ধলাই, খোয়াই জেলাগুলো হবে খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ : কৃষিমন্ত্রী

আগরতলা, ১১ অক্টোবর : ত্রিপুরার দুই জেলা তথা ধলাই ও খোয়াই অচিরেই খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে। পাশাপাশি, রাজ্যের শহরাঞ্চলে নগর কৃষির ওপরও জোর দিচ্ছে রাজ্যর কৃষি দপ্তর। এই তথ্য আজ জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ।

আজ তিনি রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, এ.ডি. নগরে, মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডাঃ ) মানিক সাহার উপস্থিতিতে তিনটি কৃষি প্রকল্পের রাজ্যস্তরীয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এই তিনটি প্রকল্প হল — পি.এম. ধন ধান্য কৃষি যোজনা, ন্যাশনাল মিশন অন পালসেস, এবং ন্যাশনাল মিশন অন ন্যাচারাল ফার্মিং। এই তিনটি নতুন কৃষি প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান যৌথভাবে প্রকল্পগুলির সূচনা করেন।

পরবর্তীতে কৃষিমন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন প্রধানমন্ত্রী ধান ধান্য কৃষি যোজনা দেশের ১০০টি জেলার জন্য নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর ত্রিপুরা জেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, কারণ এই জেলা খাদ্যশস্য উৎপাদনে পিছিয়ে রয়েছে। এই যোজনার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষিজমির পরিমাণ বৃদ্ধি ও খাদ্যশস্যের প্রসার ঘটানো হবে। বর্তমানে উত্তর ত্রিপুরা পিছিয়ে থাকলেও দক্ষিণ, সিপাহিজলা ও গোমতী জেলা খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে। খোয়াই, ধলাই, উনকোটি ও পশ্চিম জেলা এখনও কিছুটা পিছিয়ে।

তিনি জানান সারা দেশে ধান উৎপাদনে ত্রিপুরা ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। জাতীয় গড় যেখানে হেক্টরপ্রতি ২,৮৮২ কেজি, ত্রিপুরায় তা ৩,২৯৯ কেজি। ডালশস্য উৎপাদনে জাতীয় গড় ৮৮১ কেজি, ত্রিপুরায় ৮৫৬ কেজি। কৃষিঋণের দিক থেকে সিপাহিজলা প্রথম স্থানে, এরপর দক্ষিণ, তারপর পশ্চিম জেলা; তবে উত্তর জেলা তুলনামূলকভাবে কম কৃষিঋণ পেয়েছে। এই সমস্ত দিক জাতীয় পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন ত্রিপুরায় বৃষ্টিপাত প্রচুর হয়, ফলে উৎপাদন ভালো হয়, তবে পোকামাকড়ের আক্রমণ একটি বড় সমস্যা। আগে আমরা আলু বাইরে থেকে আনতাম, কিন্তু আগামী তিন বছরের মধ্যে রাজ্য আলু ও পেঁয়াজ উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। আমরা এখন কৃষকদের বেশি করে ডালশস্য উৎপাদনে উৎসাহিত করছি। পাশাপাশি জৈব (অর্গানিক) চাষেও জোর দেওয়া হচ্ছে এবং উৎপাদন ধীরে ধীরে বাড়ছে। রাজ্যে চাষযোগ্য জমি কম, তাই উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা আছে। তবুও আমাদের কৃষকরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। যদি বৃষ্টিপাত অনুকূল থাকে, ধলাই ও খোয়াই জেলাও শীঘ্রই খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। পশ্চিম জেলায় জনসংখ্যা বেশি এবং জমি কম হওয়ায় আমরা সেখানে এবং অন্যান্য শহরে আরবান কৃষি, বিশেষ করে উদ্যানপালনে জোর দিচ্ছি।