নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ মে৷৷ দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শান্তিরবাজার মহকুমার উত্তর তাকমা পঞ্চায়েতের কড়ইচন্দ্র পাড়ায় পানীয় জলের দাবিতে পথ অবরোধ করলো এলাকাবাসী৷ শান্তির বাজার মহকুমার অন্তর্গত উত্তর তাকমা পঞ্চায়েতের অধীনে কড়ইচন্দ্র পাড়ার লোকজনেরা দীর্ঘ দিন যাবৎ পানীয় জলের সমস্যায় ভূগছেন৷ দীর্ঘ অনাবৃষ্টির ফলে এলাকার পানীয় জলের উৎস গুলি শুকিয়ে গেছে৷ জলকষ্ট চরম আকার ধারণ করেছে৷ অবশেষে বাধ্য হয়ে পানীয় জলের দাবিতে হাতে কলস নিয়ে এলাকার রাস্তা অবরোধ করেন গ্রামের মহিলারা৷
পাম্প অপারেটারের নিকট জল না আসার কারন জানতে চাইলে পাম্প অপারেটর এলাকাবাসীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ৷ এলাকাবাসী জানান, তারা পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছেন না৷ অপরিশোধিত জল পান করে জলবাহিত নানা রোগে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন৷জলের মধ্যে অসখ্য আয়রন রয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন৷ এলাকাবাসীর অভিযোগ ,ভোটের সময় এলাকার বিধায়ক প্রমোদ রিয়াং প্রতিনিয়ত ভোটের জন্য এলাকাবাসীর নিকট ছুটে যেতেন৷ অথচ বর্তমানে এলাকাবাসীর অসুবিধার কথা জানতে পেরেও বিধায়ক একটি বারের জন্যও এলাকায় আসছেন না৷অবশেষে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙ্গার পর সোমবার সকালবেলা এলাকায় পথ অবরোধে বসে গ্রামের মহিলারা৷ এখন দেখার বিষয় এলাকাবাসীদের বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে দপ্তর কি পদক্ষেপ গ্রহন করে৷ পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা না হলে তারা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন৷
কাঠফাটারোদে তৃষ্ণা মেটানোর জল পাচ্ছেন না ধর্মনগরের পূর্ব রাধাপুর এলাকার বাসিন্দারা৷ বাধ্য হয়ে পানীয় জলের দাবিতে প্রতিবাদে সামিল হন গ্রামবাসীরা৷ ৬ দিন ধরে পানীয় জলের সংকটে ভোগছেন ধর্মনগর পূর্ব রাধাপুর গ্রামের প্রায় ১৫০ টি পরিবার৷ রাজ্যের শাসকদল নির্বাচনের পূর্বে ভিশন ডুকুমেন্টে সকলের জন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷ রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ের প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জল পৌছে দেবার উদ্দেশ্যে অটল জলধারা যোজনার মত প্রকল্পের কাজ চলছে৷ সে জায়গায় শাসক দল পরিচালিত ধর্মনগর শহর লাগোয়া একটি গ্রামের পানীয় জলের পাম্প বিকল হওয়ায় ৬ দিন যাবত জনগন পানীয় জল থেকে বঞ্চিত৷ তা মেনে নিতে পারছেন না গ্রামবাসিরা৷ জনগনের অভিযোগ এমন সমস্যা গ্রামে প্রায়শই লক্ষ্য করা যায়৷ ৬ দিন যাবত পানীয় জল নেই৷ অথচ গ্রামের প্রধান উপ-প্রধানকে জানানো হলেও তাদের কোন উদ্যোগ নজরে পরেনি৷ আগে একটা সময় পাম্প বিকল হয়ে পরলে ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে বাড়ি বাড়িতে দেওয়া হত পানীয় জল৷
কিন্তু এখন গ্রামের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের এ বিষয়ে কোন ভূমিকা নেই৷ পঞ্চায়েতের প্রধান বৃন্দাবন দাস উত্তর জেলার কিষান মোর্চার সভাপতি৷ কিন্তু উনার বাড়ির সাথেই গ্রামের বহু পরিবারের পানীয় জলের পাম্পটি এতদিন যাবত নষ্ট৷কিন্তু পাম্প সারাইয়ের বিষয়ে উনার কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় ক্ষুব্ধ জনগন৷ রবিবার যখন এলাকার বিক্ষুব্ধ জনগন পানীয় জলের দাবিতে গ্রামে জড়ো হতে থাকে তখন গ্রামের নির্বাচিত এক প্রতিনিধি বিক্ষুব্ধ জনগনের উপর চড়াও হয় বলেও অভিযোগ৷ সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে আসেন প্রধান উপ-প্রধান৷ শুরু হয় পাম্প সারাইয়ের প্রস্তুতি৷
পাম্প অপারেটরের বক্তব্য পাম্পের মোটর নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা দপ্তরে জানালে দপ্তর গরিমসি করে চলেছে৷ কিছু দিন পর পর ঠিকেদার পাঠিয়ে মোটর বদল করে দেয়৷ কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি৷ প্রশ্ণ হচ্ছে, যেদিন থেকে পানীয় জলের পাম্পটি বিকল হয়ে এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ ছিলো সেদিন থেকেই তড়িঘড়ি গ্রামের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দ্রুত পাম্প সারাইয়ের ব্যাবস্থা নিলেন না কেন ? ৬ দিন পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী যখন প্রতিবাদে নেমেছে তখন শুরু হয়েছে পঞ্চায়েতের জন প্রতিনিধিদের দৌড়ঝাঁপ৷ ভোট বৈতরণী পার হবার মুহূর্তে দেখা যায় জনপ্রতিনিধিদের ঢালাও প্রতিশ্রুতি৷ আর মসনদে বসেই জনগনের পানীয় জলের সমস্যা নিরসনে চলে নানান তালবাহানা৷ এনিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে৷ অবিলম্বে এলাকায় পানীয় জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা না হলে গ্রামবাসীরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন৷