গুয়াহাটি, ২০ ফেব্রুয়ারি, (হি.স.) : রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই সরকারি আমলারা বেপরোয়া হয়ে উঠছেন বলে অভিযোগ উঠেছে| অভিযোগ, এতে করে তাঁরা আদালতের নির্দেশের পাশাপাশি রাজ্য মন্ত্রিসভার কোনও সিদ্ধান্তও আজকাল কার্যকরি করছেন না| বিষয়টি দেখা গেছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগে ঠিকাদারদের বিল থেকে আরম্ভ করে নিয়োগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে| এর সর্বশেষ উদাহরণ শিক্ষা বিভাগ| গত ২০০৩ সালে গুয়াহাটি উচ্চ আদালতের এক রায়ের ভিত্তিতে রাজ্যের প্রাদেশিকৃত কলেজগুলিতে সে-সময় নিয়োজিত প্রায় চারশো অমঞ্জুরিকৃত শিক্ষক পদগুলি মঞ্জুর করতে রাজ্যের মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল| ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্তের সমান্তরালভাবে অন্য আর-এক মামলার রায়ের ভিত্তিতে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা অধিকর্তা ২০১০ সালের ২২ এপ্রিল ৩৫৪ জন অমঞ্জুরিকৃত কলেজ শিক্ষকের পদে কর্মরত শিক্ষকদের একটি তালিকা তৈরি করে| সেই তালিকা থেকে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে দফায় দফায় নিযুক্তি দেওয়াও হচ্ছিল| এমন-কি তখন ২৭২ জন কলেজ শিক্ষকের পদ মঞ্জুর করা হয়েছে বলে উচ্চ শিক্ষা অধিকর্তা রাজ্যের শিক্ষা বিভাগকে জানিয়েওছিল| এদিকে এই তালিকা থেকে বাদ পড়া ৭৯ জন অমঞ্জুরিকৃত এবং বিভিন্ন কারণে বাকি ৩৬ জনকে নিয়ে মোট ১১৫ জন শিক্ষকের শেষ এবং চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে পদ মঞ্জুর করে সেগুলিতে অনুমোদন জানাতে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছিল| সে-অনুযায়ী অমঞ্জুরিকৃত কলেজ শিক্ষকের ১১৫টি পদের পাশাপাশি বিভিন্ন কলেজে ২৫১টি নতুন শিক্ষকের পদ পূরণ করতে উচ্চ শিক্ষা অধিকর্তাকে অনুমতি দেয় শিক্ষা বিভাগ| কিন্তু এই অনুমতি দেওষ়ার পর বিভাগের প্রধানসচিব পবনকুমার বরঠাকুর অমঞ্জুরিকৃত কলেজ শিক্ষকদের মঞ্জুর করার পরিবর্তে বিষষয়টির স্থায়ী নিষ্পত্তি করতে উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কমিশনার-সচিব, যুগ্মসচিব এবং অধিকর্তাকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেন| এই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাঁদের পদ নিষ়মিত করতে নেট, শ্লেট, পিএইচ.ডি যোগ্যতাসম্পন্ন ৩৯ জন, এমফিল যোগ্যতাসম্পন্ন ২৭ জনের পদ মঞ্জুর করা হয়| এদিকে এইসব যোগ্যতা নেই এমন ৪৯ জনের পক্ষে বিভিন্ন সময় আদালত রায় দিলেও দু-বছরের মধ্যে ওই যোগ্যতা আহরণ করতে বলা হয়েছে| এক্ষেত্রে রাজ্য ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত এবং উচ্চ আদালতের রায়কে সরাসরি নাকচ করে দিয়ে শিক্ষা বিভাগের প্রধানসচিব পবন বরঠাকুর নানা অজুহাত তোলে ধরছেন বলে অভিযোগ উঠেছে|