মালদা, ২৪ অক্টোবর(হি.স.): মালদহের হবিবপুর ব্লকের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের কলাইবাড়ি গ্রামে এক অজানা জ্বরের প্রকোপে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত দুই থেকে তিন মাস ধরে গ্রামজুড়ে এই জ্বর দেখা দিয়েছে, যার কারণে এলাকাবাসী প্রচণ্ড ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। একদিন বা দুই দিনের জ্বরের পর শরীরে তীব্র যন্ত্রণা, বিশেষ করে হাতে ও পায়ে ব্যথার অভিযোগ করছেন রোগীরা।
এখনো পর্যন্ত এই জ্বরের সঠিক কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে প্রায় ৫০ জন রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে, এটি ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া নাকি অন্য কোনো ভাইরাসজনিত জ্বর, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রক্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই সঠিক রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হবে।
গ্রামের সরকারপাড়া, তালুকদারপাড়া, চৌধুরীপাড়া এবং ধানুকপাড়ায় এই জ্বরের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এই চারটি এলাকায় প্রায় চার হাজার মানুষের বাস, যাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বাসিন্দা এই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকায় জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে, তবে এলাকাবাসীর দাবি, আরো বেশি স্বাস্থ্যশিবির এবং ডাক্তার পরিষেবা প্রদান করা হোক।
এদিকে, খবর পেয়ে হবিবপুর ব্লকের জয়েন্ট বিডিও রাকেশ গাইন বৃহস্পতিবার এলাকা পরিদর্শনে যান এবং বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেন। তিনি এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং স্কুল ও জনবহুল এলাকায় শিবির করে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।
মালদা বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক গোপাল সাহা বলেছেন, “কলাইবাড়ি এলাকায় অজানা জ্বরের প্রকোপে মানুষ আতঙ্কিত। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমাদের দলের কার্যকর্তারা গ্রামবাসীদের খোঁজখবর নিচ্ছে।” অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু জানান, “স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন, রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বিজেপি শুধু সমালোচনা করছে, কিন্তু বাস্তবে কোনো সহায়তা করছে না।”
স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুরি জানান, প্রাথমিকভাবে এটি চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ বলে মনে হচ্ছে। মেডিকেল টিম পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালাচ্ছে এবং রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে কী ধরনের জ্বর এটি।