BRAKING NEWS

উপনির্বাচন ঃ কংগ্রেস ধরাশায়ী, উত্থান বিজেপির, অমরপুর জয় করেও সিপিএমে শিরপীড়া

Amarput Electionনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ ফেব্রুয়ারী৷৷ প্রত্যাশিত ছিল৷ তবে, অমরপুরে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে রীতিমতো সাইন বোর্ড সর্বস্ব করে দিয়েও বিজেপি’র উত্থানে চিন্তিত শাসক দল সিপিএম৷ ১০ হাজারেরও বেশী ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন সিপিএম প্রার্থী৷ কিন্তু,  কংগ্রেসকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় স্থান দখল করে নেয়৷ অমরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী পরিমল দেবনাথ পেয়েছেন ২০ হাজার ৩৫৫টি ভোট৷ বিজেপি প্রার্থী রঞ্জিত দাসের দখলে যায় ৯ হাজার ৭৫৮টি ভোট৷ কিন্তু, রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের জামানত জব্দ হয়ে গিয়েছে৷ কংগ্রেস প্রার্থী চঞ্চল দে’র ঝুলিতে যায় মাত্র ১ হাজার ২৩১টি ভোট৷ এছাড়া রাজ্য ভাগের প্রবল দাবিদারদেরও অমরপুর উপনির্বাচনে জামানত জব্দ হয়েছে৷ এই দলের প্রার্থী পবিত্র মোহন জমাতিয়া পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৬২৩টি ভোট৷ আমরা বাঙালীর প্রার্থী বিজয় দাস পেয়েছেন ১৪৯টি ভোট, আইএনপিটির প্রার্থী   নক্ষত্র জমাতিয়া ১৪৬টি ভোট এবং নির্দল প্রার্থী রণজয় জমাতিয়া পেয়েছেন ২১৬টি ভোট৷ আশ্চর্য্যের বিষয় আইএনপিটি, আমরা বাঙালী ও নির্দল প্রার্থীর তুলনায় ‘না’ তথা নোটা ভোট বেশী৷ ২৬২টি ভোট পড়েছে নোটাতে৷

১৩ ফেব্রুয়ারী অমরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ৮৮ শতাংশ ভোট পড়েছিল৷ তাতে সিপিএম পেয়েছে ৬০৩৩ শতাংশ এবং বিজেপি পেয়েছে ২৮৯২ শতাংশ ভোট৷ আইপিএফটি পেয়েছে ৪৮১ শতাংশ ভোট এবং কংগ্রেস পেয়েছে ৩৬৫ শতাংশ ভোট৷ ভোটের ফলাফলে দেখা গিয়েছে একদিকে যেমন শাসক দল সিপিএম-কে টেক্কা দিতে উঠে এসেছে বিজেপি, তেমনি অন্যদিকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে পিছনের সারিতে ফেলে দিয়েছে আইপিএফটি৷

এই জয় নিশ্চিতভাবে শাসক দল সিপিএমের মনোবল বাড়িয়েছে৷ পাশাপাশি মেলারমাঠের কপালে বিজেপি-কে নিয়ে চিন্তার ভাঁজও পড়েছে৷ এক প্রেস বিবৃতিতে কংগ্রেসের সমালোচনা করতে গিয়ে সিপিএম জানিয়েছে, উপ নির্বাচনে কংগ্রেস, আই পি এফ টি, আই এন পি টি, আমরা বাঙালী ইত্যাদি দলের প্রার্থীদের জামানত জব্দ হয়েছে৷ ফলাফলে ম্পষ্ট অনুমান করা যায় কংগ্রেস দলের বেশীরভাগ ভোট উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি’র দিকে গেছে৷ রাজ্যের কংগ্রেস দলে নেতৃত্বের আদর্শগত লড়াইয়ে চরম দেউলিয়াপনা নগ্ণভাবে উদ্ঘাটিত হয়েছে বলে সিপিএম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ তাতে স্পষ্ট বিজেপির উত্থানে এডিসি ও পুর নির্বাচনের পর এই উপ নির্বাচনের ফলাফলেও মেলারমাঠ যথেষ্ট চিন্তিত৷

এদিকে, গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় এবারের উপনির্বাচনে অমরপুর কেন্দ্রে সিপিএমের ভোটের হার বেড়েছে৷ ২০১৩ সালে এই কেন্দ্রে জয়ের ব্যবধান ছিল ৪ হাজার ২২টি ভোট৷ প্রতিপক্ষ ছিল কংগ্রেস৷ এই উপ নির্বাচনে জয়ের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৯৭টি ভোট৷ কিন্তু, এবার প্রতিপক্ষ বিজেপি৷ সিপিএমের দাবি উপ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ২০১৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় আরও সাড়ে ছয় হাজার ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন৷

ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর এক প্রেস বিবৃতিতে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর দাবি রাজ্য বামফ্রন্ট সরকারের নিরলস বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়নে পার্টি ও বামফ্রন্টের প্রতি জনগণের ক্রমবর্দ্ধমান সমর্থন এই ফলাফলে প্রতিফলিত হয়েছে৷ এদিকে, বিজেপি রাজ্য কমিটির দাবি অমরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন দিয়েই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের তকমা অর্জনের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে দল৷ তবে, ফলাফল নিয়ে কংগ্রেস কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি৷

সদ্য অনুষ্ঠিত অমরপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট মনোনীত সি পি আই (এম) প্রার্থী পরিমল দেবনাথকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার জন্য নির্বাচকমন্ডলীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ তিনি বলেন, বিগত বিধানসভা নির্বাচনের চাইতেও এই নির্বাচনে আরও বড় ব্যবধানে বামফ্রন্ট প্রার্থীকে জয়ী করার মধ্য দিয়ে নির্বাচকমন্ডলীর বৃহত্তম অংশ বামফ্রন্ট সরকারের প্রতি তাঁদের আস্থা ও বিশ্বাস পুনরায় বর্ধিত কলেবরে ব্যক্ত করেছেন৷ এটা বামফ্রন্ট সরকারের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে নিঃসন্দেহে সাহায্য করবে এবং সাথে সাথে দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রতিপালন সম্পর্কে আরও সচেতন করবে৷

মুখ্যমন্ত্রী বামফ্রন্টের নেতা ও কর্মী যাঁরা এই নির্বাচনী সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা প্রতিপালন করেছেন তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি এই নির্বাচনের সমগ্র প্রক্রিয়া সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের জন্য নির্বাচন দফতরের অফিসার কর্মী এবং পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসার ও কর্মীদের ও ধন্যবাদ জানান৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *