আগরতলা, ১৮ নভেম্বর: উত্তর ত্রিপুরা জেলার পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে কদমতলা ব্লকের বরগুল গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলকভাবে রঞ্জিত সাব-ওয়ান জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। স্থানীয় কৃষক বিপুল নাথ আড়াই কানি জমির মধ্যে এককানি কৃষি জমিতে এই ধান চাষের কাজ পরিচালিত হয়। ধানের বীজ আনা হয়েছিল আসাম এগ্রিকালচার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। মূলত, রঞ্জিত সাব-ওয়ান জাতটি এমন কৃষি জমির জন্য উপযুক্ত, যা বন্যার জলে প্লাবিত হয়। এই জাতের ধানগাছ ১৫ দিন পর্যন্ত জলের নিচে থাকতে পারে, তবুও এর ফলনে কোনো ক্ষতি হয় না।
পরীক্ষামূলক এই চাষে সফলতা এসেছে। কৃষক বিপুল নাথ জানান, তিনি সাধারণত প্রতি মৌসুমে তার জমি থেকে চার থেকে সাড়ে চার কুইন্টাল ধান উৎপাদন করতেন। কিন্তু এবার রঞ্জি সাব-ওয়ান জাত চাষ করে ৮ থেকে সাড়ে ৮ কুইন্টাল ধান উৎপন্ন হয়েছে। এতে তিনি অত্যন্ত খুশি এবং অন্য কৃষকরাও এই নতুন ধানের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিপুল নাথের পরিবারে রয়েছেন তার স্ত্রী ও এক পুত্র, যিনি ইতোমধ্যেই ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছেন। ধানের পাশাপাশি শীতকালে তিনি শাকসবজির চাষ করেন, তাছাড়া আগর গাছ ও দুধের ব্যবসা করেন তিনি |
এই উদ্যোগ সফল করার পেছনে পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের শান্তনু দাস, বিষয় বস্তু বিশেষজ্ঞ (শস্য বিজ্ঞান) এবং ড: কঙ্কাবতী কলই বিষয় বস্তু বিশেষজ্ঞ (কৃষি সম্প্রচার) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। শান্তনু দাস জানান, আসাম এগ্রিকালচার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনা এই ধান বীজ দুই জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করানো হয়। এতে কৃষকরা তাদের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে পেরেছেন। প্রতি হেক্টরে প্রায় ৫.২ টন ধান উৎপাদিত হবে বলে তিনি জানান।
পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র ইতোমধ্যেই বিপুল নাথের কাছ থেকে কিছু পরিমাণ ধান কিনবে, যা পরবর্তী চাষের জন্য বীজ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। শান্তনু দাস আরও বলেন, যদি অন্য কৃষকরাও এই ধান চাষ করতে আগ্রহী হন, তবে তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র।
বিপুল নাথ এবং অন্যান্য কৃষকদের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, রঞ্জিত সাব-ওয়ান জাতের ধান চাষ বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে কৃষকদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।