BRAKING NEWS

মেলারমাঠে ব্যবসায়ী খুনে অভিযুক্তেরও হাসপাতালে চিকিৎধীন অবস্থায় মৃত্যু

আগরতলা, ২৩ অক্টোবর : মেলারমাঠে ব্যবসায়ী খুনে অভিযুক্তের হাসপাতালে চিকিৎধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। ফলে, ওইদিন গণপিটুনিতে যুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জোরালো হয়েছে। ছেলের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন তাঁর মা।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় লেনদেন সংক্রান্ত বচসায় মেলারমাঠে মোবাইল ব্যবসায়ী হরিশংকর সাহা-কে দোকানে ঢুকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করেছেন কলেজটিলা নিবাসী রাহুল কৃষ্ণ রায়। দোকানের মেঝেতে ফেলে একের পর এক ছুরির আঘাতের দৃশ্য উপস্থিত স্থানীয় মানুষ ক্যামরবন্দী করেছেন। কিন্তু, কেউ এগিয়ে যাননি। এমনকি পুলিশের সামনেই নৃশংস ঘটনা ঘটলেও সময় মতো ঘটনাস্থলে উপস্থিত টিএসআর জওয়ানরা ব্যবস্থা নেননি। এদিকে, ঘাতক রাহুলকে পুলিশ ধরে নিয়ে আসার পর দোকানের উপস্থিত স্থানীয় মানুষ তাঁকে গণপিটুনি দিয়েছেন। তাতে, তাঁর বুকের পাঁজর ভেঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি একটি চোখ থেতলে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল। 

ওই নৃশংস ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে গিয়ে দুইজনকেই উদ্ধার প্রথমে আইজিএম হাসপাতালে নিয়ে গেছে। কিন্তু, কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে দুইজনকেই জি বি হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। জি বি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ অক্টোবর হরিশংকর সাহার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর অভিযুক্ত রাহুলের মা দাবি করেন, আর্থিক লেনদেনের কারণেই ওই ঘটনা ঘটেছে। ল্যাপটপ বিক্রি করবে বলে তাঁর ছেলের কাছ থেকে প্রয়াত হরিশংকর সাহার ছেলে ৮০ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছিলেন। কিন্তু, ৪/৫ বছরেও ল্যাপটপ পায়নি রাহুল। ফলে, টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার বহুবার তাঁদের দরজায় গিয়েও কোন কাজ হয়নি। তাঁরা রাহুলকে টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। 

অভিযুক্তের মা দাবি করেছিলেন, রাহুল মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত এবং দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চলছে তাঁর। সেদিন মেলারমাঠে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা। হঠাৎ ঔষুধের দোকানে মা-কে রেখে চলে গিয়েছিল রাহুল। এরপরই ওই ঘটনা তিনি পুলিশের ফোনে জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন, তাঁর ছেলে অন্যায় করেছে এবং আইনিভাবে বিচারের আওতায় নিয়ে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু, মানুষ সেদিন অমানবিকভাবে গণপিটুনি দিয়ে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, গণপিটুনিতে রাহুলের বুকের পাঁজর ভেঙ্গেছে এবং একটি চোখ থেতলে গেছে। এছাড়াও শরীরের অন্যান্য অংশেও গুরুতর আঘাত পেয়েছে। তিনি ছেলেকে অমানবিক মারধরের ঘটনায় বিচার চেয়েছেন। 

এদিকে, আজ সকালে জি বি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাহুলের মৃত্যু হয়েছে। ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গেছেন তাঁর মা। এখন, ওইদিন গণপিটুনিতে যুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জোরালো হয়েছে। পুলিশ অবশ্য এখনও গণপিটুনির ঘটনায় কাউকেই গ্রেফতার কিংবা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেনি। তবে, এখন হয়তো পুলিশ তদন্ত নতুনভাবে শুরু করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *