নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ মে৷৷ দল এখনই ছাড়ছেন কিনা সে প্রশ্ণে কংগ্রেসের বিদ্রোহী বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ স্পষ্টভাবে কিছু জানাননি৷ তবে, তাঁর উপর থেকে বরখাস্ত তুলে নেওয়া হলে দলেই থাকবেন কিনা এনিয়েও খুলাখুলিভাবে কোন মন্তব্য করেননি৷ তবে, দল তাঁর উপর থেকে বহিষ্কার প্রত্যাহার করবে সে বিষয়ে অনেকটাই সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছেন, আগামীদিনে সে বিষয়ে ভেবে দেখা হবে৷ তবে, পিসিসি সভাপতি বীরজিৎ সিনহা এবং পূর্বোত্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের নেতা নারায়ণস্বামী তাঁকে বহিষ্কারের পেছনে মূল কান্ডারি সে কথাও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম এবং কংগ্রেসের সমঝোতা নিয়ে রাজ্যের মানুষের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল তারই প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাঁকে বহিষ্কার হতে হয়েছে৷ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দলের সিদ্ধান্তে বিরোধ প্রদর্শন করায় তাকে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুদীপবাবু৷ সেক্ষেত্রে দল যদি তাঁর উপর থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয় তবে ধরে নেওয়া হবে দলীয় সিদ্ধান্তে বিরোধিতা করে তিনি কোন অন্যায় করেননি৷
তাতে, ধারণা করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ, কেরলা এবং আসামে দলের মারাত্মক বিপর্যয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ড এরাজ্যে বিদ্রোহের আগুন আর বাড়াতে চাইবেন না৷ সেক্ষেত্রে হাইকমান্ড সুদীপ বর্মণের উপর থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিলে তিনি কংগ্রেসেই থেকে যাবেন, এমনটা মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল৷
অবশ্য, বৃহস্পতিবার সুদীপবাবু জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর তৃণমূল নেত্রীকে তিনি ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ তৃণমূল নেত্রীও সুদীপবাবুদের আগামী ২৭ মে কলকাতায় তৃণমূল সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন৷ এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তাঁর সাথে অন্য বিদ্রোহী বিধায়করাও আমন্ত্রিত বলে সুদীপবাবু জানিয়েছেন৷ তাতে দলত্যাগের জল্পনাটি এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ তবে, ধারণা করা হচ্ছে, সুবিধা অনুযায়ী পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ নেবেন সুদীপবাবুরা৷ এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের চূড়ান্ত ভরাডুবির জন্য সেই রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বদের সুবিধাবাদী এবং অনৈতিক জোটকেই দায়ী করেছেন সুদীপ বর্মণ৷ তাঁর মতে, জনগণের নাম ভাঙ্গিয়ে মূলত পশ্চিমবঙ্গের সুবিধাবাদী কংগ্রেস নেতৃত্বরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে চাইছিলেন৷ জনগণ তা প্রত্যাখান করেছেন৷ জনগণের সাথে প্রতারণা করে ভোটে জেতা যায় না, পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতৃত্বদের কাছে তা আবারও প্রমাণিত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ ফলে, পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের ভিত্তিতে গোটা দেশে কংগ্রেস আবারও যেভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে তাতে আগামীদিনে এরাজ্যের রাজনীতির পটপরিবর্তনে দলের হাইকমান্ড বিদ্রোহী দমনে তৎপর হবেন, নাকি পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে আপাতত দল শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেবেন তা এখন দেখার বিষয়৷