BRAKING NEWS

‘ভারতমাতা কি জয়’ ‘বন্দেমাতরম’ নিষিদ্ধ স্লোগান নয়, রঙমহল বিতর্কে আরএসএস-এর প্রতিক্রিয়া

শিবসাগর (অসম), ২৯ ডিসেম্বর, (হি.স.) : ছয়শো বছরের আহোম রাজত্বের স্থাপত্য ‘কারেংঘর’ (রঙমহল)-এ ‘ভারতমাতা কি জয়’, ‘বন্দেমাতরম’ স্লোগানে আপত্তির কী? এই স্লোগানগুলি কি নিষিদ্ধ করা হষ়েছে নাকি? পালটা প্রশ্ন তুলেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। শিবসাগর জেলার শিমলিগুড়ি থানার গড়গাঁওয়ে অবস্থিত কারেংঘরে সংঘের স্বয়ংসেবকরা বন্দেমাতরম, ভারতমাতা কি জয় স্লোগান দিয়েছেন বলে গত তিনদিন ধরে রাজ্যের একাংশ মানুষ ও সংগঠন বেজায় শোরগোল তুলেছে। এ-ধরনের স্লোগানে সামাজিক সম্প্রীতির হানি ঘটানো হচ্ছে অভিযোগ তুলে শিমলিগুড়ি থানায় ১২০/২০১৬ নম্বরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১২০ (বি)/ ১৪৩/১৫৩/১৮৮ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি উজ্জ্বল দাস। তবে মামলার ধারা ও নম্বর জানালেও অভিযোগকারীদের নাম জানাতে অস্বীকার করেছেন ওসি।
সংঘের উত্তর অসম প্রান্ত প্রচারপ্রমুখ শংকর দাস এ-ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, ঘটনা ২৩ ডিসেম্বরের। গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংঘের এক প্রাথমিক প্রশিক্ষণ বর্গ হয়। বর্গে অংশগ্রহণকারী স্বয়ংসেবকরা ২৩ তারিখ ওই কারেংঘরে সাফাই অভিযান চালান। অভিযানের সময় এক সংয় তাঁরা ভারতমাতা কি জয়, বন্দেমাতরম ধবনি তুলে স্লোগান দেন। এতে আপত্তির কী? দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতমাতা কি জয় স্লোগান দেবে না তো কি বিদেশে, পাকিস্তানে গিয়ে দিতে হবে? তাঁর সাফ কথা, দেশ তো ‘ভারতমাতা কি জয়’, ‘বন্দেমাতরম’ শব্দগুচ্ছকে নিষিদ্ধ করেনি! তা হলে এতে দোষের কী আছে?
থানায় এফআইআর করা হয়েছে এবং এ-সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য জানতে চাইলে শংকর দাস বলেন, তাঁরা এর মোকাবিলা করবেন। তাঁরাও আইনের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তা করছেন। কেননা, ‘ভারতমাতা কি জয়’ বলার অপরাধে, কারেংঘর অশুদ্ধ হয়ে গেছে বলে অসার দাবি তুলে কতিপয় ব্যক্তি, সংগঠন আরএসএস সম্পর্কে অশালীন বক্তব্যও প্রকাশ করেছেন বা করছেন, যা সংঘ কখনও মেনে নেবে না। সংঘ-প্রচারক বলেন, কারেংঘরে ‘ভারতমাতা কি জয়’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে ২৩ তারিখ। এতদিন পর কেন এরা গেল গেল রব তুলছে? এর পেছনে অন্য রহস্য লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বলেন কেবলমাত্র সংঘের বদনাম করতেই এরা আদাজল খেয়ে ময়দান চষছে। এতে করে লাভ কিছুই হবে না। বরং তারাই সামাজিক বাতাবরণ উত্তপ্ত করার খেলায় মেতে উঠেছে যারা এ-ঘটনা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২৩ তারিখের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রদেশ কংগ্রেস, জাতীয়তাবাদী যুব-ছাত্র পরিষদ, নিখিল তাই আহোম ছাত্র সংস্থা, আটাসু প্রভৃতি কয়েকটি সংগঠন। বলা হচ্ছে, অসম সভ্যতার নিদর্শন ঐতিহাসিক সম্পদগুলিতে ধর্নীয় গোড়ামির দাগ লাগাতে উঠেপড়ে লেগেছে আরএসএস। ছষ়শো বছর রাজত্বকারী আহোম রাজা চাওলাং চ্যুকাফাদের নিজস্ব এক ধর্ম ছিল। দীর্ঘ রাজত্বকালে তাঁরা অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর নিজেদের ধর্ম চাপিয়ে দেননি। সকল ধর্মকে তাঁরা সমমর্যাদা দিয়েছেন। এবার আরএসএস উগ্র হিন্দুত্ববাদী স্লোগান দিয়ে ঐতিহাসিক আহোম স্থাপত্যে কালিমা লাগিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *