BRAKING NEWS

নেতাজি সুভাষ স্টেট হোমিওপ্যাথিক হাসপাতাল ও রিপস্যাট পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ মে: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা  আজ রেন্টাস কলোনীস্থিত নেতাজি সুভাষ স্টেট হোমিওপ্যাথিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকে সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই পরিকাঠামোগত উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। 

এই পরিদর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে, ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সঞ্জীব কুমার দেববর্মা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রফেসর (ডাঃ) এইচ পি শর্মা,  মিশন অধিকর্তা রাজীব  দত্ত সহ দপ্তরের অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। অন্তর্বিভাগে মহিলা ওয়ার্ডে শিবনগর এলাকার বাসিন্দা বকুল ঘোষ নামে এক রোগীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। পাশাপাশি অন্তর্বিভাগে পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন স্থানীয় সুভাষনগরের বাসিন্দা উত্তম কুমার সাহা (৫৭) নামে এক রোগীর সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শারীরিক অবস্থার খবরাখবর নেন।

এছাড়া এদিনের পরিদর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালের মেডিসিন স্টোর ও প্যাথলজি এই সমস্ত কক্ষগুলি ঘুরে দেখেন এবং হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীসহ চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেন।

পরিদর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা হাসপাতালের বিভিন্ন পরিষেবা খতিয়ে দেখেন ও বহির্বিভাগে উপস্থিত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি রোগীদের কাছে হাসপাতালের চিকিৎসকরা কেমন পরিষেবা প্রদান করছেন তা জানতে চান। অপেক্ষমান রোগীরা জানান যে হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডাঃ সুশান্ত সরকার যে ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ প্রদান করেন তাতে তাঁদের আস্থা রয়েছে এবং রোগীরা উপকার পাচ্ছেন।

প্রসঙ্গত এই হাসপাতালে বহির্বিভাগে প্রতিদিন ১০০ এর বেশি রোগী আসেন। এই হাসপাতাল চত্বরে যে ৪.৩৩ একর জায়গা রয়েছে, তাতে হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ব্লক তৈরীর পরিকল্পনা চলছে। তার ডিজাইন নিয়ে সিনিয়র আর্কিটেক্ট সঞ্জীবন দত্তের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন।

এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, রাজ্য সরকার বিজ্ঞানসম্মত এই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা আরও ভালোভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য আন্তরিক। মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বাস করেন সরেজমিনে পরিদর্শন করে হাসপাতালের সমস্ত বিষয় অনুধাবন করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া সুনিশ্চিত করা যায়, আর সে জন্যই তিনি আজ এখানে আসেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই হাসপাতালে যে খামতিগুলি আছে সেগুলি দূর করার জন্য রাজ্য সরকার যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেবেন। মেডিক্যাল কলেজ ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খানুভাবে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি মনে করেন এই হোমিওপ্যাথিক পরিষেবা আরো বেশি করে মানুষের উপলব্ধ হওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে এ হাসপাতালের দূরত্বের বিষয়টিও সরকারে ভাবনাচিন্তায় রয়েছে। কিভাবে এই হোমিওপ্যাথিক হাসপাতালের পরিষেবা আরো ভালোভাবে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় এ নিয়ে সরকার চিন্তা ভাবনা করছেন বলে তিনি জানান।

এরপর মুখমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা রিজিওন্যাল ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (রিপস্যাট)যান। এখানে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পঠনপাঠনের হাল-হকিকৎ নিয়ে কথাবার্তা বলেন। তাদের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হন এবং যারা ফেকাল্টি রয়েছেন তাদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী রিপস্যাটের ইনচার্জ প্রিন্সিপ্যাল  প্রফেসর (ডঃ) ঋষিরাজ ছেত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হন। এছাড়া অধ্যাপক ও বিভিন্ন স্তরের আধিকারিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।

মুখমন্ত্রী  রিপস্যাটের বিভিন্ন ল্যাবরেটরি যেমন ফার্মাসিউটিকস, ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যানালাইসিস, ফার্মাসিউটিক্যাল ল্যাবরেটরি কেমিসট্রি ল্যাবরেটরি,  মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরি ইত্যাদি পরিদর্শন করেন। এছাড়াও বয়েজ ও গার্লস হোস্টেল সম্পর্কেও খোঁজ খবর নেন।

রিপস্যাটে যে নিউ একাডেমিক ব্লক তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে সেই বিষয়ে সিনিয়র আর্কিটেক্ট সঞ্জীবন দত্তের সঙ্গে  মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন। এরপরে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আকস্মিক পরিদর্শন করে প্রকৃত চিত্র সচক্ষে দেখার জন্য এখানে এসেছেন আজ তিনি। যে ত্রুটিগুলি চোখে ধরা পড়েছে সেগুলি যাতে দূর করা যায় সে বিষয়ে রাজ্য সরকার গুরুত্ব আরোপ করবে । মুখ্যমন্ত্রী বলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যেরকম  চাকচিক্য  ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রূপ দেখা যায়, ঠিক সেইরকম সরকারি দপ্তর গুলিতেও করা সম্ভব হয়, যদি সেখানে সঠিকভাবে  রক্ষণাবেক্ষণ  করা যায়।  সেক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা নিয়ে কর্মচারীদের কাজ করতে হবে। সেজন্য অবশ্যই মনিটরিং করতে হবে এবং অন্যান্যদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

শুধু স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেই নয়, সরকারি সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। রিপস্যাটের পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন এবং ফ্যাকাল্টিদের যে অভাব রয়েছে সেই বিষয়টাও পূরণ করতে রাজ্য সরকার আন্তরিক ভূমিকা গ্রহণ করবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *