BRAKING NEWS

অফিসারদের পরিদর্শনই সার, লোয়ারপোয়া নিয়ে গডকড়ির হস্তক্ষেপ চাইলেন বাদল

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি/আগরতলা, ২৭ জুন৷৷ অসম-আগরতলা জাতীয় সড়ক মেরামতিতে অসম সরকারের চরম

সোমবার করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের অফিসাররা লোয়ারপোয়া এলাকা সফর করেছেন৷ ছবি নিজস্ব৷
সোমবার করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের অফিসাররা লোয়ারপোয়া এলাকা সফর করেছেন৷ ছবি নিজস্ব৷

গাফিলতি৷ ত্রিপুরা সরকার অসম ত্রিপুরার বিকল্প সড়ক মেরামতির পর টনক পড়ল অসম সরকারের ৷ অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের জরুরিকালীন তলবে অবশেষে ৮নং জাতীয় সড়ক পরিদর্শনে আসেন করিমগঞ্জ জেলার ডিসি মনোজ কুমার ডেকা৷ আজ দুপুর ২.৩০ মিনিটে ত্রিপুরা সরকারের মেরামতি করা বিকল্প জাতীয় সড়ক দিয়ে এসে অসমের লোহারপোয়া থেকে চুড়াইবাড়ি পর্যন্ত পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন৷ ডিসি মহোদয়ের সাথে আসেন এডিসি ধ্রুবজ্যোতি দেব, এসিসটেন্ট কমিশনার সুদীপ নাথ ও ডিসিপি রণবীর শর্মা উভয়েই করিমগঞ্জ থেকে ছুটে এসে জরাজীর্ণ ১০ কিলোমিটার পথ পরিদর্শন করেন৷ নির্মাণ সংস্থা এবিসিআইএর কাজে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ডিসি মনোজ ডেকা৷ ডিসি বলেন বৃষ্টিপাত না হলে অতি শীঘ্রই রাস্তাটি মেরামতি করে যান চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে৷ তবে ত্রিপুরা সরকার অসমের পথ মেরামতি করা নিয়ে কোন সরকারি খবর ডিসির কাছে নেই বলেও জানান ডেকা৷ প্রতিবেদকের প্রশ্ণে ডিসি বলেন, অসমের ১০ কিমি রাস্তার বেহাল অংশের কারণে ৭০০-৮০০ পণ্যবাহী গাড়ি আটকা পড়েছে৷ ডিসির এরকম কথা শুনে আটকে থাকা লরি চালকরা রণমূর্তির রূপ ধারণ করলেও পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়৷ চালকদের বক্তব্য অসমের বেহাল অংশের কারণে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে তিন হাজারের অধিক পণ্যবাহী লরি৷ চালকদের পানীয় সংকট ও খাদ্য সংকটের কথাও জানায় ডিসির কাছে৷ অপরদিকে ত্রিপুরার লাইফ লাইন দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ হয়ে পড়াতে রাজ্যে খাদ্য, জ্বালানি, জ্বালানি গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে৷ আজকের ডিসি সফরের পর নির্মাণ সংস্থা এবিসি আই এ কাজ করতে পারবে না বলেও বলেন ডেকা৷ এখন দেখার বিষয় কবে নাগাদ আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক ঠিক হয় এবং সঠিকভাবে যান চলাচল করতে পারে৷
এদিকে, লোয়ারপোয়ায় জাতীয় সড়কের সংস্কারের কাজ জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করার জন্য রাজ্যের পূর্ত মন্ত্রী বাদল চৌধুরী কেন্দ্রীয় ভূতল সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন৷ শ্রীগড়কড়িকে লেখা এক চিঠিতে পূর্তমন্ত্রী বাদল চৌধুরী বলেছেন, আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের লোয়ারপোয়া থেকে চুড়াইবাড়ি অংশে আট নং জাতীয় সড়কের অবস্থা রাজ্যে সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ৷ এবিষয়ে ইতিমধ্যে জাতীয় সড়ক সংস্কারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল৷ শ্রীগড়কড়িকে পূর্তমন্ত্রী বলেন, বর্ষা মরশুম শুরু হওয়াতে রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে চুড়াইবাড়ি থেকে আসামের দিকে জাতীয় সড়ক ধরে গাড়ি চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে রাস্তায় অসংখ্য গাড়ি আটকে পড়ে আছে৷ আসাম থেকে ত্রিপুরায় খুব সংখ্যায় গাড়ি প্রবেশ করছে এবং ত্রিপুরা থেকে আসামেও কোন গাড়ি যেতে পারছে না৷ চিঠিতে পূর্তমন্ত্রী আরো উল্লেখ করেছেন, যেহেতু আগরতলা থেকে গুয়াহাটির মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ নেই৷ ফলে, সমস্যা আরো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে৷ বিশেষ করে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, জ্বালানি তেল এবং এলপিজি সংকট মারাত্মকভাবে বেড়েছে৷ পূর্তমন্ত্রী গভীর চিন্তা ব্যক্ত করে বলেছেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যদি সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হয় পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে৷ চিঠিতে পূর্তমন্ত্রী বাদল চৌধুরী আট নং জাতীয় সড়কের উল্লেখিত অংশে মেরামতির কাজ তদারকি করার জন্য কেন্দ্রীয় ভূতল সড়ক মন্ত্রকের আধিকারিকদের নিয়ে একটি দল গঠনের জন্য শ্রী গড়কড়ির কাছে প্রস্তাব রেখেছেন৷ চিঠিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন যেহেতু এই অংশের মেরামতির দায়িত্ব আসাম সরকারের পূর্ত দপ্তরের হাতে রয়েছে তাই কেন্দ্রীয় ভূতল সড়ক মন্ত্রকের ঐ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আসামের পূর্ত দপ্তরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারেন৷
উল্লেখ্য, এর আগেও রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আসাম- আগরতলা জাতীয় সড়কের সংস্কারের জন্য হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ রাজ্যপাল তথাগত রায়ও আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের লোয়ারপোয়ার অংশের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় ভূতল সড়ক পরিবহনমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷ দীর্ঘ সময় এবং নানা ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টিতে আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়কের বেহাল দশার বিষয়টি আনা হলেও কোন কার্যকরী কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না৷ সম্প্রতি জরুরি ভিত্তিতে লোয়ারপোয়া অংশের মেরামতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ২৮ কোটি টাকা আসাম সরকারকে বরাদ্দ করেছে৷ কিন্তু এই অংশের মেরামতির ক্ষেত্রে কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না৷ স্বাভাবিকভাবেই ত্রিপুরার লাইফ লাইন স্তব্ধ হয়ে পড়ায় গভীর সংকটের মুখে রাজ্যবাসী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *