BRAKING NEWS

রাজ্যের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজির গড়েছে ত্রিপুরা প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সকল অংশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে এসেছেন: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২ সেপ্টেম্বর: রাজ্যের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজির গড়েছে ত্রিপুরা। যখনই কোন সমস্যা আসে তখনই সবাই একসাথে মিলে মোকাবিলা করার মতো উদাহরণ সারা দেশে তৈরি করেছে ত্রিপুরা। বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সকল অংশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে এসেছেন। 

                 সোমবার আগরতলার জ্যাকশন গেট এলাকার একদন্ত সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 

                      অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা রাজ্যের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ১৯ আগস্ট থেকে রাজ্যে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, এমন বৃষ্টিপাত আমরা আর কখনো দেখি নি। চারিদিকে শুধু বন্যা আর বন্যা। যে কারণে ভূমিধ্বস, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ, কৃষি, উদ্যান ক্ষেত্র সবকিছু ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়েছে। এধরণের ভারী বৃষ্টিপাত ত্রিপুরার ইতিহাসে আর কখনো দেখা যায় নি। সাব্রুম সহ দক্ষিণ জেলায় প্রচণ্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেটা এরআগে প্রত্যক্ষ হয় নি। ৪৯৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় আমাদের সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে, যাতে এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তরণ করা সম্ভব হয়। 

                              মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বন্যা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আমাদের সর্বতোভাবে সহায়তা করেছেন। আমি নিজেও রাজ্যের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মনিটরিং করেছি। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সমস্ত আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করি। পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে রূপরেখা তৈরি করা হয়। পরে আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গোটা বিষয় সম্পর্কে অবহিত করি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় চারটি হেলিকপ্টার, এনডিআরএফের অতিরিক্ত বাহিনী, রাবার বোট সহ আনুষাঙ্গিক যাবতীয় সাজসরঞ্জাম পাঠিয়েছেন তিনি। এসডিআরএফ থেকে শুরু করে ভলান্টিয়ার, আপদামিত্র সহ সংশ্লিষ্ট সকলে মিলে বন্যা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কাজ হয়েছে। এর পাশাপাশি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষও দুর্যোগ মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছেন। যেটা আগে আমরা প্রত্যক্ষ করি নি। মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে মানুষ সাধ্যমতো আর্থিক অনুদান প্রদান করছেন। ডাঃ সাহা বলেন, যখনই কোন সমস্যা আসে সবাই একসাথে মিলে মোকাবিলা করার মতো উদাহরণ তৈরি করেছে ত্রিপুরা। 

                            মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে স্বেচ্ছা রক্তদানের গুরুত্বও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সুস্থ ও সবল দেহের অধিকারী যারা এখনো রক্তদানে কুণ্ঠিত রয়েছেন তারা যাতে কোন সংশয় ছাড়া রক্তদানে এগিয়ে আসেন। আমরা সবাই জানি রক্তদান মহৎ দান। এই দানের কোন বিকল্প হয় না। ১৮ থেকে ৬০ বছর এবং যারা নিয়মিত রক্তদান করেন তারা ৬৫ বছর পর্যন্ত রক্তদান করতে পারেন। রক্তদান করলে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও অবগত হতে পারেন মানুষ। কারণ রক্তদানের আগে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা ওই ব্যক্তির শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থাকেন। তখনই নিজের ফিটনেস সম্পর্কে জানা যায়। একজন ব্যক্তির রক্তে চারজন মুমূর্ষু ব্যক্তির জীবন রক্ষা হয়। রাজ্যে এখন রক্তের শ্রেণী বিন্যাস করা সম্ভব। 

                         অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, পুর কর্পোরেটর রত্না দত্ত, টিআরটিসির চেয়ারম্যান বলাই গোস্বামী সহ আয়োজক সংস্থার কর্মকর্তাগণ। অনুষ্ঠানে আসন্ন গনেশ চতুর্থী উৎসব উপলক্ষে আয়োজক সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকা বন্যাদূর্গতদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *