দুই রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী মোদি ও হাসিনাকে দিয়ে উদ্বোধনই সার, ভেল্কি দেখাচ্ছে বিএসএনএল, ক্ষুব্ধ মুখ্যসচিব

BSNLনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ এপ্রিল৷৷ ভেল্কি দেখাচ্ছে বিএসএনএল৷ দুই রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে হাইস্পিড ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ গেটওয়ের উদ্বোধনই সার৷ আদতে সব কিছুই ফাঁপা৷ রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ে বিএসএনএলের সাথে বৈঠকের নির্যাস তুলে ধরে শুক্রবার মহাকরণে মুখ্যসচিব যশপাল সিং ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ে চরম অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন৷ তিনি জানান, বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে ১০জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ বিএসএনএল আমদানি করলেও পরিষেবা ঠিক মত দিতে পারছে না৷ ফলে, তাদেরকে পরিষেবা মানোন্নয়নে কড়া দাওয়াই দেওয়া হয়েছে৷ মুখ্যসচিবের দাবড়ানিতে বিএসএনএল আধিকারিকরা খুব শীঘ্রই পরিষেবা উন্নত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন৷ মোবাইল পরিষেবাও আগামী মাস তিনেকের মধ্যে স্বাভাবিক করা হবে বলে মুখ্যসচিবকে আশ্বস্ত করেছেন বিএসএনএল আধিকারিকরা৷
গত ২৩ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন ইন্টারনেট গেটওয়ের৷ বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে ১০ জিবিপিএস হাইস্পিড ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ আমদানি করে বিএসএনএল৷ ত্রিপুরা হয় এর গেটওয়ে৷ ভারতবর্ষে মুম্বাই এবং চেন্নাইয়ের পর তৃতীয় গেটওয়ের হয় আগরতলা৷ কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন এই ইন্টারনেট গেটওয়ের৷ বহু আশা আকাঙ্খার বাস্তবায়ন ২৩ মার্চ দুই রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে সূচনা হলেও আদতে সেই আশার গুড়ে বালি৷ পরিচালনগত ত্রুটির কারণেই যে হাইস্পিড ব্যান্ডউইথের সুফল মিলছে না তা অনেকটাই স্পষ্ট৷ মুখ্যসচিব এদিন বিএসএনএল নিয়ে যে অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন তাতে অনেকটাই স্পষ্ট তড়িঘড়ি উদ্বোধন করতে গিয়ে বহু সমস্যা রেখেই ইন্টারনেট গেটওয়ে চালু করে দিয়েছে বিএসএনএল৷ সংস্থার আধিকারিকরা মুখ্যসচিবকে জানিয়েছেন, ইন্টারনেট গেটওয়ের প্রযুক্তিগত সমন্বয় সাধন করা হচ্ছে৷ মোদ্দা কথা, উদ্বোধনের আগেই নানা ত্রুটি ছিল বিএসএনএলের কাজকর্মে৷ ফলে, সঠিক ভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হওয়াতেই কক্সবাজার থেকে ১০ জিবিপিএস ইন্টারনেট আমদানি করা সম্ভব হয়ে উঠছে না৷
এদিকে, মোবাইল পরিষেবা নিয়েও বিএসএনএল আধিকারিকরা গা ঝাঁড়া দিতে চেয়েছেন৷ পিজিসিএলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বিএসএনএল দায় মুক্ত হওয়ার কৌশল নিয়েছে৷ সংস্থার আধিকারিকরা মুখ্যসচিবকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় ফাইবার অপটিক তার কাটা পড়েছে৷ ফলে, সেগুলি সারাই করতে আরো তিন মাস সময় লাগবে৷ বিএসএনএলের বক্তব্য, পিজিসিএল এই সমস্ত সারাইয়ের কাজ করে থাকে৷ মুখ্যসচিব বিএসএনএলের এই বক্তব্য শুনে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷ শুক্রবার তিনি জানিয়েছেন, বিএসএনএলকে শীঘ্রই সমস্ত ত্রুটি সারাই করার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের বিএসএনএলের আধিকারিকরা সময়মতো ত্রুটি সারাই করতে ব্যর্থ হলে বিষয়টি দিল্লির নজরেও নিয়ে যাওয়া হবে বলে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন৷
সবমিলিয়ে বিএসএনএল পরিষেবা নিয়ে রাজ্য সরকার চরম অসন্তোষ প্রকাশ করে তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করলেও আদৌ এই সংস্থা কতটা পরিষেবা প্রদানে সফল হবে তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ণ দেখা দিয়েছে৷ খোদ বিএসএনএলের অধঃস্তন কর্মীদের মধ্যে উপর মহলের আধিকারিকদের চরম গাফিলতির কারণেই রাজ্যে এই সংস্থার পরিষেবার দৈনাদশা৷