BRAKING NEWS

সিপিএমের সঙ্গে জোটে গেলে ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলে মুছে যাবে কংগ্রেস

Congress CPIM৷৷ দেবাশীষ ঠাকুর৷৷
অমরপুরের অকাল ভোট এবং এডিসির ভিলেজ কমিটির নির্বাচন ত্রিপুরার রাজনীতিতে নানা দিক দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ৷ এই নির্বাচন এমন এক পরিস্থিতিতে হতে যাচ্ছে যখন কংগ্রেস-সিপিএম নির্বাচনী জোটের সম্ভাবনা নিয়ে জোর তৎপরতা চলছে৷ পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির হাওয়া ত্রিপুরাতেও আন্দোলিত হয়৷ সেই সুবাদে, বঙ্গের রাজনীতির ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া এরাজ্যের রাজনীতিতেও যে প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই৷ বঙ্গের অধিকাংশ নেতাই সিপিএমের সঙ্গে জোটে যেতে রাজী৷ দীপা দাশমুন্সি ও মানস ভঁুইয়া বামেদের সঙ্গে জোটের বিরোধী৷ তবে, হাইকমান্ড যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাকে নতমস্তকে মেনে নেবেন৷ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘অত্যাচারে’ তারা অতীষ্ঠ৷ মুক্তির জন্য তাঁরা ‘মহাশত্রুর’ সঙ্গে ঘর করতেও রাজী৷ কিন্তু কংগ্রেস হাইকমান্ড ত্রিপুরা ও কেরলের পরিস্থিতি মাথায় রেখে চলার বিষয়টিকে এই মুহূর্তে অনেক বেশী গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক৷ একথা ঠিক, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় কংগ্রেস-সিপিএমের সঙ্গে জোটে গেলেও সুবিধাজনক ফলাফল হবে এমন নিশ্চয়তা নেই৷ বরং কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকদের ভোট বিজেপি বা অন্য দলে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে৷ এই অবস্থায় কংগ্রেস হাইকমান্ড ‘জাতও গেল পেটও ভরল না’ এমন অবস্থায় যেতে চাইবেন বলে মনে হয় না৷ তবে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে হয়তো সাম্প্রদায়িক বিরোধী ধর্ম নিরপেক্ষ শক্তির জোট করে সিপিএমকে সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেসের জোটের ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকতে পারে৷
সিপিএম-কংগ্রেস একে অপরের বন্ধু এই অভিযোগ যে সত্যি বিরোধীরা, বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস সাধারণ মানুষকে বুঝাতে চেষ্টা করবে৷ কেন্দ্রে কংগ্রেস যতদিন ক্ষমতায় ছিল ততদিন সিপিএম পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় মনের সুখে রাজত্ব করেছে৷ কারণ, পিভি নরসীমা রাও’র আমল থেকে মনমোহন সিং পর্যন্ত সিপিএমের সমর্থনের উপর সরকারের বাঁচা মরা নির্ভর করেছে৷ ফলে, ত্রিপুরায় ১৯৯৩ সালে কংগ্রেস যুব সমিতি জোট সরকারের পরিণতি কি হয়েছিল তা তো সকলের জানা৷ রাষ্ট্রপতির শাসন জারী করে কেন্দ্রের সরকার সিপিএম দলকে ক্ষমতায় আসতে সুযোগ করে দিয়েছিল৷ কারণ কেন্দ্রের ক্ষমতায় টিকে থাকতে গেলে সিপিএম দলের সমর্থন নরসীমার চাই৷ নরসীমার পর সোনিয়া অন্তরের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তখতে বসেননি৷ সেই চেয়ার বসানো হয় গান্ধী পরিবারের অতি বিশ্বস্ত ড মনমোহন সিংকে৷ তখনও কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার টিকে থাকে সিপিএমের সমর্থনে৷ পরবর্তী সময়ে, আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তির বিরোধীতা করে ইউপিএ সরকারের উপর থেকে যদি সিপিএম সমর্থন তুলে না নিত তাহলে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম হটানো সম্ভব হত কিনা সন্দেহ থেকেই যায়৷
এআইসিসির সহ সভাপতি রাহুল গান্ধী নাকি স্বীকার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা ভুল হয়েছিল৷ কিন্তু এবার সোনিয়া কি সিপিএমের সঙ্গে জোট করে আরেকটা ভুল করবেন? এই প্রশ্ণ আজ উঠে এসেছে৷ কথায় আছে রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই৷ তবু, কংগ্রেসের কট্টর বিরোধীতা করে যে সিপিএম দলের উত্থান সেই দলের সঙ্গে গলাগলি করা তো বেঁচে বর্তে যাওয়ার হিসেবে ভুল, দুই দলই ডুববে স্বখাত সলিলে৷ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস আরো বেশি শক্তি সংহত করার সুযোগ পাবে৷ ত্রিপুরায় জোর পাবে বিজেপি৷ কংগ্রেস হাইকমান্ড সব দিক বিবেচনা না করে ঝোঁকের মাথায় এত বড় সিদ্ধান্ত নেবেন মনে হয় না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *