নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ জানুয়ারী৷৷ মনারচক থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সম্ভবত বাংলাদেশকেই দেওয়া হবে৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে বিদ্যুৎমন্ত্রীর বক্তব্যে এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে৷ বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ বিক্রয় নিয়ে মূল্য নির্দ্ধারণে বৈঠকে গিয়েছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী মানিক দে সহ উচ্চ পদস্থ আধিকারীকরা৷ ঐ বৈঠকে বাংলাদেশকে ৫৫০টাকা ইউনিট দরে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ বৈঠক শেষে রবিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকারে মিলিত হয়ে রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রীর সাথে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে শ্রী দে জানিয়েছেন৷ ঐ আলোচনায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আরও বিদ্যুৎ নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন৷ বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে৷ সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ত্রিপুরা থেকে আরও বিদ্যুৎ দেওয়া যায় কিনা তা ভেবে দেখার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মানিক দে’কে অনুরোধ করেছেন৷ পাশাপাশি রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় গড়ে উঠা মনারচক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়েও খোঁজ খবর নিয়েছেন৷ অবশ্য বিদ্যুৎমন্ত্রী বাংলাদেশকে আরও বিদ্যুৎ দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছেন৷
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রী দে স্পষ্ট জানিয়েছেন, মনারচক থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যে দরে নেপকো রাজ্য সরকারের কাছে বিক্রি করতে চাইছে তাতে রাজ্যের সায় নেই৷ কারণ, মনারচকের বিদ্যুতের মূল্য অনেক বেশী বলে বিদ্যুৎমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন৷ তিনি এও স্পষ্ট করেছেন, বিদ্যুতের মোট বিক্রয় মূল্য না কমালে মনারচক থেকে বিদ্যুৎ নিতে আগ্রহী নয় রাজ্য সরকার৷ কারণ অধিক মূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় করে লোকসানের ভার বহন করা নিগমের পক্ষে সম্ভব নয়৷ তবে, নেপকো মনারচক থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যে মূল্যে বিক্রি করতে চাইছে তাতে বাংলাদেশে সরকার রাজি হবে বলে বিদ্যুৎমন্ত্রী জানিয়েছেন৷ তাতে অনেকটাই স্পষ্ট আগামীদিনে হয়তো বা মনারচক থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশেই বিক্রি করা হবে৷
এদিন, বিদ্যুৎমন্ত্রী জানিয়েছেন, ত্রিপুরার শেয়ার থেকেই বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে৷ ফলে পালাটানায় বিপত্তি দেখা দিলেও বাংলাদেশকে চাহিদা অনুযায়ী ১০০ মেগাওয়াট দিতেই হবে৷ তাতে প্রশ্ণ দেখা দিয়েছে রাজ্যকে অন্ধকারে রেখেই কি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ যাবে৷ কারণ, আজ বিধানসভায় প্রশ্ণোত্তর পর্বে বিদ্যুৎমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, ওএনজিসি চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না৷ শর্ত মোতাবেক যে পরিমান গ্যাস উত্তোলন করার কথা ছিল ওএনজিসির সেদিক দিয়ে প্রতিনিয়ত মুখ থুবড়ে পড়ছে ঐ সংস্থাটি৷ বিদ্যুৎমন্ত্রীর এই বক্তব্যে আগামীদিনে পালাটানার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে৷ তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে, হয়তো বা বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গিয়ে রাজ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা পুনরায় বেড়ে যেতে পারে৷
2016-01-12