শিক্ষা দপ্তরে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি, ক্ষোভে ফঁুসছেন বেকার ও চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুন৷৷ বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরে ১২ হাজার নতুন পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে৷ নতুন পদ ১৩ হাজার সৃষ্টি করা হলেও, সমাজ শিক্ষা এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরে ১ হাজার নতুন পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি এখনো জারি হয়নি৷ প্রত্যেক জেলায় জেলা শিক্ষা আধিকারিকের অফিসে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন জানাতে হবে৷ মূলত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল ১০৩২৩ জন শিক্ষকদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যেই নতুন পদ সৃষ্টি এবং নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে৷ কারণ, শিক্ষকতা এবং সুকল পরিচালনার নির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা না থাকলে এই নতুন পদগুলিতে আবেদন করা যাবে না৷ ফলে, ১২ হাজার নতুন পদে রাজ্যের কোন বেকার আবেদন জানাতে পারবেন না৷ তাতে ক্ষোভে ফঁুসছেন বেকাররা৷ পাশাপাশি চাকুরীচ্যুত শিক্ষকরাও৷ কারণ, চাকুরীচ্যুতদের দাবী মানেনি রাজ্য সরকার৷ এইসব কারণে, শিক্ষা দপ্তরে নতুন পদে নিয়োগ নিয়ে আবারো মামলা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
মঙ্গলবার বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর ১২০০ একাডেমিক কাউন্সেলার পদে, ৩৪০০ স্টুডেন্ট কাউন্সেলার পদে, ১৫০০ সুকল লাইব্রেরি এসিটেন্ট পদে, ৩০০ হোস্টেল ওয়ার্ডেন পদে এবং ৫৬০০ প্রোগ্রাম এসিসটেন্ট পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে৷ ফিক্সড পে’তে নিয়োগ করা হবে৷ শুরুতে একাডেমিক কাউন্সেলার ১০১৩০ টাকা, স্টুডেন্ট কাউন্সেলার ৭৯৭০ টাকা, সুকল লাইব্রেরি এসিসটেন্ট ৭৯৭০ টাকা, হোস্টেল ওয়ার্ডেন ৭৯৭০ টাকা এবং প্রোগ্রাম এসিটেন্ট ৬২৬০ টাকা করে প্রতি মাসে পাবেন৷ এক্ষেত্রে আদালতের রায়ে স্নাতকোত্তর এবং স্নাতক শিক্ষক যারা ইতিমধ্যে রেগুলার হয়ে গেছেন তাঁদের পুণরায় ফিক্সড পে’তে কাজ করতে হবে৷
সম্প্রতি, রেগুলার স্কেলে পুনরায় নিয়োগ সহ চার দফা দাবী নিয়ে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের সেকেন্ডারী এডুকেশনের অধিকর্তাকে ডেপুটেশন দিয়েছিলেন চাকুরীচ্যুত ১০,৩২৩ জন শিক্ষকদের সংগঠন অল ত্রিপুরা ১০৩২৩ টিচার্স এসোসিয়েশন৷
সংগঠনের পক্ষ থেকে ঐদিন যে দাবী সনদ পেশ করা হয়েছিল, সেগুলি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ১০২৩২ জন চাকুরীচ্যুত শিক্ষক শিক্ষিকাদের অতি শীঘ্রই পুনঃনিয়োগের (রেগুলার পে অফ স্কেল) ব্যবস্থা করতে হবে৷
তাদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন বজায় রাখতে হবে এবং কোন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখে যেন পরতে না হয় তার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে৷ ভবিষ্যতে যাতে পুনরায় আইনী জটিলায় পরতে না হয় তারও নিশ্চিয়তা প্রদান করতে হবে৷ একই সঙ্গে সংগঠন দাবী করেছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ১০৩২৩ জন শিক্ষক শিক্ষিকা সম্পর্কে বিভিন্ন মহলে মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এবং শিক্ষা দপ্তরের দৃষ্টিকোণ ও মতামত প্রত্যেক শিক্ষক শিক্ষিকাকে ব্যক্তিগত ভাবে বা লিখিত আকারে জানাতে হবে৷
ফলে, এখন শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষা দপ্তরে নতুন পদে নিয়োগের জন্য আবেদন জানাবেন নাকি আন্দোলনমুখী হবেন তা বুঝা যাচ্ছে না৷ কারণ, তাঁদের দাবির অধিকাংশই পূরণ হচ্ছে না৷ তাই, রাজ্য সরকার চাকুরীচ্যুত শিক্ষকদের পাশে থেকেও কতটা তাঁদের মন জয় করতে পেরেছে তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷