নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ জানুয়ারি৷৷ নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী এনএলএফটির সাপেক্ষে চাঁদা আদায় করা এবং সেই টাকা জঙ্গী সংগঠনের হাতে তুলে দেওয়ার প্রাক্কালে গ্রেফতার হলো সীমান্তে বর্ডার সেন্সিং এর কাজে যুক্ত নির্মাণ সংস্থার ৩ ঠিকাদার তথা সহযোগী সহ আরও একজন ব্যক্তি৷ রইস্যাবাড়ি থানার পুলিশ এই ঘটনায় রাত পর্যন্ত ১১ টা পর্যন্ত মোট চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে৷ তাদের কাছ থেকে মোট ১৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ৷তিনজন অভিযুক্তের নাম অমিত ভৌমিক৷
তার বাড়ি রাজধানীর এনসিসি থানার ভোলাগীরি আশ্রম এলাকায়৷ অন্যজনের নাম সুমন মজুমদার বাড়ি খোয়াই থানার সিঙ্গি ছড়ায়৷ আরেকজনের নাম অর্জুন দেবনাথ৷বাড়ি উদয়পুরের আরকে পুর থানা৷তারা প্রত্যেকেই এনপিসিসি ঠিকাদার৷ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মামলাটির তদন্ত মোতাবেক রইস্যাবাড়ী থানার লাগোয়া বাজারে ওসি অজিত দেববর্মা এদিন যখন ডিউটি রত ছিলেন দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ টিআর০১বিএম/ ০৭০৭ নম্বরের একটি বোলেরো গাড়িকে বাজার এলাকায় তিনি দেখতে পান৷ সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটিকে আটক করেন তিনি এবং গাড়িটিকে সার্চ করে তিনজন ব্যক্তির কাছ থেকে মোট ১৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেন৷ কি কারনে এই টাকা তারা বহন করছিলেন সেই প্রশ্ণ জিজ্ঞেস করতে তাদের কথাবার্তায় কিছু অসংলগ্ণতা ধরা পড়ে৷ ঠিকঠাক মতো কোনো সদুত্তর দিতে পারছিলেন না৷ তাদের কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় ওসি অজিত দেব বর্মা তাদেরকে থানায় নিয়ে আসে৷ থানায় টানা কয়েক ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয় নিত্য কুমার পাড়ার সোনা মোহন ত্রিপুরা নামে এক ব্যক্তিকে তুলে আনে পুলিশ৷ পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্ত সোনা মোহন ত্রিপুরা এনএলএফটি জঙ্গি সংগঠনের সহযোগী৷এবং এই তিনজন ঠিকাদারের সঙ্গে তার গোপন যোগাযোগ ছিল৷ পুলিশ জানিয়েছে আটক তিন জন ঠিকেদারের সঙ্গে নিষিদ্ধ জঙ্গি এখন এল এফ টির যে যোগাযোগ রয়েছে প্রাথমিক তদন্তে সে জিনিসটা পরিষ্কার হয়েছে৷সোনা মোহান ত্রিপুরাও জিজ্ঞাসাবাদে এ ব্যাপারে অনেক তথ্য দিয়েছে৷
এদিকে, টাকারজলা থেকে আটক ৪জঙ্গীকে বিশালগড় থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷জীত চারজনকে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডে এনে বিশালগড় থানায় তারা জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়৷জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে আরও বেশ কিছু তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে৷ তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্যে সর্বাধিক কার্যকলাপ সম্পর্কে প্রশাসন আরো সতর্ক দৃষ্টি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে৷
উল্লেখ্য প্রজাতন্ত্র দিবস কে সামনে রেখে সন্ত্রাসবাদীরা বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সংগঠিত করার ছক কষেছে৷ ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে নোটিশ পাঠিয়েছে জঙ্গীরা৷ অপহরণ বাণিজ্য নতুন করে শুরু করেছে তারা৷বেশ কয়েক বছর অপহরণ বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর জঙ্গিরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷বিশেষ করে ত্রিপুরা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর লক্ষ্যে সন্ত্রাসবাদীরা এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছে বলে জানা গেছে৷
তবে পুলিশ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসবাদীদের কার্যকলাপ মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷প্রজাতন্ত্র দিবস কে সামনে রেখে সন্ত্রাসবাদীরা যাতে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সংগঠিত করতে না পারে সেজন্য আন্তর্জাতিক সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে৷রাজ্যের সব কটি থানা পুলিশ ফাঁড়ি এবং টিএসআর ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের সতর্ক করা হয়েছে৷ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত রয়েছে৷প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত করা সম্ভব হবে বলে পদস্থ কর্মকর্তারা আশা ব্যক্ত করেছেন৷