BRAKING NEWS

হাপাতালের ভেতরে ঔষধের দোকানে চড়া দামে ঔষধ বিক্রির অভিযোগ, ডেপুটেশন দিল অন্যান্য ঔষধ ব্যবসায়ীরা

আগরতলা, ১১ সেপ্টেম্বর।। হাঁপানিয়াস্হিত ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জেনেরিক  ঔষধের কাউন্টার থাকা সত্বেও বহিঃরাজ্যের এক ব্যবসায়ী বিনা টেন্ডারে আরেকটি ঔষধের কাউন্টার খুলেছে। সব থেকে বিস্ময়কর ঘটনা হলো, বাইরে যে ঔষধের দাম ১০০ টাকা, ওই কাউন্টারে ২৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট দেওয়ার নামে আরও বেশি দাম রাখা হচ্ছে। রোগীরা না বুঝেই ঠকছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার  হাঁপানিয়া হাসপাতালের বাইরে থাকা সমস্ত ঔষধ দোকানের মালিক পক্ষ একত্রিত হয়ে  বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ও ডেপুটেশন প্রদান করে।

 ধনী গরিব বিচার করে রোগ ছড়ায় না। রোগ হলে তার থেকে মুক্তি পেতে মানুষ ছুটে যায় চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু সাধ্যমত চিকিৎসা করে রোগ সারিয়ে উঠতে গিয়ে দেখা যায় চিকিৎসা পরিষেবা যেন আজকালকার দিনে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তারপরও মানুষ সরকারি হাসপাতালগুলিতে ছুটে যায় যদি কিছুটা হলেও কম অর্থ ব্যয় করে পরিষেবা পেতে পারে। কিন্তু হাসপাতালগুলির মধ্যে জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টার নামে এবং হাসপাতালের বাইরে যে সব ঔষধের দোকান রয়েছে সেগুলি রোগীর পরিবারের পকেট কাটতে আগে থেকেই খাপ পেতে বসে রয়েছে। এর উপর কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ নেই প্রশাসনের।এমনই অভিযোগ উঠে আসছে প্রতিনিয়ত।  এরই মধ্যে হাঁপানিয়া হাসপাতালের ভেতর জেনেরিক ওষুধ ব্যবসায়ীরা রোগীদের কাছে চড়া দামে ওষুধ বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠে সোমবার। এই জেনেরিক ওষুধ দোকান যাতে অতি শীঘ্রই বন্ধ করে দেওয়া হয় তার দাবি জানিয়ে সোমবার হাঁপানিয়া হাসপাতাল সুপা্রের নিকট ডেপুটেশন প্রদান করেছেন হাসপাতাল সংলগ্ন ওষুধের দোকানের মালিকরা।

জানা যায়, ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাপানিয়ার হাসপাতালের বাইরে প্রায় ৩০ জন ঔষধ ব্যবসায়ী দীর্ঘ বৎসর যাবৎ ঔষধ ব্যবসা করে চলেছে। কিন্তু গত এক মাস আগে হাঁপানিয়া হাসপাতালের ভেতরে IRAYS MEDTECH SOLUTIONS নামে এই সংস্থা জেনেরিক কাউন্টার খুলেছে। কিন্তু দেখা গেছে বাইরে যেইসব ঔষধের দোকান ঔষধ বিক্রি করছে সেই দোকানের তুলনায় অনেক কম দামে বাইরের দোকানে ঔষধ বিক্রি করা হয় বলে জানান দোকানের মালিকরা। যাইহোক কেউ কোন জটিল রোগে আক্রান্ত হলে সেটা সারিয়ে উঠতে কার্যত সংশ্লিষ্ট পরিবারটির জন্য বিভীষিকাময় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ঔষধ যে কতটা আঁকাছোঁয়া তা সহজে অনুমান করা যায় না। কেন্দ্রীয় সরকারের কেমিক্যাল এন্ড ফার্টিলাইজার দপ্তরের অধীন ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইজিং অথোরিটি দেশের সাধারণ ও গরিব মানুষের কথা মাথায় রেখে তাদের ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে ওষুধের দাম নির্ধারণ করে। নিয়ম অনুযায়ী সমস্ত ওষুধকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে একটি হল অতি প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং অপরটি হল কম প্রয়োজনীয় ঔষধ। কোন কোন ওষুধ অতি প্রয়োজনীয় তা স্থির করে দেশের নীতি আয়োগ। ফলে এই তালিকার মূল্যবৃদ্ধি হার যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা হয়।

অতি প্রয়োজনীয় ঔষধ উৎপাদক থেকে বিক্রি পর্যন্ত লাভের সামঞ্জস্য যাতে ১৬ শতাংশের মধ্যে হয় সেটাও নিশ্চিত করে দেয় তারা। তবে অতি প্রয়োজনীয় মেডিসিনের ক্ষেত্রে এটা হয় না। সে ক্ষেত্রে ওষুধগুলির সংখ্যাটা হচ্ছে প্রায় মোট ওষুধের ৯০ ভাগ। আর সেক্ষেত্রে অসাধু ঔষধ ব্যবসায়ীরা রোগী ও রোগীর পরিবারদের পকেট কেটে চলেছে। কখনো কখনো ১০ শতাংশ, আবার কোথাও ১৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয় বলে ক্রেতাদের সঙ্গে মশকরা করতে দ্বিধা করে না কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা। এখন আবার দেখা যাচ্ছে জেনেরিক মেডিসিনেও রোগী ও রোগীর পরিবারদের স্বস্তি নেই। যাইহোক খুচরো দোকান এবং জেনেরিক মেডিসিন কাউন্টার সব জায়গাতেই কতিপয়ের গালভরা চমক সাধারণ মানুষের পকেট কাটার ফন্দি। উদাসীন প্রশাসন। আর প্রশাসনের উদাসীনতা দিশেহারা সাধারণ মানুষ। অর্থাৎ মানুষের অবস্থা ভাত খাবে, নাকি ঔষধ খাবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *