কলকাতা, ৩০ নভেম্বর (হি.স.) : তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু গোড়াতেই হোঁচট খেয়ে বের তৃণমূলে ফেরায় সচেষ্ট হন। গত দুবছরে সেই চেষ্টার মাত্রা বেড়েছে অনেকটাই। তাও তৃণমূলের ডাক আসছে না। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি বিধানসভায় ‘অশালীন’ আচরণ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। বৃহস্পতিবার ক্ষোভে ফেটে পড়লেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। মমতার মতো মানুষের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। স্পষ্ট বলছেন শোভন।
বুধবার বিধানসভায় রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে ধরনা কর্মসূচি পালন করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অমিত শাহের সভা শেষ হতেই শুভেন্দু-সহ বিজেপির অন্য বিধায়করা সেসময় একপ্রকার জোর করে ঢুকে পড়েন বিধানসভা চত্বরে। বিনা অনুমতিতে তৃণমূলের ধরনাস্থল থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে পালটা ধরনা শুরু করেন শুভেন্দুরা। তৃণমূল বিধায়কদের উদ্দেশে চোর চোর স্লোগান দেওয়া হয়। অভিযোগ, রীতিমতো অভব্য আচরণ করেছেন বিজেপি বিধায়করা। এমনকী জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীনও ‘চোর চোর’ স্লোগান দেওয়া চলতে থাকে।
মমতার প্রতি শুভেন্দুর এই আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ শোভন চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে শোভনবাবু বলেন, “যেভাবে শুভেন্দু বিধানসভায় ঢুকে মমতাকে লক্ষ্য করে স্লোগান দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যেভাবে অভব্য আচরণ করা হয়েছে, সেটা রাজনৈতিক শালীনতার বিরোধী। এটা রাজনীতি হতে পারে না। এর আগেও বিধানসভায় বহু মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী নেতার রাজনৈতিক তরজা হয়েছে। কিন্তু এতটা নিচে কেউ নেমে যাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মানুষের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। এটা বুমেরাং হবে।”
শোভন চট্টোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দীর্ঘদিন বিরোধী রাজনীতি করেছেন। সিপিএমের হাতে মার খেয়েছেন। মেরে তাঁর মাথা ফাটা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনওদিন জ্যোতি বসুর প্রতি ব্যক্তিগত কোনও আক্রমণ মমতা করেননি। জ্যোতি বসুকে নিয়ে কোনও কুকথা মমতার মুখে শোনা যায়নি। কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের সাফ কথা, মমতার প্রতি বিধানসভায় যে আচরণ হয়েছে সেটা অভাবনীয় এবং সম্পূর্ণরূপে নিন্দনীয়।