হিন্দুস্থানে হিন্দু আইন হবে তাতে ক্ষতি কোথায় ঃ বিপ্লব, উপজাতি ফোরামে খুশী বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের দাবী ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল’ মঞ্চ গঠনে উপলক্ষ মাত্র

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি৷৷ নামেই যেখানে ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার সুযোগ নেই সেখানে কোন আইনের কিইবা

মঙ্গলবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিজেপি রাজ্য কমিটির সভাপতি বিপ্লব দেব৷ ছবি নিজস্ব৷
মঙ্গলবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিজেপি রাজ্য কমিটির সভাপতি বিপ্লব দেব৷ ছবি নিজস্ব৷

ভূমিকা থাকতে পারে৷ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপি প্রদেশ সভাপতি বিপ্লব দেব স্পষ্ট জানান, হিন্দুস্তানে হিন্দু আইন হবে, তাতে ক্ষতি কোথায়? সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্ণে বিপ্লববাবু মনে করেন, হিন্দু নাম থাকলেই তো সাম্প্রদায়িক হয়ে যায়৷ তাহলে দেশের নামটাই বদলে ফেলা হোক৷ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিজেপি প্রদেশ সভাপতির বক্তব্যে দেশের নামের সাথে ধর্মনিরপেক্ষতা আদৌ যুৎসই কিনা সেই প্রশ্ণ উঠেছে৷ মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে উপজাতি ভিত্তিক তিন আঞ্চলিক দলের ফোরাম গঠনে যে মূল ইস্যু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সে বিষয়ে বিজেপি প্রদেশ সভাপতি প্রত্যয়ের সাথে বলেন, বামেদের বিরুদ্ধে একটি মঞ্চ গঠন করার জন্য এই ইস্যু উপলক্ষ মাত্র৷
এদিন তিনি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে বলেন, আমাদের দেশে হিন্দুকে হিন্দু বলা যাবে না, মুসলিম কে মুসলিম কিংবা খ্রিস্টানকে খ্রিস্টান বলা যাবে না৷ সে মানসিকতার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে৷ কমিউনিস্টদের বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতার কারণেই মানুষের চিন্তাধারার উন্নয়ন হয়নি৷ কমিউনিস্টরা এখনো পুরনো যুগেই পড়ে রয়েছে৷ কিন্তু বিজেপি চাইছে নতুন কিছু করতে৷ তাঁর দাবি, উপজাতি ভিত্তিক তিন আঞ্চলিক দলের ফোরাম মূলত বামবিরোধী মঞ্চ শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে৷ বিজেপি রাজ্য প্রভারী সুনীল দেওধরের দাবি, ফোরাম যে বনধের ডাক দিয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এরাজ্যে কোন ইস্যুই নয়৷ তাঁরা মূলত, সিপিএমের বিরুদ্ধেই মঞ্চ গড়ে তুলতে এই বিলকে একটি উপলক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে৷
সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকও দাবি করেন, যে বিলের বিরোধিতা করে ফোরাম বনধ ডেকেছে তা মূলত তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপলক্ষ্যমাত্র৷ স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা যাচ্ছে, অন্তত এরাজ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে কারোর কোন মাথাব্যথা নেই৷
এদিকে, উপজাতিভিত্তিক তিন আঞ্চলিক দলগুলির জন্য বিজেপি দরজা খোলা রেখেছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় বনধের ডাক দিয়ে ফোরাম বিজেপির বিরুদ্ধেই সোচ্চার হয়েছে৷ এবিষয়ে বিজেপি রাজ্য প্রভারীর বক্তব্য, আইপিএফটি, আইএনপিটি এবং এনসিটির গঠিত ফোরাম শাসক দলের বিরুদ্ধে নাকি বিজেপির বিরুদ্ধে তা আগামীদিনে আলোচনা করে দেখতে হবে৷ কিন্তু আমরা চাইছি না বাম বিরোধী শক্তি কোন মতেই বিভক্ত হোক৷ সেই বিষয়ে নেডা ভাবছে৷ তাই আগামীদিনে ফোরামের নেতৃবৃন্দদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হবে৷ কারণ তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস বামেদের বিরুদ্ধেই মঞ্চ গড়ে তুলেছে ফোরাম৷ এরাজ্যের উপজাতি অংশের মানুষের প্রতি ক্রমাগত বঞ্চনাই এই ফোরাম গঠনের পেছনে অন্যতম মুখ্য কারণ৷ ফলে, তাদের সাথে আদৌ সমঝোতা হবে কিনা তা ভবিষ্যতে স্থির হবে বলে বিজেপি রাজ্য প্রভারী ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ এক্ষেত্রে পাহাড় নিয়ে বিজেপি নিশ্চিন্ত দাবি করলেও উপজাতি ভিত্তিক আঞ্চলিক দলগুলিকে কোন মতেই খাটো করে দেখছে না রাজ্য নেতৃত্বরা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *