নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ নভেম্বর৷৷ শশুড় বাড়ি যেন একপ্রকার জমালয়ে পরিনত হয়েছে মেয়েদের জন্য৷ একের পর এক গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় এই বাক্য ব্যবহার করা মোটেও অন্যায়ের কিছু নয়৷ অমানবিক এবং পার্থিব চাহিদার লালসায় কম বয়সেই জীবন হারাচ্ছে মেয়েরা৷ আর এরকম একটা অবস্থানে দাঁড়িয়ে সমাজ তথা এই গৃহবধূদের ভরসার স্থান শুধুমাত্রই বিচারালয় অথবা আদালত৷ আর আদালত যখন এই সকল নর পিশাচ আমানুষদের তাদের কৃতকর্মের সাজা শোনায় তখন সেই বুক উজার করা মাতা পিতার জীবনে খানিকটা হলেও শান্তির মুহুর্ত বিরাজ করে৷ নিজের স্ত্রিকে নির্মমভাবে জালিয়ে মেরেছিল কাজল সরকার৷ বুধবার বিশালগড় জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারকর অভিযুক্তকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ৬ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করে৷ ঘটনার বিবরণে সরকারী আইনজীবী গৌতম গিরি জানিয়েছেন গত ৩রা মে,২০২০ সিপাহিজলা জেলার বিশ্রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল যাতে উল্লেখ করা হয় ১৩ বছর আগে সোনামুড়ার লিপিকা দাস সরকারের সামাজিক রীতিতে বিবাহ হয়েছিল বিশ্রামগঞ্জের বরজলার কাজল সরকারের সাথে৷ আর বিয়ের পর থেকেই আর পাচটা গৃহবধুর মত শারীরিক এবং মানসিক অশান্তির শিকার হতে থাকে লিপিকাও৷ এর মধ্যেও সমাজ ও পরিবারের কথা চিন্তা করে মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করেও সংসার ধরে রেখেছিলেন লিপিকা৷ কিন্তু নর পিশাচ কাজল ও তাঁর বাড়ির হায়নারা এর মধ্যেও বাঁচতে দিলনা লিপিকাকে৷ ৩০শে এপ্রিল,২০২০ বরজলার সেই বাড়িতে লিপিকার গায়ে কেরোসিন ঢেলে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ পরের দিন অর্থাৎ ১লা মে আগরতলার জিবি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়৷ পরে ৩রা মে ২০২০ লিপিকার মা বিশ্রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা দাখিল করে৷ বিশ্রামগঞ্জ থানা ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩০২ এবং ৪৯৮ ধারায় মামলা গ্রহন করে কাজল সরকারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়৷ বিশালগড়ের জেলা ও দায়রা আদালতের মাননীয় বিচারপতি দুই বছরেরও বেশী সময়ের দীর্ঘ শুনানীর পর বুধবার অভিযুক্ত কাজল সরকারকে ৩০৪ (পার্ট ১) ধারায় দোষী সাববস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করে৷ আর এই রায়গুলির মধ্যদিয়ে কোথাও না কোথাও রাজ্যের অগনিত নিপীড়িতা নির্যাতিতা লিপিকারা মানসিক শান্তি খুজে পায়৷
2022-11-10

