয়ে সমিতি রাজ্য সরকারের ভূমিকায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে৷
এদিকে, অনশনকারীরা আজ সাংবাদিকদের জানান, রাজ্যে কৃষি ও উদ্যান স্নাতক বেকারের সংখ্যা ৬৫০৷ কৃষি দপ্তরের অধীন টিএএফএস গ্রেড ১ অফিসার পদে ২৩৯টি, এটিএমএ প্রকল্পে ২৫০টি, কেভিকে প্রকল্পে ২৮টি এবং এআইসিআরপি(সায়েন্টিস্ট) পদে ১০টি শূণ্যপদ রয়েছে৷ ২০১০ সালে শেষবারের মতো ৫৪ জন নিয়োগ করা হয়েছিল৷ এরপর থেকে কৃষি দপ্তরে ঐ শূণ্যপদগুলিতে নিয়োগ বন্ধ হয়ে রয়েছে৷ ২০১৬ সালে ৫০ জন নিয়োগ করা হবে বলে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল৷ কিন্তু তাতে প্রতিবন্ধিদের জন্য পদ রাখেনি রাজ্য সরকার৷ যার ফলে, উচ্চ আদালতে মামলা হয় এবং আদালত নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল৷ উৎপলবাবু আরো জানান, ১৯৯৯ সাল থেকে কৃষি দপ্তরে কৃষি ও উদ্যান স্নাতক নিয়োগের জন্য যতবার বিজ্ঞপ্তি হয়েছে, তাতে প্রতিবন্ধিদের জন্য কোন পদ সংরক্ষিত রাখা হয়নি৷ যেহেতু উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংশোধন করে তাদেরকেও চাকুরী দেওয়ার বন্দোবস্ত করুক রাজ্য প্রশাসন, দাবি অনশনকারীদের৷
এদিন অনশনকারীরা জানিয়েছেন, সারা ভারত কৃষি ছাত্র সমিতি তাদের অনশন আন্দোলনের সমর্থন জানিয়েছে৷ গত ৭ এপ্রিল সমিতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় কৃষি, রাজ্যপাল তথাগত রায়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের সচিব, রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং কৃষি দপ্তরের প্রধান সচিবের কাছে চাকুরীর দাবিতে অনশন আন্দোলনকে ঘিরে চিঠি পাঠিয়েছে৷ সমিতি এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে৷ রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সমিতি৷
অনশনকারীদের অভিযোগ, প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এবং শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের ছেলে মেয়েরা বহিরাজ্যে কৃষি ও উদ্যান বিষয়ে পড়াশুনা করছেন৷ তারা স্নাতক ডিগ্রি পাওয়ার তাদের চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার জন্যই শূণ্যপদগুলি এখন পূরণ করা হচ্ছে না৷ তাদের আরো অভিযোগ, কৃষি দপ্তরের অধিকর্তার পিএ’কে দিয়ে গত জানুয়ারী মাসে তাদের আন্দোলনে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছিল৷ অনশনকারীরা এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাদের দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন প্রত্যাহার করা হবে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *