নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ সেপ্টেম্বর: ত্রিপুরার সাধারণ, পেশাগত ও কারিগরি ডিগ্রি কলেজগুলোতে মোট ১,৩৭৪ জন সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের প্রয়োজন রয়েছে। তবে বর্তমানে এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, পিজিটি, অতিথি শিক্ষক ও আংশিক সময়ের শিক্ষক মিলিয়ে মোট শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৬৫৪। শুক্রবার আগরতলায় ত্রয়োদশ বিধানসভার অষ্টম অধিবেশনের প্রথম দিনে সিপিআইএম বিধায়ক সুদীপ সরকারের উত্থাপিত প্রশ্নের লিখিত জবাবে এই তথ্য দেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী কিশোর বর্মন।
মন্ত্রী জানান, সাধারণ ডিগ্রি কলেজে (ইউজিসি স্বীকৃত) ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত (৬০:১) অনুযায়ী ১,২০৮ জন শিক্ষকের প্রয়োজন। বর্তমানে রয়েছেন ৪৬১ জন নিয়মিত অধ্যাপক, ১৬০ জন স্নাতকোত্তর শিক্ষক এবং ৬৫৪ জন অতিথি শিক্ষক।
পেশাগত ডিগ্রি কলেজে (এনসিটিই স্বীকৃত) ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত (৩০:১) অনুযায়ী ৪৬ জন শিক্ষকের প্রয়োজন। বর্তমানে রয়েছেন ৫৩ জন নিয়মিত অধ্যাপক, ১৫ জন স্নাতকোত্তর শিক্ষক এবং ৩৯ জন অতিথি শিক্ষক। কারিগরি কলেজ ও পলিটেকনিক কলেজে( এআইসিটিই স্বীকৃত) ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত (২৫:১) অনুযায়ী ১২০ জন শিক্ষকের প্রয়োজন। বর্তমানে রয়েছেন ১৪৩ জন নিয়মিত অধ্যাপক, ১ জন স্নাতকোত্তর শিক্ষক, ৮৫ জন লেকচারার এবং ৩৯ জন অতিথি শিক্ষক।
মন্ত্রী শ্রী বর্মনের বিস্তারিত জবাবের পর একাধিক সম্পূরক প্রশ্ন তোলেন সিপিআইএম বিধায়ক সুদীপ সরকার, বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী, কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন এবং মুখ্য সচেতক কল্যাণী সাহা রায়।
বাম বিধায়ক সুদীপ সরকার দাবি করেন, যারা নেট, স্লেট ও পিএইচডি উত্তীর্ণ অথচ ধীরে ধীরে বয়সোত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছেন, সেই অতিথি শিক্ষকদের দ্রুত নিয়োগ করা হোক।
এবিষয়ে কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন অভিযোগ করেন, নেট, স্লেট ও পিএইচডি উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বঞ্চিত করে কেবলমাত্র মাস্টার্স ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ইউজিসি-র নিয়মবিরুদ্ধ। তাঁর প্রশ্ন, ইউজিসি-তে যেখানে নেট, স্লেট ও পিএইচডি প্রার্থীদের জন্য কোনো ঊর্ধ্ববয়সসীমা নেই, সেখানে কেন তাঁদের শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না?
বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী এবিষয়ে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর মতে, অর্ধেক শিক্ষক স্থায়ী আর বাকিরা অতিথি বা আংশিক সময়ের শিক্ষক। বছরের পর বছর ধরে এইভাবেই চলছে উচ্চশিক্ষা। কবে শূন্যপদ পূরণ হবে এবং কত সময় লাগবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী সাহা রায়, বিরোধী দলনেতার প্রশ্নের প্রেক্ষিতে, বামফ্রন্ট সরকারের ৩০–৩৫ বছরের আমলে ইউজিসি-র নিয়ম মেনে শিক্ষক নিয়োগের বিস্তারিত তথ্য জানতে চান।
শেষে মন্ত্রী কিশোর বর্মন জানান, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের যাবতীয় নিয়োগ প্রক্রিয়া ইউজিসি-র নির্দেশিকা মেনেই সম্পন্ন হচ্ছে।

