BRAKING NEWS

রাষ্ট্ৰের কল্যাণে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে তৈরি থাকার আহ্বান সংঘ–প্রধান মোহন ভাগবতের

গুয়াহাটি, ১১ ডিসেম্বর (হি.স.) : রাষ্ট্ৰের স্বাৰ্থ সর্বোপরি। তাই দেশের স্বাৰ্থে ছোট ছোট চিন্তা ছেড়ে আমাদের সকলকে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করার মানসিকতা গড়া উচিত। এক কথায়, রাষ্ট্ৰের কল্যাণে আমাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে তৈরি থাকতে হবে। এই আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সরসংঘচালক ডা. মোহন ভাগবত।

গত ৯ ডিসেম্বর থেকে আজ ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গুয়াহাটির উপকণ্ঠ চন্দ্ৰপুরের হাজংবরিতে অবস্থিত বিদ্যাভারতী বহুমুখী প্ৰকল্পে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘের উত্তর অসম প্ৰান্তের স্বয়ংসেবক এবং কাৰ্যকৰ্তাদের জন্য ‘প্ৰেরণা শিবির’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ‘প্ৰেরণা শিবির’-এর সমারোপ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে স্বয়ংসেবকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছিলেন সরসংঘচালক ডা. মোহন ভাগবত।

প্রদত্ত ভাষণে সরসংঘচালক আরও বলেন, অসংগঠিত রূপে কাজ করলে কোনও কাজের সফলতা পাওয়া যায় না। সংগঠিত হয়ে কাজ করলে যে-কোনও কাজে সাফল্য অর্জন হয়। এই কাজ করতেই ডা. বলিরাম হেডগেওয়ার ১৯২৫ সালে রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘ স্হাপন করে মানব নিৰ্মাণের প্ৰক্ৰিয়া শুরু করেছিলেন।
সংঘ-প্রধান বলেন, আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু মনভেদ হওয়া মোটেও উচিত নয়। সরসংঘচালক আরও বলেন, রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘের কাজ পুরনো হলেও প্রায় প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ সংঘের কাজে জড়িত হচ্ছেন। সংঘের বর্তমান পঞ্চম প্রজন্ম ষষ্ঠ প্রজন্মের জন্য রাষ্ট্ৰভক্তির কাজে তৈরি করছে।
দেশের সব সমস্যার মূলে সমাজের দুৰ্বলতা বলে সরসংঘচালক ডা. ভাগবত বলেন, ভারতবৰ্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে সে সময় বহু বড় বড় কাজ করা হয়েছিল। এর বিপরীতে ডা. হেডগেওয়ার সমাজের দুৰ্বলতা দূর করতে সমাজে বিদ্যমান দুৰ্বলতা, সজাগতার কাজ শুরু করেছিলেন। আক্ষরিক অৰ্থে আমরা স্বাধীনতা লাভ করলেও সমাজের দুৰ্বলতা দূর না হলে দেশ প্ৰকৃত স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে না, বলেন মোহন ভাগবত।
তিনি বলেন, রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘের স্বয়ংসেবকরা দৈনন্দিন ‘শাখা’র মাধ্যমে সাধনা করেন। তাঁরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির ব্যাপারে না ভেবে রাষ্ট্ৰহিতে নীরবে নিরন্তর কাজ কর চলেছেন। স্বয়ংসেবকরা অর্থ, সম্পদে মননিবেশ না করে দেশের কল্যাণে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে কাজ করেন। এমন-কি, ব্যক্তিগতভাবে স্বয়ংসেবকরা সুচরিত্ৰবান হতে যত্নশীল বলেও প্রদত্ত ভাষণে বলেন সরসংঘচালক। তিনি বলেন, সমাজের যাতে মঙ্গল হয়, তার প্রতি লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিরন্তর কাজ করছেন স্বয়ংসেবকরা। আমাদের কৰ্মাবলি সমাজের মানুষ নীরবে লক্ষ্য করছেন। স্বয়ংসেবকদের প্রতি মোহন ভাগবতের আবেদন, প্ৰতিদিন, প্ৰতিক্ষণ সমাজের জন্য অনুকরণীয় হতে হবে।
সরসংঘচালক বলেন, দেশের প্ৰতিটি গ্ৰামে ‘শাখা’ স্হাপন হলেই সমাজের উপকার হবে। তিনি বলেন, বৰ্তমান সমাজ আমাদের কাজ করার সুবৰ্ণ সুযোগ দিয়েছে। এই সুযোগের সদ্ব্যাবহার করে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া, ভারতবর্ষের আদি সভ্যতা-সংস্কৃতি, স্বাভিমান রক্ষার্থে তৎপর হয়ে দেশের স্বাৰ্থে কাজ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর থেকে আজ ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গুয়াহাটির উপকণ্ঠ চন্দ্ৰপুরের হাজংবরিতে অবস্থিত বিদ্যাভারতী বহুমুখী প্ৰকল্পে রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘের উত্তর অসম প্ৰান্তের স্বয়ংসেবক এবং কাৰ্যকৰ্তাদের জন্য তিনদিবসীয় ‘প্ৰেরণা শিবির’-এর আজ যবনিকা পড়েছে। প্ৰেরণা শিবিরে উত্তর অসম প্ৰান্তের দু-সহস্ৰাধিক স্বয়ংসেবক অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়া, আজকের সমারোপ অনুষ্ঠানে শারীরিক এবং বৌদ্ধিক প্ৰদৰ্শন করেছেন পূর্ণ গণবেশধারী স্বয়ংসেবকরা। অনুষ্ঠানে স্বয়ংসেবক ছাড়াও প্রায় চার হাজারের বেশি বিভিন্ন ক্ষেত্রের নাগরিক অংশগ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল রাতে গুয়াহাটি এসেছেন সংঘের সরসংঘচালক ডা. মোহন ভাগবত। আজ সকালে শিবিরে অংশগ্রহণকারী স্বয়ংসেবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। আগামীকাল সকালে অরুণাচল প্রদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন সরসংঘচালক মোহন ভাগবত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *