BRAKING NEWS

দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ পতঞ্জলি মেগা ফুড ও হার্বাল পার্ক-এর শিলান্যাস বাবা রামদেবের

গুয়াহাটি, ০৬ নভেম্বর, (হি.স.) : যাগযজ্ঞ ও বৈদিক বিধি মেনে অসমের শোণিতপুর জেলার বালিপাড়া এলাকার ঘোড়ামারিতে দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ পতঞ্জলি মেগা ফুড ও হার্বাল পার্ক প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন যোগগুরু বাবা রামদেব। আজ রবিবার সকাল দশটায় মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি, জলসেচমন্ত্রী রঞ্জিত দত্ত, অর্থ-শিক্ষা-স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, জলসম্পদমন্ত্রী কেশব মহন্ত, বনমন্ত্রী প্রমিলারানি ব্রহ্ম, পূর্ত-মৎস্যমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, বিদ্যুৎমন্ত্রী পল্লবলোচন দাস-সহ রাজ্যের প্রায় সব মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় তিন মন্ত্রী যথাক্রমে বাবুল সু্প্রিয়, রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর, রাজেন গোহাঁই, সাংসদ রামপ্রসাদ শর্মা, কামাখ্যাপ্রসাদ তাসা, বিধায়ক পদ্ম হাজরিকা, বৃন্দাবন গোস্বামী, বিটিসি-প্রধান হাগ্রামা মহিলারি-সহ প্রতিবেশী অরুণাচল প্রদেশের বেশ কয়েকজন বিধায়ক, আচার্য বালকৃষ্ণ মহারাজকে সঙ্গে নিয়ে হোম-যজ্ঞাদি করে করে ১৫০ একর জমিতে নির্মীয়মাণ এই উৎপাদন প্রকল্পের সূচনা করেছেন বাবা রামদেব। শিলান্যাস অনুষ্ঠানের আগে বালিপাড়ার এআইডিসি কমপ্লেক্সে এক যোগদীক্ষা কার্যক্রমে বিভিন্ন আসন-মুদ্রা-প্রাণায়াম কলা প্রদর্শন করেন বাবা রামদেব। প্রদর্শনের ফাঁকে ফাঁকে যোগাসন বা শরীরচর্চার পাশাপাশি সম্পূর্ণ দেশীয় ভেষজ উপাদানে তৈরি পতঞ্জলি-সামগ্রী ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা এবং উপকারিতার ওপর বক্তব্যও পেশ করেন বাবা রামদেব।
শিলান্যাস কার্যক্রমের পর রামদেব বলেন, অসম তথা উত্তরপূর্বাঞ্চলের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তেজপুরের বালিপাড়ায় আজ যে প্রকল্পের সূচনা তিনি করেছেন তাতে ১,২০০ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে প্রতি বছর ২০ হাজার কোটি টাকার দশ লক্ষ মেট্রিকটন সামগ্রী উৎপাদন করা হবে। জানান, গোটা দেশের মধ্যে পতঞ্জলির বৃহত্তম প্রকল্প ‘দ্য পতঞ্জলি হার্বাল অ্যান্ড মেগা ফুড পার্ক’ হবে তেজপুরের এই বালাপাড়ায়। এই প্রকল্পে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে আগামী মার্চের মধ্যে। তাছাড়া এই প্রকল্পে সরাসরি পাঁচ হাজার মানুষের পাশাপাশি এক লক্ষ লোকের পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে বলেও জানান তিনি।
রামদেব বলেন, অসমের এরি-মুগা সুতোয় এবং বাঁশবেত দিয়ে তৈরি পণ্যসামগ্রীর বিক্রি ও এগুলোর প্রচার করবেন তিনি এবং তাঁর পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থা। রামদেব জানান, আগামী বছরের মধ্যে গোটা দেশে ৩০ লক্ষ বিপণি স্থাপনের লক্ষ্য রয়েছে তাঁর। ২০১৭ সালের মধ্যে তাঁরা ই-কমার্সে প্রবেশ করবেন, মানে অনলাইনে পতঞ্জলি সামগ্রী বিক্রি করা হবে বলেও জানান তিনি। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তাঁর সংস্থার এক লক্ষ কোটি টাকার সামগ্রী উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। বর্তমানে গোটা দেশে পাঁচ হাজার খুচরো বিপণি-সহ দশ লক্ষ বিপণিতে পতঞ্জলি সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এই লক্ষ্যমাত্রা আগামী অর্থবর্ষে ৩০ লক্ষ রয়েছে তাঁর।
প্রসঙ্গত, গুয়াহাটির পার্শ্ববর্তী মির্জা অঞ্চলের সোনতলায় ইতিমধ্যে দ্বিতীয় যোগপীঠ স্থাপন হয়ে গেছে। তাছাড়া বিটিএডি অঞ্চলের চিরাং জেলার রৌমারি এলাকায় প্রায় ১,২০০ বিঘা জমিতে ‘পঞ্চগব্য রিসার্চ সেন্টার’ও গড়ে তুলেছে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ কোম্পানি। মির্জার যোগপীঠের মাধ্যমে উত্তরপূর্বাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক, শিক্ষা, আধ্যাত্মিক, বৌদ্ধিক, সাংস্কৃতিক, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেছে বাবা রামদেবের পতঞ্জলি। এই যোগপীঠে যোগ, প্রাণায়াম, আয়ুর্বেদ এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসার মাধ্যমে একসঙ্গে প্রায় ৩০০ রোগীর চিকিৎসা করা যাবে। তাছাড়া, বহির্বিভাগে চিকিৎসা হবে বিনামূল্যে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, অসমের বিভিন্ন জায়গায় এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি স্থায়ী যোগ শিবির এবং প্রায় ১২ হাজারের বেশি যোগ-শিক্ষক বিনামূল্যে পরিষেবা দিচ্ছেন। চিরাং জেলার রৌমারিতে ‘পঞ্চগব্য রিসার্চ সেন্টার’-এর মাধ্যমে স্থানীয় কম উৎপাদনক্ষম গরুর পাশাপাশি দেশীয় পদ্ধতিতে উন্নত প্রজাতির গরুর প্রজনন ঘটিয়ে স্থানীয় উন্নত প্রজাতির গরুর জন্ম দেওয়া হবে। ওই গরুগুলি থেকে বিশাল পরিমাণের দুধ উৎপাদনের পাশাপাশি তাদের গো-মূত্র সংগ্রহ করা হবে এবং এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে অসংখ্য স্থানীয় বেকারের কর্সংস্থানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থা। এই কেন্দ্রে জৈবিক কৃষি এবং জৈবিক কীটনাশক উদ্ভাবনের ওপরও গবেষণা হবে।
জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলের এই কেন্দ্রে সিবিএসসি পাঠ্যক্রমের একটি স্কুলও স্থাপন করা হয়েছে। এই স্কুলে ভারতীয় শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *