বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য
কুমারঘাট, ১৭ মার্চ : দেও মনু নদীর সংযোগস্থল হালাইমুড়া দ্রুত ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে। হেরিটেজ অর্গানাইজেশন দুই নদীর সংযোগস্থলে একটি বিশাল পাথরের গঙ্গা প্রতিমা স্থাপন করেছে। গঙ্গা মাতার প্রতিমাটি সংযোগস্থলে বসানোর পর, বারুনী মেলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে বিগত পাঁচ বছর ধরে বিখ্যাত প্রতিমাশিল্পী ফটিকরায়ের রাজনগর এলাকার বাসিন্দা হিমাংশু পাল এই পাথরের মূর্তিটি তৈরি করেছেন। মূর্তিটির ওজন প্রায় দুই টন এবং এটি রাজনগর থেকে হালাইমুড়ার সংযোগস্থলে আনতে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ভারী যানবাহন ব্যবহার করা হয়। এই প্রতিমা নিয়ে আসার পর, সংযোগস্থলের দুই পাশে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করে। উলুধ্বনি ও শঙ্খ ধ্বনিতে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে, যা এক অপরূপ দৃশ্য সৃষ্টি করে।
হেরিটেজ অর্গানাইজেশনের কর্ণধার সুদর্শন বৈদ্য প্রথমে দুই নদীর সংযোগস্থলে গঙ্গা মূর্তি বসানোর উদ্যোগ নেন। শেষ মুহূর্তে এলাকাবাসী ও শাসক দলের নেতৃবৃন্দও তার পাশে এসে দাঁড়ান। আগামী ২৭ মার্চ বারুনী মেলার দিন গঙ্গা প্রতিমায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে অর্গানাইজেশন জানিয়েছে। এদিকে, প্রথম বড় আকারের বারুনী মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। মেলা সফল করার জন্য রবিবার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গঙ্গা মূর্তির বসানোর পর থেকে পর্যটক এবং পুণ্যার্থীদের আগমন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন কুমারঘাট পৌর পরিষদের চেয়ারপারসন বিশ্বজিৎ দাস হালাইমুড়া পরিদর্শন করেন। এ সময় সুদর্শন বৈদ্য, এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা এবং রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। পৌর পরিষদের চেয়ারপারসন আশ্বাস দিয়েছেন যে শীঘ্রই এই দাবিগুলি পূর্ণ হবে।
বারুনী মেলা পরিচালনার জন্য শিবগঙ্গা তীর্থক্ষেত্র নামক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুদর্শন বৈদ্যকে চেয়ারম্যান, এবং কার্তিক চন্দ্র দাসকে সভাপতি করা হয়েছে। কমিটিতে পবিত্র দেবনাথ, বীরেন্দ্র দাস, লিটন দাস, রবীন্দ্র দেবনাথসহ অন্যান্য ব্যক্তিরাও রয়েছেন।
এছাড়া, হেরিটেজ অর্গানাইজেশন জানিয়েছে যে আগামী এক বছরের মধ্যে সরস্বতী ও যমুনার পাথরের প্রতিমা স্থাপন করা হবে। এর ফলে, দুই নদীর সংযোগস্থল আরও একধাপ এগিয়ে ধর্মীয় তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হবে।