আগরতলা, ১৭ অক্টোবর: পুলিশ লকআপে নির্মমভাবে অত্যাচারিত বাদল ত্রিপুরার গতকাল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জি বি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। আজ তাঁর মৃতদেহ নিয়ে সাব্রুম মহকুমার মনু থানা ঘেরাও এবং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, কালাডেপার বিপিনচন্দ্র পাড়ার বাসিন্দা আশাকুমার ত্রিপুরার ছেলে বাদল ত্রিপুরা (৩৮) ও চিরঞ্জিৎ ত্রিপুরাকে গত রবিবার রাবার চুরির অপবাদে পুলিশ থানায় নিয়ে গিয়েছিল।পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, রাতে আটক দুইজনকে বেধড়ক মারধর করে। তাতে বাদল ত্রিপুরার আঘাত গুরুতর ছিল। সোমবার তাদেরকে জামিন নিতে থানা থেকে মনিন্দ্র ত্রিপুরা নামে এক ব্যক্তিকে আধার কার্ড নিয়ে থানায় আসতে ফোন করা হয়েছিল। সেই মোতাবেক মনিন্দ্র ত্রিপুরা এবং যুবরাজ ত্রিপুরা মনু বাজার থানা গিয়ে দেখতে পায় বাদল ত্রিপুরার সারা শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর সাথে পরিবারের সদস্যরা কথা বলে জানা যায় রবিবার রাতে মনুবাজার থানার পুলিশ বেধড়ক মারধর করে তাঁকে। এতে বাদল ত্রিপুরার দুটি চোখ মারাত্মক ভাবে জখম হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাদল ত্রিপুরাকে মনুবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাদল ত্রিপুরাকে শান্তিরবাজার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পর, এলাকাতে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল।
ওইদিন রাতেই মনুবাজারে ছুটে গিয়েছিলেন দক্ষিণ জেলার পুলিশ সুপার অশোক কুমার সিনহা, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক নিত্যানন্দ সরকার। তারা থানার সিসি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন যে বাদল ত্রিপুরাকে মনুবাজার থানার এসআই প্রেমজিৎ রায়, তিন এসপিও কর্মী শ্যামল দাস থৈলাসা মগ, রেঙ্গ মগ মিলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। তাদের মারে বাদল ত্রিপুরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে থানাতেই ফেলে রাখে। জেলা পুলিশ সুপার পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে এসআই ও তিন এসপিওকে চাকরি থেকে সামরিক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জি বি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। আজ তাঁর মৃতদেহ নিয়ে সাব্রুম মহকুমার মনু থানা ঘেরাও এবং সাব্রুম আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।