লখনউ, ১০ মার্চ (হি.স.) : বৃহস্পতিবার বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার পরে কিছুটা নড়েচড়ে বসেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব| বিজেপির ক্ষমতায় আসা আটকাতে বিরোধী মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে ভোট পরবর্তী জোট গড়ার জল্পনা জিইয়ে রাখলেন অখিলেশ| বৃহস্পতিবার বুথ ফেরত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গোবলয় রাজ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে উঠে আসছে বিজেপি| এরপরই এক সাক্ষাত্কারে অখিলেশ বলেন, গেরুয়া দলের ক্ষমতায় আসা আটকাতে যেকোনও সম্ভবনার জন্যই তিনি দরজা খোলা রাখছেন|
অখিলেশের জোট জল্পনা নিয়ে বিজেপি মন্তব্য অখিলেশের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্যের প্রধান কেশব প্রসাদ মৌর্য বলেন, সপা সুপ্রিমো বসপার সঙ্গে হাত মেলানোর ইঙ্গিত দিয়ে ফল বেরনোর আগেই নিজের হার স্বীকার করে নিয়েছে| তাঁর কথায়, সপা-কংগ্রেস এবং বসপা, বিজেপির বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে গোপন আঁতাত করেছিল| তবে সে গুড়ে বালি| বিজেপি তিনশোর বেশি আসন জিতবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন|
এক সাক্ষাত্কারে অখিলেশ বলেন, কেউ চায় না রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হোক| সমাজবাদী-কংগ্রেস জোট পর্যাপ্ত আসন পাবে| আমরা নিজেরাই সরকার গড়ব বলে দাবি করেন| বসপার সঙ্গেও নির্বাচন পরবর্তী জোটের জন্য প্রস্তুত কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে অখিলেশ বলেন, আমি এখনই কোনও জোট নিয়ে মন্তব্য করব না| সরকার গড়ার জন্য সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস জোট যথেষ্ট আসন পাবে| মহাজোটের জল্পনা তবে বসপার সঙ্গে জোট জল্পনা জিইয়ে রেখে অখিলেশ বলেন, যদিও আমি সবসময় বলে এসেছি, বসপা প্রধান আমার আত্মীয়, এটা খুব স্বাভাবিক মানুষ ভাবতে পারে আমরা ওদের সাহায্য নিতে পারি| কিন্তু সেটা এখনই বলা মুশকিল| নির্বাচনের ফল ঘোষণার কয়েক ঘন্টা আগে সমাজবাদী পার্টির সভাপতির এহেন মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই মহাজোটের জল্পনাকে উস্কে দিয়েছে|
উল্লেখ্য, নির্বাচনের প্রচারেও বারবার দেখা গিয়েছে মায়াবতী কখনও কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীকে সরাসরি আক্রমণ করেননি| আবার উল্টোদিকে রাহুলও প্রচারে বসপা সুপ্রিমোর সুখ্যাতিই করেছেন| তার মতে, দেেশর জন্য বিজেপি ভয়ঙ্কর, বসপা নয়| বসপা-সপা অতীত জোট ১৯৯৩ সালে শেষবার বিধানসভায় জোট বেঁধে লড়েছিল| বিধানসভার আসনসংখ্যা তখন ছিল ৪২৫ (উত্তরাখণ্ড তখনও আলাদা হয়নি)| বসপা ও সপা জোট পেয়েছিল ১৭৬টি আসন| তখন জনতা দল ও কংগ্রেস বাইরে থেকে সমর্থন দেওয়ায় মুলায়ম সিং যাদবের নেতৃত্বে সরকার গঠন হয়েছিল| ১৯৯৫ সালে মায়াবতী সমর্থন তুলে নেওয়ায় মুলায়মের সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে| এরপর মুলায়মের সমর্থকরা মায়াবতীকে হেনস্থা করে| বসপার পাঁচ বিধায়ককে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জোর করে সমর্থন দেওয়ার জন্য চিঠিতে সই করানো হয় বলে অভিযোগ| এরপর বিজেপির বাহ্যিক সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ে মায়াবতী| কিন্তু তা মাত্র ৪ মাস টিকেছিল সেই সরকার |