অননুমোদিত এজেন্টদের থেকে দূরে থাকার আহ্বান ইপিএফও-র, সরকারি পোর্টাল ও অ্যাপ ব্যবহার করেই বিনামূল্যে পরিষেবা গ্রহণের পরামর্শ

নয়াদিল্লি, ১৬ জুন : কর্মচারী ভবিষ্য তহবিল সংস্থা সদস্যদের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা জারি করে বলেছে, তারা যেন কোনোভাবেই অননুমোদিত সাইবার ক্যাফে বা তৃতীয় পক্ষের এজেন্টের মাধ্যমে ইপিএফও পরিষেবা গ্রহণ না করেন। সকল পরিষেবা বিনামূল্যে ও নিরাপদভাবে সরকারি পোর্টাল ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য, তাই তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পরিষেবা নেওয়া ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্যের সুরক্ষাকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে বলে ইপিএফও জানিয়েছে।
ইপিএফও জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে তারা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যাতে পরিষেবা আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ব্যবহারবান্ধব হয়ে ওঠে। এর মধ্যে রয়েছে কেওয়াইসি বা সদস্য তথ্য সংশোধনের সহজীকরণ, ট্রান্সফার ক্লেইম সাবমিশনের নতুন নিয়ম, ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অ্যাডভান্স দাবির স্বয়ংক্রিয় নিষ্পত্তির ব্যবস্থা, এবং সেন্ট্রালাইজড পেনশন পেমেন্ট সিস্টেম চালুর মাধ্যমে পেনশন প্রদানের প্রক্রিয়া সহজীকরণ।
২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে মোট ২.৩৪ কোটি দাবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। এছাড়া, ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে ট্রান্সফার ক্লেইম প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হয়েছে, যেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিয়োগকর্তার অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
সদস্য প্রোফাইল সংশোধনের জন্য আধার-ভিত্তিক অনলাইন ব্যবস্থা চালু হওয়ায় এখন আর নিয়োগকর্তা বা ইপিএফপিও-র উপর নির্ভর করতে হচ্ছে না। ভুল মেম্বার আইডি ডিলিংক করার সুবিধা শুরু হওয়ায় সদস্যদের অভিযোগ কমেছে। এছাড়া উমঙ্গ অ্যাপে মুখ সনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ইউএএন অ্যাক্টিভেশনের সুযোগ চালু হয়েছে, যার ফলে সদস্যরা সহজেই পাসবুক দেখা, কেওয়াইসি আপডেট, ক্লেইম সাবমিশন ইত্যাদি পরিষেবা নিতে পারছেন।
ইপিএফপিও আরও জানিয়েছে, অনলাইনে দাবির ক্ষেত্রে চেক লিফ বা অ্যাটেস্টেড পাসবুক আপলোড করার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে, এবং এপ্রিল ২০২৫ থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করার জন্য নিয়োগকর্তার অনুমোদনও বাতিল করা হয়েছে।
তবে উদ্বেগের বিষয়, দেখা যাচ্ছে অনেক সাইবার ক্যাফে বা ফিনটেক সংস্থা ইপিএফপিও সদস্যদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে এমন পরিষেবার জন্য যা সরকারিভাবে একেবারে বিনামূল্যে পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা কেবল ইপিএফপিও-র অভিযোগ নিষ্পত্তি পোর্টাল ব্যবহার করছে, যা সদস্যরা নিজেরাই বাড়িতে বসে করতে পারেন। এদের সঙ্গে লেনদেন করলে ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্য বিপদের সম্মুখীন হতে পারে, কারণ তারা ইপিএফপিও-র অনুমোদিত নয়।
ইপিএফপিও জানিয়েছে, তারা একটি শক্তিশালী অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা পরিচালনা করে, যার মাধ্যমে সিপিজিআরএমএস ও ইপিএফআইজিএমএস পোর্টালে অভিযোগ নথিভুক্ত হয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ১৬,০১,২০২টি অভিযোগ ইপিএফআইজিএমএস-এ এবং ১,৭৪,৩২৮টি সিপিজিআরএমএস -এ জমা পড়েছে, যার মধ্যে ৯৮% অভিযোগ সময়মতো নিষ্পত্তি হয়েছে।
ইপিএফপিও সব সদস্য, নিয়োগকর্তা এবং পেনশনভোগীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা শুধুমাত্র সরকারি ইপিএফপিও পোর্টাল (www.epfindia.gov.in) বা উমঙ্গ অ্যাপের মাধ্যমেই পরিষেবা গ্রহণ করেন এবং কোনো তৃতীয় পক্ষকে অর্থ প্রদান না করেন। কোনো সমস্যায় পড়লে, সদস্যরা ইপিএফপিও-র আঞ্চলিক অফিসগুলির প্রো বা হেল্পডেস্কে যোগাযোগ করতে পারেন।
ইপিএফপিও নিশ্চিত করেছে যে, তারা ভারতীয় কর্মশক্তিকে বিশ্বমানের প্রযুক্তিনির্ভর সামাজিক নিরাপত্তা পরিষেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করছে।