রেশমী দেবনাথ, ১৪ জানুয়ারি : বাঙালীর প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করছে বাঙালীর বিভিন্ন উৎসব ও পার্বণ। আর এই উৎসব বা পার্বণের অন্যতম একটি পার্বণ হল পৌষ পার্বণ। কথায় আছে বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ। এই কথার আক্ষরিক অর্থ এখনো খুঁজে পাওয়া যায় শহর থেকে একটু দূরে গেলেই গ্রামীন পরিবেশে।
ত্রিপুরার শহর এলাকায় যদিও এই প্রাচীন ঐতিহ্য ঘেরা সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠানের চল এখন নেই বললেই চলে। তবে শহর ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন গ্রাম্য পরিবেশে এখনো এই প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।
পৌষ পার্বণ মানেই কড়া শীতের আমেজে পিঠে-পুলি আর বুড়ির ঘর তৈরি করে উৎসবের আনন্দে মেতে উঠা। পৌষ পার্বণকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই শহর থেকে দূরে গ্রাম্য পরিবেশে চলছে প্রস্তুতি। প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রেখে এখনো উঠানে আলপনা আঁকা, চাল কুটা সহ কচিকাচাঁরা বুড়ি ঘরের প্রস্তুতিতে লেগে পড়েছে। তবে শহর আগরতলায় এই আমেজ নেই। আধুনিকতার ছোঁয়ায় শহর আগরতলায় এখন এই পৌষ পার্বণকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার প্রস্তুতি লক্ষ্য করা যায় না। হারিয়ে গেছে সবটাই। পাশ্চাত্য ঘেরা পরিবেশে পৌষ পার্বণ এখন শহুরে পরিবেশে এক লুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি।
তবে গ্রামীন পরিবেশে এই প্রাচীন চিত্র এখনো লক্ষ্য করা যায়। রবিবার পৌষ সংক্রান্তির আমেজে মজতে দেখা গেছে ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গার বিশেষ করে গ্রামীন এলাকার জনগণকে। গ্রামের মেঠো পথের পাশেই কচিকাঁচাদের বুড়ির ঘর তৈরি করে আনন্দে মেতে উঠতে দেখা গেছে এদিন। সকাল থেকেই মাটির উঠানে আলপনা এবং পিঠে পুলির প্রস্তুতি ছিল শেষ পর্যায়ে।
এদিন উনকোটি জেলার কৈলাসহরে চিরাচরিত পৌষ সংক্রান্তির মেলায় উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায় প্রতিবারের ন্যায়। বহু বছর ধরে কৈলাসহরের টাউন কালীবাড়ির সম্মুখে পৌষ সংক্রান্তির মেলা বসে। এই মেলায় পসরা সাজিয়ে বসেন বিভিন্ন দোকানীরা। এই মেলায় আকর্ষণ হিসেবে প্রতিবছরই থাকে বহিঃরাজ্য ও পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ থেকে আগত রকমারি মাছ। এছাড়াও থাকে বিভিন্ন সামগ্রী। এছাড়াও কৈলাসহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে লক্ষ্য করা গেছে এদিন বুড়ির ঘরে কচিকাচাদের আনন্দ।
একপ্রকার পার্বত্য রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামীন এলাকায় ধুমধামের সহিত পৌষ সংক্রান্তি পালিত হচ্ছে। প্রাচীন গ্রাম- বাংলার ঐতিহ্য মেনে বুড়ির ঘর তৈরি, পিঠে-পুলি তৈরি হচ্ছে ঘরে ঘরে। পৌষ পার্বণের আনন্দে মেতে উঠেছেন আট থেকে আশি প্রত্যেকেই।
| ReplyForwardAdd reaction |

