বিজেপি-র ভোটে থাবা বসাতে অগপ-র দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক কং-এর, অসন্তোষ আঞ্চলিক দলের অন্দরে

congressগুয়াহাটি ১৬ জানুয়ারি, (হি.স.) : আসন্ন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে অসম গণ পরিষদকে দিয়ে বিজেপি-র ভোট ব্যাংকে থাবা বসাতে ব্লুপ্রিন্ট রচনা করেছে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস| বিগত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যে বিজেপি-র ভিত শক্ত হচ্ছে অনুমান করে কী করে তাদের রোধ করে চতুর্থবারের জন্য ক্ষমতাসীন হওয়া যায় সে পরিকল্পনায় অসম গণ পরিষদ (অগপ)-এর সঙ্গে সমঝোতার জন্য প্রদেশ কংগ্রেস কোমর কষে ময়দানে নেমেছে| এই লক্ষ্যে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর প্রেস উপদেষ্টা ভরত নরহ এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্তের সঙ্গে অসম বিধানসভা সচিবালয়ে অগপ-র দুই শীর্ষ নেতার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে| এদিকে বৈঠক শেষ করে বাইরে এসে এই বৈঠক নিতান্তই ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছেন অগপ-র শীর্ষ দুই নেতা দলের সাধারণ সম্পাদক দুর্গাদাস বোড়ো এবং উত্তর অভয়াপুরির বিধায়ক ভুপেন রায়| তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভুপেন-দুর্গাদাসের সঙ্গে এই বৈঠককে ব্যক্তিগত বলে উড়িয়ে দিলেও তা যে নিছক নির্বাচনকেন্দ্রীক ছিল তাতে কোনওসন্দেহ নেই| কারণ বিজেপি-র ভোট বিভাজন ঘটাতে অগপ-র সঙ্গে যাতে রাজ্যের আঞ্চলিক এই দলের সঙ্গে গেরুয়া দলের কোনওভাবেই যাতে আঁতাত না-হয় তার জন্য যে-কোনওমূল্যে তা রুখতে চাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ| তাঁর অঙ্ক, বিজেপি-র বিরুদ্ধে অগপ-র প্রার্থী থাকলে এক্ষেত্রে লাভবান হবে কংগ্রেস| মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, তাঁর দলের সঙ্গে আঞ্চলিক দল যদি গাঁটছড়া বাঁধে তা-হলে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনওভাবেই যাবেন না অগপ-র ভোটাররা| কারণ অগপ-র ভোটাররা কংগ্রেসের সর্বকালের বিরোধী তা তিনি ভালোই জানেন| তাই অগপ-র সঙ্গে জোট না-করে প্রতিটি আসনে যদি তাঁদের প্রার্থী দাঁড় করানো যায়, তা-হলে প্রকারান্তরে লাভ হবেন তাঁরা| এই সমীকরণের দ্বারা বিজেপি-র সাম্প্রদায়িকতাবাদের বিরুদ্ধে রাজ্যে এআইইউডিএফ, অগপ, বামপন্থী, সমাজবাদী পার্টি, বিপিএফ, এনসিপি ইত্যাদি দলের সঙ্গে মহা-সমঝোতার কথা বললেও এইসব দলকে একটি আসনও ছাড়তে চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী বা প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব| এক্ষেত্রে অনেকেই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর এই দুর্বোধ্য মহ-সমঝোতা সংজ্ঞার পেছনে যে আসলে বিজেপি-র ভোট ব্যাংককে তছনছ করার ছক কষা হচ্ছে তা স্পষ্ট| এদিকে, কংগ্রেসের পাতা ফাঁদে অগপ-র একাংশ নেতার জড়িয়ে পড়াকে কেন্দ্র করে দলের (অগপ) অন্দরের জ্বলছে তোষের আগুন| দলের তৃণমূল থেকে বিভিন্ন স্তরে দেখা দিয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ, সৃষ্টি হয়েছে হতাশা|