আগরতলা, ২৬ জুন: সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিটি সৃষ্টিতে রয়েছে দেশপ্রেমের ছোঁয়া। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর রচিত ‘বন্দেমাতরম’ গানের ভূমিকা তুলনাহীন। এই গান আজও ভারতবর্ষের জাতীয়তাবোধের মূল ভিত্তি। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর আয়োজিত সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে পর্যটনমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ প্রথমে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী আরও বলেন, ভারতবর্ষের আগামী প্রজন্মের মধ্যে জাতীয়তাবোধ বজার রাখতে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করতে হবে। এক্ষেত্রে ভারতীয় মনীষীদের জন্মজয়ন্তী পালনের মাধ্যমে যুব প্রজন্মকে যেমন দেশপ্রেমের ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব তেমনি দেশের সার্বিক বিকাশে মানসিকতা গড়ে তোলাও সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার মনে করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী, মনীষী ও সাহিত্যিকদের জীবন দর্শন যুব প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশ এবং দেশের ঐতিহ্য সুরক্ষিত থাকবে। এই দিশাতেই ২০১৮ সাল থেকে বর্তমান সরকার বিভিন্ন মনীষীদের জন্মজয়ন্তী পালন করার উদ্যোগ নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, বাঙ্গালিদের অবশ্যই বাঙ্গালিয়ানা নিয়ে গর্ব করা উচিৎ। বর্তমান সময়ে ইংরেজি ভাষা প্রয়োজনীয় হলেও নিজের সন্তান সন্ততিদের বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহী করার প্রয়াস নিতে হবে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী, মুখ্য আলোচক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মণীশ রুদ্রপাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য বলেন, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। আজ জেলা পর্যায়েও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বিপাশা চক্রবর্তী সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবন দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে তাকে দপ্তরের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হয়। শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার শিল্পীগণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।