আগরতলা, ৩০ জানুয়ারি (হি.স): ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি আসনে প্রার্থী ব্যর্থ তৃণমূল কংগ্রেস স্বপ্ন দেখছে ক্ষমতা দখলের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ত্রিপুরায় সাকুল্যে ২৮টি আসনে প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে। আজ অন্তিম দিনে তৃণমূলের ২৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ম্যাজিক সংখ্যায় পৌছানোর মতো প্রার্থীও ঝুলিতে নেই তৃণমূলের। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, আগামী ৬ এবং ৭ ফেব্রুয়ারি তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত ত্রিপুরা সফর আদৌ হবে তো। কারণ, এই পরিস্থিতিতে অন্তত ত্রিপুরায় বিজেপিকে একক চেষ্টায় ক্ষমতা থেকে সরানোর ডাক জোর গলায় দিতে পারবেন না মমতা।
ত্রিপুরায় পুর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের দ্বিতীয় দল হিসেবে দাবি করেছিল। দলনেত্রীর নির্দেশে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বাঘা বাঘা নেতৃত্ব ঘন ঘন ত্রিপুরা সফর করেছেন। সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়কে ত্রিপুরার আনাচে কানাচে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছিল। ভাব দেখে মনে হয়েছিল, তেইশের বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতার পরিবর্তনে তৃণমূল কংগ্রেস নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে। শুধু তাই নয়, একক শক্তিতেই তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরায় বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করবে, এমনটাও জোর গলায় দাবি করেছিলেন দলের সমস্ত নেতৃবৃন্দ। অথচ, আসল পরীক্ষায় সমস্ত হওয়া বেরিয়ে গেছে বলেই মনে হচ্ছে।
তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরায় ঢাল তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার, রাজনৈতিক মহল অন্তত তাই মনে করে। সংগঠনের বিস্তার দূরে থাক, নামকাওয়াস্তে রাজ্য কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে তৃণমূল ত্রিপুরায় নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে চেয়েছে। এরই মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার হয়ে অনেক সাহসে ভর করেই বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস, এমনটাই দাবি নিন্দুকের।
সমালোচকদের মতে, গতকাল প্রার্থী ঘোষণায় মিথ্যা আশ্বাস দেওয়ার বদলে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দের দুর্বলতা স্বীকার করে নেওয়া উচিত ছিল। তার বদলে, তাঁরা আংশিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণার মধ্য ৬০টি আসনেই প্রার্থী দেবে সেই সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছিলেন। অবশ্য আজ মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় সমাপ্ত হওয়ার পর তাঁদের বুজরুকি অনেকটাই প্রকাশ হয়েছে। ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেস গতকাল ২২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছিল। পরবর্তী ধাপে আরও ৫টি এবং অন্তিম মুহুর্তে আরও একজনের নাম ঘোষণা দিয়েছে। ওই ২৮ জন প্রার্থীই আজ মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বলে তৃণমূলের ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন।অবশ্য, তাঁদের মধ্যে মনোনয়ন কতজন প্রত্যাহার করবেন, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের অন্তিম দিনে এই বিষয়টিও পরিষ্কার হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে ত্রিপুরায় দলের এই করুণ দশা দেখে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সফরে আসার সাহসিকতা দেখাবেন কি, রাজনৈতিক মহলে তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।