৬৫ বছর বয়সে সালমানকে টপকে বক্স অফিস কাঁপাচ্ছেন এই অভিনেতা, যিনি এক বছরে দিয়েছেন হৃতিক-আমিরের পুরো ক্যারিয়ারের চেয়েও বেশি হিট!

মুম্বাই, ৪ জুন: বলিউডের দুই শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য অভিনেতা হিসেবে আমির খান ও হৃতিক রোশনের নাম দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায়। ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’, ‘কৃষ’, ‘থ্রি ইডিয়টস’ ও ‘পিকে’র মতো ব্লকবাস্টার উপহার দিয়েছেন তারা। কিন্তু আপনি কি জানেন, একজন অভিনেতা আছেন যিনি এক বছরে ২৫টি হিট সিনেমা উপহার দিয়ে এই দুই সুপারস্টারের পুরো ক্যারিয়ারের হিট সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছেন?

এই অবিশ্বাস্য কীর্তি গড়েছিলেন দক্ষিণ ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা মোহনলাল, ১৯৮৬ সালে।

১৯৮০-এর দশকে মালয়ালম সিনেমায় বড় ধরনের পরিবর্তন চলছিল। প্রেম নাজির পরবর্তী সময়ে সোমন, জয়ন ও শুকুমারান সামনে আসেন। কিন্তু জয়ন-এর অকালমৃত্যুর পর তরুণদের মধ্যে শীর্ষস্থান দখলের লড়াই শুরু হয়। সে লড়াইয়ে ১৯৮৬ সালে বাজিমাত করেন মোহনলাল।

সে বছর তিনি অভিনয় করেন ৩৪টি সিনেমায়, যার মধ্যে ২৫টি ছিল বক্স অফিস হিট। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি মালায়ালম সিনেমার সুপারস্টার হিসেবে নিজের অবস্থান পাকা করে নেন।

মোহনলালের ১৯৮৬ সালের রেকর্ড বলিউডের অনেক কিংবদন্তিকেও হার মানিয়েছে। যেখানে আমির খানের পুরো ক্যারিয়ারে হিট সিনেমার সংখ্যা মাত্র ২১টি (৪৪টি ছবির মধ্যে) এবং হৃতিক রোশনের রয়েছে ১৫টি হিট (২৭টি ছবির মধ্যে), সেখানে মোহনলাল মাত্র এক বছরেই দিয়েছেন ২৫টি সফল সিনেমা। এমনকি রাজ কাপুর (১৭টি), মনোজ কুমার (১৯টি) ও রাজেন্দ্র কুমার (২৩টি)-এর মতো বলিউডের আইকনিক তারকারাও তাঁর এক বছরের রেকর্ডের সামনে ফিকে হয়ে যান। অন্যদিকে, বলিউডের অন্যতম প্রোডাক্টিভ তারকা অক্ষয় কুমারও এক বছরে সর্বোচ্চ ৪টি হিট দিতে পেরেছেন কয়েকবার। অমিতাভ বচ্চনের ক্যারিয়ারের সেরা বছর ছিল ১৯৮২, যেখানে তাঁর ৫টি হিট ছিল। অথচ সেই ১৯৮৬ সালে, যখন অমিতাভের মাত্র একটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল, তখন মোহনলাল একাই উপহার দিয়েছিলেন ২৫টি ব্লকবাস্টার হিট। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে, কী অবিশ্বাস্য উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন মোহনলাল সেই সময়, যা আজও ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসে এক অনন্য নজির।

চার দশক ধরে মালায়ালম সিনেমার শীর্ষে রয়েছেন মোহনলাল। ২০১৯ সালে লুসিফার সিনেমা দিয়ে ফিরে আসেন আলোচনায়, যা ছিল প্রথম মালায়ালম সিনেমা যা ₹২০০ কোটির ঘর ছুঁয়েছিল।

এ বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালে, ৬৫ বছর বয়সে এসে আবার চমকে দিয়েছেন সবাইকে। তাঁর দুটি সিনেমা – এল2: এমপুরান এবং থুরাডুম – উভয়ই এখন পর্যন্ত ₹২০০ কোটির বেশি আয় করেছে।

এই সিনেমাগুলো সালমান খানের সিকান্দার ও রাম চরণের গেম চেঞ্জার-এর চেয়েও বেশি আয় করেছে, যা প্রমাণ করে এখনো তিনি বক্স অফিসে রাজত্ব করছেন।

মোহনলাল শুধু একজন অভিনেতাই নন, তিনি এক জীবন্ত কিংবদন্তি। বয়স যাই হোক, তার প্রতিভা, জনপ্রিয়তা এবং পরিশ্রম এখনো তরুণদের টেক্কা দেওয়ার মতো। ‘লালেট্টান’ নামেই পরিচিত এই অভিনেতার সাফল্য শুধু দক্ষিণ ভারতে নয়, গোটা ভারতীয় সিনেমার জন্য এক অনন্য গৌরব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *