কলকাতা, ৫ জানুয়ারি (হি.স.) : অঙ্কিতা অধিকারীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণবাবদ পাওয়া প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা আলাদা করে রাখতে হবে শিক্ষক দুর্নীতিতে আদালতের কড়া নাড়া ববিতা সরকারকে । শিক্ষক হিসাবে তাঁর নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী সোমবার ৯ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি ।
ববিতার নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থী অনামিকা রায়। তাঁর দাবি, ববিতাকে শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে প্রাপ্ত নম্বরের থেকে বেশি নম্বর দিয়েছে এসএসসি যার ফলে তাঁদের দুজনেরই মোট নম্বর হয়েছে ৭৭। কিন্তু আসলে ববিতার নম্বর হওয়ার কথা ৭৫। তা হলে ববিতা ওয়েটিং লিস্টে ১৪ জনের পিছনে চলে যাবেন। আর তালিকায় প্রথমে থাকবে অনামিকার নাম। সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ববিতার আইনজীবীকে বলেন, অঙ্কিতা অধিকারীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণবাবদ পাওয়া প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা একটি অ্যাকাউন্টে ফিক্সড ডিপোজিট আকারে রাখতে হবে ববিতাকে। মামলার রায় তাঁর বিরুদ্ধে গেলে ওই টাকা আদালতে জমা দিতে হবে তাঁকে। আগামী সোমবার ৯ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি ।
শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা রায় দাবি করেন, ববিতা নন তাঁর পদের যোগ্য দাবিদার তিনিই। কারণ ফর্ম পূরণের সময় এসএসসি-কে ববিতা জানিয়েছিলেন স্নাতকে তিনি ৮০০-র মধ্যে পেয়েছেন ৪৪০। শতাংশের নিরিখে যায় ৬০ শতাংশ। কিন্তু হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে আসলে তিনি ৬০ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছেন। এসএসসি -র বিধি অনুসারে স্নাতকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেলে অতিরিক্ত ৮ নম্বর মেলে। আর ৪৫ – ৫৯ পেলে অতিরিক্ত মেলে ৬ নম্বর। ববিতা ৬০ শতাংশ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করায় তাঁকে ৮ নম্বর বরাদ্দ করে এসএসসি যার ফলে ববিতা ও অনামিকা ২ জনেরই মোট নম্বর হয় ৭৭। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতার নম্বর বেশি হওয়ায় ববিতা অগ্রাধিকার পান।
প্রসঙ্গত, এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে শিক্ষিকার চাকরি গেছে তৎকালীন শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। ৪ বছরে চাকরি-জীবনে পাওয়া বেতনের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা অর্থ ২ কিস্তিতে ফেরাতে হয় তাকে । হাইকোর্টের নির্দেশে ক্ষতিপূরণবাবদ সেই টাকা পেয়েছিলেন ববিতা সরকার । জুলাই মাসে প্রথম কিস্তির ৭ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৯৯ টাকা তুলে দেওয়া হয় ববিতা সরকারের হাতে। এরপর আগস্ট মাসে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার ৪৯৯ টাকার চেক পেলেন তিনি। সব মিলিয়ে মোট ১৫ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭৯৮ টাকা পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। এবার সেই টাকাই আলাদা করে রাখার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।–