নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ মে৷৷ ত্রিপুরার কংগ্রেসের রাজনীতির ইতিহাসে বিরল ঘটনা৷ দলের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পুলিশ
ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন বীরজিৎরা৷ কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিতে না পারায় রবিবার পশ্চিম থানায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহার নেতৃত্বে এক দল কর্মী সমর্থক৷ এদিন সকালে দলীয় কার্য্যালয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বদের সাথে বৈঠকে বসেন পিসিসি সভাপতি৷ সেখানে থানা ঘেরাও এবং বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়৷ এরপর পিসিসি সভাপতির নেতৃত্বে একটি মিছিল কংগ্রেস ভবন থেকে বেরিয়ে পশ্চিম থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে৷ কংগ্রেস ভবনে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার নিয়ে পুলিশের নীরব ভূমিকার সমালোচনা করে এদিন বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন৷ এরপর দশজনের এক প্রতিনিধি দল রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি উত্তম কুমার চৌধুরী এবং পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপার সপ্তর্ষির সাথে সাক্ষাৎ করে৷ পুলিশ আধিকারিকদের সাথে সাক্ষাতে মিলিত হয়ে প্রদেশ সভাপতির নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল কংগ্রেস ভবনে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তালবাহানার বিষয়টি তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ পাশাপাশি শনিবার কংগ্রেস ভবনে ভাঙচুরের ঘটনার জন্য পুলিশকেই দায়ী করেন৷
ত্রিপুরার ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম কংগ্রেস ভবনে দলের বিক্ষোভকারীদের হামলা ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশী নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷ ইতিপূর্বে কংগ্রেস ভবনে বিভিন্ন হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুধীর রঞ্জন মজুমদার যখন প্রদেশ সভাপতি ছিলেন তখনও তিনিও আক্রান্ত হয়েছিলেন দলীয় কর্মীদের দ্বারস্থই৷ বিগত দিনে বেশিরভাগ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিই পারতপক্ষে কংগ্রেস ভবনে পা রাখতেন না৷ তারা নিরাপদ আস্তানা হিসেবেই হামলা ইত্যাদির ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়নি৷ এই বারের পরিস্থিতি ভিন্নতর৷ বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসীরা সুদীপ বর্মণের ছত্রছায়ায় পালিত৷ তাঁরা প্রতিনিয়ত হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বিক্ষোভ জানাচ্ছে৷ বঙ্গে কংগ্রেস সিপিএমের সহেগ জোট করায় ত্রিপুরায় কংগ্রেস দলে যে শূন্যতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তাতে করে বিক্ষুব্ধরা একটি নিশ্চিত রাজনৈতিক আশ্রয় খঁুজে নিতে সচেষ্ট৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা তাঁর অনুগামীদের নিয়ে কংগ্রেস ভবনে হামলকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় যে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন এবং থানায় ধর্না দিয়েছেন তা রাজ্যের কংগ্রেসের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে রয়ে গেল৷
পিসিসি সভাপতি বলেন, কংগ্রেস ভবনের ঢিলছোঁড়া দূরত্বে রয়েছে পশ্চিম থানা৷ হামলাকারীরা যখন ভবনে প্রবেশ করছিলেন তখনই তাতে পুলিশের হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল৷ কিন্তু পুলিশ তা না করে নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল৷ এর কারণেই গতকাল কংগ্রেস ভবনে হামলা, ভাঙচুর ইত্যাদি সংগঠিত করেছে হামলাকারীরা৷ সুনির্দিষ্টভাবে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে কেন গ্রেপ্তার করা হল না পদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্ণ ছুড়ে দেন তিনি৷ পাশাপাশি শীঘ্রই কংগ্রেস ভবনে হামলকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করা হবে বলেও হঁুশিয়ারি দেওয়া হয়৷ পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা পিসিসি সভাপতি সহ প্রতিনিধি দলকে কংগ্রেস ভবনে হামলকারীদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷