BRAKING NEWS

রাজ্যের জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করা বর্তমান রাজ্য সরকারের অন্যতম লক্ষ্য : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২৩ ডিসেম্বর : রাজ্যের জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করাই হচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। রাজ্যে উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার ফলেই বর্তমানে বহির্রাজ্যে রোগীর রেফারের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। আজ দূর্জয়নগরে এ এন এম প্রশিক্ষণ স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ও কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। রাজ্যে বর্তমানে মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, ফার্মাসিস্ট কলেজ সহ নানাধরণের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে। এগুলিকে ভিত্তি করেই আগামী দিনে রাজ্যে মেডিক্যাল হাব তৈরী করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে হাঁপানীয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজকে রিমস্ এর আদলে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইতিমধ্যেই ৯টি সুপার স্পেশালিটি পরিষেবা চালু করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে রাজ্যের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে রাজ্য সরকার নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। ফলে রাজ্যের জনগণ এখন প্রকৃত অর্থেই ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সুফল ভোগ করতে পারছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের ফলেই রাজ্যে স্বাস্থ্য, যোগাযোগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় রাজ্যে ৬টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে এবং নতুন আরও ৭টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য ১০ হাজার ২২২ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়াও রাজ্যে ৪টি রোপওয়ে নির্মাণের বরাদ্দও পাওয়া গেছে। এগুলি রূপায়িত হলে আগামী দিনে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের ফলেই রাজ্যের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ফলে বর্তমানে আগরতলা থেকে দশ থেকে বারোটি এক্সপ্রেস ট্রেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচল করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্য বর্তমানে দেশের অন্যতম ইন্টারনেট গেটওয়েতে পরিণত হচ্ছে। আর এই উন্নত ইন্টারনেট পরিষেবাকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের যুবক-যুবতীরা উন্নত ডিজিটাল ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের জনগণের মধ্যে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে রাজ্যব্যাপী প্রতিঘরে সুশাসন অভিযান কর্মসূচী চালু করেছে। যা চলবে আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই অভিযানের মাধ্যমে গ্রামস্তর, ব্লকস্তর, মহকুমাস্তর থেকে শুরু করে জেলাস্তরের জনগণ খুবই উপকৃত হতে পারছেন।শুধু তাই নয় জনগণ যাতে সরকারকে নিজের সরকার বলে ভাবতে পারেন তার জন্য ‘আমার সরকার’ পোর্টাল চালু করা হয়েছে। উদ্দেশ্য রাজ্যের জনগণকে এক স্বচ্ছ ও গতিশীল প্রশাসন উপহার দেওয়া। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার মহিলাদের স্বশক্তিকরণের লক্ষ্যেও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে কাজ করছে। বর্তমান সরকারের সময়কালেই রাজ্যে মহিলা পরিচালিত স্ব-সহায়ক দলের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শুধু তাই নয় মহিলা স্বশক্তিকরণের লক্ষ্যে সরকারী চাকুরীর ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ সহ বালিকাদের জন্য বিনাখরচে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থাও সরকার করে দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিধায়ক ডাঃ দিলীপ দাস বলেন, বড়জলা বিধানসভা কেন্দ্রে এ এন এম প্রশিক্ষণ স্কুল স্থাপন এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। যা আগামী বছর দুয়েকের মধ্যে পূরণ হতে চলছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ত্রিপুরা হেলথ্ সার্ভিসের অধিকর্তা ডাঃ শুভাশিষ দেববর্মা বলেন, দূর্জয়নগরে রাজ্যের পঞ্চম এএনএম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন হতে যাচ্ছে। এই ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য ৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস এবং নুতননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমা দেবনাথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *