কলকাতা, ১৬ জুন: ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের ‘নিরাপদ আশ্রয়ের’ ব্যবস্থা করা হয়েছে কলকাতায় মাহেশ্বরী ভবনে। রবিবার সন্ধ্যায় শহরে পা রেখেই মাহেশ্বরী ভবনে পৌঁছে গিয়েছেন নাড্ডার তৈরি করা বিজেপি চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। কিন্তু তার আগেই গোটা শহর জুড়ে তৈরি হয়েছে বোমাতঙ্ক। বিজেপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল সেখানে পৌছানোর আগেই রাস্তার ডিভাইডারে সুতলি প্যাঁচানো বোমার আকারের কিছু একটা লক্ষ্য করা যায়। তারপরেই সেখানে বোমাতঙ্ক দেখা দেয়। এক প্রকার সরগরম হয়ে ওঠে গোটা শহর। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কলকাতা পুলিশ।
খবর দেওয়া হয় বম্ব স্কোয়াডেও। নিয়ে আসা হয় স্নিফার ডগ। আনা হয় বম্ব ডিটেক্টরও। শেষ পর্যন্ত বম্ব স্কোয়াডের টিম সন্দেহজনক ওই বস্তুটিকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান। যদিও ওই বস্তুটি আদৌ বোমা ছিল কি না, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। আরও কোথায় কোনও সন্দেহজনক বস্তু পড়ে রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশিও চলে।
এদিকে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব-সহ চার সদস্যের সেই টিম রাত ৮টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাঁদের অভ্যর্থনা জানান বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। সেখান থেকে তাঁরা সোজা চলে যান মাহেশ্বরী ভবনে যেখানে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ আনা আশ্রিতদের রাখা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই এই কমিটি তৈরি করেছেন কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। কমিটিতে রয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব দেব, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন ডিজিপি তথা বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ ব্রিজলাল এবং মধ্যপ্রদেশের রাজ্যসভা সাংসদ কবিতা পাতিদার।
এদিকে বিজেপির এই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখেছেন। সেখানে থাকা বিজেপি কর্মী সমর্থকরাও বিস্তারিত তুলে ধরেছেন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বদের সামনে।
বিজেপি সূত্রে খবর, রবিবার রাতটুকু কলকাতায় কাটিয়ে তাঁরা সোমবার সকালেই রওনা হবেন কোচবিহারের উদ্দেশ্যে।
ইতিমধ্যে বোমাতঙ্কের ঘটনাটির পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মিডিয়ার কো-ইনচার্জ কালিচরণ সাহা। তিনি বলেন, তিনজন সাংসদ একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে আসার ঠিক আগ মুহূর্তে এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শহরের বুকে এধরনের ঘটনা কিভাবে ঘটে তা নিয়ে তিনি আশ্চর্য প্রকাশ করেন। কলকাতা পুলিশের ভূমিকায় খুব উগরে দেন কালীচরণ সাহা।
প্রসঙ্গত, রবিবার কলকাতায় আসার পরে সোমবার তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল ডায়মন্ড হারবারে। কিন্তু সোমবার ঈদের উৎসব হওয়ায় তাঁরা সেখানে না গিয়ে উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল বাংলা সফর সেরে রিপোর্ট জমা দেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে।