কোঝিকোড়, ৭ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): ভারতের বেশিরভাগ মানুষই যথেষ্ট সহিষ্ণু| একে অপরের প্রতি বিশ্বস্তও| এমনই মনে করেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন| তঁার মতে, ভারত অসহিষ্ণু দেশ নয়| শনিবার কোঝিকোড়ে কেরালা লিটারেচার ফেস্টিভ্যালে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তসলিমা বলেছেন, `এ দেশের বেশিরভাগ মানুষই যথেষ্ট সহিষ্ণু| একে অপরের প্রতি বিশ্বস্তও|’ ভারতের বিচারব্যবস্থা অসহিষ্ণুতাকে সমর্থন করে না বলেও মন্তব্য করেন বিতর্কিত এই লেখিকা| তিনি বলেন, কেন ধর্মনিরপেক্ষ লোকজন এই প্রশ্ন তুলছেন, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই তাঁর কাছে| তাঁর মতে ধর্মনিরপেক্ষতার ভাঁওতা দিয়ে কোনও গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না|
অসহিষ্ণুতা নিয়ে বিতর্ক তোলা মানুষদের প্রতি তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, মুসলিম ধর্মগোঁড়াদের নিয়ে কেউ কিছু বলছে না কেন? কেরালার সাহিত্য উত্সবে অসহিষ্ণুতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তসলিমা জানান, ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ মানুষরা শুধু হিন্দু গোঁড়ামি নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন| মুসলিম ধর্মগোঁড়াদের বাদ হচ্ছে কেন? ভারতের সাধারণ মানুষ তো অন্য ধর্মের ব্যপারে যথেষ্ট সহিষ্ণু| হ্যাঁ, কিছু ধর্মীয় অসহিষ্ণু মানুষও ভারতে আছেন| কিন্তু ভারতের সংবিধান তো ধর্মীয় অসহিষ্ণুতাকে কোনও স্থান দেয় না| তসলিমার মতে, সংঘাতটা ধর্মনিরপেক্ষতা ও গোঁড়ামির মধ্যে, প্রকৃত চিন্তার স্বাধীনতা ও প্রাচীনপন্থীদের মধ্যে| তাই সমস্ত রকম ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধেই প্রশ্ন তোলা উচিত| মহিলাদের স্বাধীনতার ব্যপারেও একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন তসলিমা| তঁার কথায়, সমস্ত ধর্মেই মহিলাদের অধিকার নানা ভাবে খর্ব করা হয়| আর সেই সব মহিলা বিরোধী নিয়ম তৈরি করেছে ধর্মগোঁড়ারা| রাষ্ট্র পরিচালনার সমস্ত ক্ষেত্র থেকেই তাই ধর্মকে বাদ দেওয়া উচিত| যদি আইন সভার সঙ্গে ধর্ম জড়িয়ে পরে, তাহলে হিন্দু বা মুসলিম, সমস্ত ধর্মের সাধারণ মানুষের উপরই শোষণ বাড়বে|