মনোরঞ্জনকে গ্রেপ্তার ইস্যুতে পুলিশের বেতার বিভাগের দুই কর্মী বরখাস্ত

TRIPURA POLICEনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ জানুয়ারী৷৷ উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নাবালিকা যৌন নির্যাতন মামলায় অভিযুক্ত পদত্যাগী বাম বিধায়ক মনোরঞ্জন আচার্য্যকে গ্রেপ্তার করার ঘটনায় শেষ পর্যন্ত পুলিশের কমিউনিকেশন বিভাগের মেসেজ কন্ট্রোল সেন্টারের দুই কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে৷ শনিবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে এক প্রেস রিলিজে এই সংবাদ জানানো হয়েছে৷
প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, বীরগঞ্জ থানায় পদত্যাগী বিধায়ক মনোরঞ্জন আচার্য্যের বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে (কেইস নং ৯৫/২০১৫) সেই মামলার প্রেক্ষিত্রে হাইকোর্টের পিপি কৃর্তক পাঠানো গ্রেপ্তার না করা সংক্রান্ত বার্তা থানার কমিউনিকেশন অফিসার ইনচার্জ সঠিক সময়ে পাননি৷ এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেছেন বিভাগীয় স্তরে৷ তদন্তে দেখা গিয়েছে, আগরতলায় এ ডি নগরস্থিত এসপি (কমিউনিকেশন) এর মেসেজ কন্ট্রোল সেন্টারে হাইকোর্টের পি পি মৌখিকভাবে মনোরঞ্জন আচার্য্যকে গ্রেপ্তার না করা সংক্রান্ত বার্তা পাঠিয়েছিলেন গত ৮ জানুয়ারী৷ কিন্তু, এই বার্তা বীরগঞ্জ থানায় পৌঁছানো হয় ৯ জানুয়ারী রাত ১০টা ৫৩ মিনিটে৷ ততক্ষণে অভিযুক্ত মনোরঞ্জন আচার্য্যকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
তদন্তে দেখা গিয়েছে, অরুন্ধতীনগর পুলিশের মেসেজ কন্ট্রোল সেন্টারের কয়েকজন ওয়ারলেস (বেতার) বিভাগের কর্মীর গাফিলতিতে এমনটা হয়েছে৷ সেই অনুযায়ী বিভাগীয় তদন্ত অনুসারে শুক্রবার তথা ১৫ জানুয়ারী মেসেজ কন্ট্রোল সেন্টারের সুপারভাইজার (অপারেশনাল) চয়ন পদ ভট্টাচার্য্য এবং ওয়ারলেস অপারেটর সুজয় ভট্টাচার্য্যকে কর্তব্যে গাফিলতির জন্য চাকুরী থেকে সাসপেন্ড করা হযেছে৷ অন্যদিকে, বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে এই মেসেজ কন্ট্রোল সেন্টারের অন্যান্য কর্মীদের বিরুদ্ধেও৷ তাতে দেখা গিয়েছে সুপারভাইজার ব্রজ দেববর্মা (অপারেশনাল), সুপারভাইজার অজিত শুক্লদাস (অপারেশনাল), ওয়ারলেস অপারেটর মতিলাল সরকার এবং এই মেসেজ কন্ট্রোল সেন্টারের অফিসার ইন-চাডর্জ বিজয় দেববর্মা কর্তব্যে গাফিলতি করেছেন৷ এস পি (কমিউনিকেশন) এর তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে সমস্ত ওয়ারলেস স্টেশন এবং মেসেজ ডেলিভারী সেন্টারকে আরও গতিশীল এবং সক্রিয় করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, নাবালিকা যৌন নির্যাতন মামলায় অভিযুক্ত পদত্যাগী বিধায়ক মনোরঞ্জন আচার্য্যকে গ্রেপ্তার করেছিল৷ এই গ্রেপ্তার নিয়ে নানা প্রশ্ণ উঠেছে৷ কারণ, মামলায় অভিযুক্ত আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল৷ ঐ আবেদনের উপর শুনানীর সময় হাইকোর্ট পিপি-কে জানিয়েছিলেন পরবর্তী শুনানী না হওয়া পর্য্যন্ত যাতে মনোরঞ্জন আচার্য্যকে গ্রেপ্তার না করা হয়৷ কিন্তু, হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্বেও পুলিশ মনোরঞ্জন আচার্য্যকে গ্রেপ্তার করেছিল৷ তাতেই বিতর্কের সূত্রপাত৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন বিভাগীয় তদন্ত করে বেতার বিভাগের দুই কর্মীকে সাসপেন্ড করেছে চাকুরী থেকে৷ বিভিন্ন মহল থেকে পুলিশ প্রশাসনের সমালোচনা করে বলা হয়েছে এই বিতর্ক থেকে রেহাই পেতে বেতার বিভাগের দুই কর্মীকে বলির পাঠা করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *