BRAKING NEWS

৪ জুনের পর এসএসসি দুর্নীতিতে জড়িত নেতা মন্ত্রীদের কোমরে দঁড়ি বেঁধে জেলে পাঠানো হবে, হুঙ্কার দিলীপের

বর্ধমান, ২৪ এপ্রিল (হি. স.) : “তৃণমূলের অপশাসনের জন্য বাংলার গরিব মানুষের জীবন দুঃবিশহ হয়ে উঠেছে। গরিব মানুষের জীবন শোষন হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের গরিব কল্যান যোজনা থেকে বাংলার মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। যে বাংলা শিক্ষা নিয়ে গর্ব করত। সেই শিক্ষায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। বর্ধমানের এক বিধায়ক নিজের প্যাডে ১৫ জনের নাম চাকরি দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন। এরকম অনেক তৃণমূলের নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রী আছে। ৪ জুনের পর তাদের কোমরে দঁড়ি বাঁধা শুরু হবে। গরুর দঁড়ি বেঁধে জেলে নিয়ে যাওয়া হবে। বুধবার মনোনয়ন জমা দিয়ে ফের হুঙ্কার দিলেন বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রোজগার মতই দিলীপ ঘোষ প্রাত:ভ্রমণে বেরিয়ে বর্ধমান শাঁখারীপুকুর বিবেকানন্দ সেবক সংঘের মাঠে। তার পর সেখান থেকে চা-চক্রে যোগ দেন তিনি। সেখানে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে তিনি একের পর এক আক্রমন করে তুলোধনা করেন তিনি। মঙ্গলবার বর্ধমানের ভাতার থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে একের পর এক আক্রমন করেন। এসএসসির রায় বিজেপির ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে ভুল হয়েছে বলেন। তার পাল্টা জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন,” সত্তর বছরের একজন মহিলা সারাজীবনই ভুল করছেন। কোনটা ঠিক করেছেন? চুরি করে বলছেন ভুল হয়েছে। কোটি কোটি টাকা চুরি করে দিব্যি খাচ্ছিলেন। আর চোখ দেখাচ্ছিলেন। ধরা পড়তেই বলছেন ভুল হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী মোদীকে প্রচারমন্ত্রী বলে কটাক্ষ করে বলেছেন, কেন্দ্র কোন টাকা দেয়নি। তার পাল্টা জবাবে দিলীপ ঘোষ সপাটে বলেন,” এক পয়সাও দেওয়া হবে না। চোরকে কেউ বিশ্বাস করে না।” মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বিজেপির দুটো চোখ সিপিএম আর কংগ্রেস। তার পাল্টা সংযোজন করে দিলীপবাবু বলেন,” বিজেপির তিনটা চোখ। আর একটা তৃণমূল কংগ্রেস। দুটোকে শেষ করেছি। এবার তৃণমূলকেও শেষ করব। আদালতের রায় প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষকের চাকরী চলে যাওয়ায় স্কুলগুলিতে সঙ্কটের আশঙ্কা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,” স্কুলে স্কুলে সঙ্কট তৈরী হবে। বিজেপি, আরএসএস কি পড়াবে? তার পাল্টা জবাবে বর্ধমান -দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ বলেন,” আমরা পড়াতে রাজি আছি। আমরা পড়ালে কমপক্ষে তৃণমূলের নেতাদের মত চোর ডাকাত তৈরী হবে না। আমরা শিক্ষক, কার্যকর্তা সব সাপ্লাই করব। কেন পয়সা নেব না।”

মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে তিনি বলেন,” ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যত অন্ধকার করে যে পাপ করেছেন। তার প্রয়শ্চিত ওনাকে করতে হবে।” গত দুদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলায় তিনটি সভা করেছেন। সেপ্রসঙ্গে কটাক্ষ করে তোপ দাগেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন,” মুখ্যমন্ত্রী ভোটের আগে বর্ধমানে থেকে যাবেন। তারসঙ্গে ওনার মাসতুতো ভাই (কীর্তি আজাদ) ভাগলপুর থেকে এসেছেন। এদুজনকেই এমন হারাবো, বর্ধমানে আসার নাম করবেন না।” দিলীপ ঘোষের একের পর এক আক্রমনাত্মক ভাষায় বিস্তর জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বুধবার বুদবুদের জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,” এখানে যিনি বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন, তিনি খড়গপুরের সংসদ ছিলেন। এবারে সেখানে টিকিট দেয়নি। তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলেন তৃণমূলকর্মীদের পেটাও, লাঠি মারো। এধরনের ভাষা যখন বলে, রাজনৈতিকভাবে সে দেউলিয়া হয়ে গেছে।” এদিন দিলীপ ঘোষ পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে জবাবে বলেন,” উনিতো নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন। কেমন ছ্যাঁকা খেয়ে এসেছেন।” ভাষা বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওনার ভাষা তো মুখস্ত করেছি। উনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকে কলুষিত করেছেন। বাঙালিদের বদনাম করেছেন। উনি বিরোধিদের কিভাবে মারতে হয়। কিভাবে কেস দিতে হয়। কিভাবে ভদ্রলোককে, বড় নেতাদের পরিবার তুলে আক্রমন করতে হয়। সেটাতো উনি শিখিয়েছেন। ওনার মতো টিচার কোথায় আছে?” তিনি আরও বলেন,” বাংলা খাও জয় বাংলা বলো, আর বিরোধীদের ঝাণ্ডা খোলো। এটাতো ওনার সংস্কৃতি। দিলীপ ঘোষ ওনার ভাষাতেই ওনাকে উত্তর দেবে।” বুধবার দিলীপ ঘোষ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এদিন তা়র সঙ্গে ছিলেন, বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা, শমিক ভট্টাচার্য, সায়ন্তন বসু, রাজু মুখার্জী প্রমুখ। এদিন সকালে পান্তাভাত সঙ্গে চারাপোনা মাছ ভাজা, ছাঁচি পেঁয়াজ খেয়ে বের হন। তার শহরের মেহেদীবাগনান থেকে ছিল বিজেপির বিশাল শোভাযাত্রা। মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় দিলীপ ঘোষ কখনও ডমরু বাজাতে থাকেন। কখনও লাঙল, কখনও ত্রিশুল হাতে ধরেন। এদিন

বিকাল বর্ধমানের দলীয় কার্যলয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি বলেন,” তৃণমূলের অপশাসনের জন্য বাংলার গরিব মানুষের জীবন দুঃবিশহ হয়ে উঠেছে। শোষন হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের গরিব কল্যান যোজনা থেকে বাংলার মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। যে বাংলা শিক্ষা নিয়ে গর্ব করত। সেই শিক্ষায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। বর্ধমানের এক বিধায়ক নিজের প্যাডে ১৫ জনের নাম চাকরি দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন। এরকম অনেক তৃণমূলের নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রী আছে। ৪ জুনের পর তাদের কোমরে দঁড়ি বাঁধা শুরু হবে। গরুর দঁড়ি বেঁধে জেলে নিয়ে যাওয়া হবে।” মুখ্যমন্ত্রী এক জনসভায় কারাগারে পাঠানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সেপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন,” দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী যদি জেলে যেতে পারেন। বিহার, ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী যদি জেলে যেতে পারেন। তাহলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কেন যাবেন না। উনি সবচেয়ে বড় দুর্নীতি করেছেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *