আনিপুর (অসম), ১৬ অক্টোবর (হি.স.) : নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী করিমগঞ্জ জেলার রাতাবাড়ি বিধানসভা এলাকাধীন আনিপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে সারা ভারত কৃষক সভার দ্বিদিবসীয় ২৫-তম করিমগঞ্জ জেলা সম্মেলন। ১৫ অক্টোবর প্রকাশ্য সভার পর শুরু হয়ে আজ ১৬ অক্টোবর শেষ হয় প্রতিনিধি সম্মেলন।
জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ১০১ জন কৃষক প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন। সোনাচান্দ সিনহা, কৃপেশ দাশগুপ্ত, হুমায়ুন কবিরকে নিয়ে গঠিত সভাপতিমণ্ডলি সভার কাজ পরিচালনা করে। বিগত সম্মেলনের পরবর্তীতে প্রয়াত কৃষক আন্দোলন সহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহিদকর্মীদের স্মৃতিতে শোকপ্রস্তাব গ্রহণের পর একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়। উদ্বোধনী ভাষণে রাজ্য সহ-সভাপতি রেজামন্দ আলি এই অঞ্চলের কৃষক আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার প্রসঙ্গে বক্তব্য পেশ করেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মোদী সরকারের আমলে শ্রমজীবী সহ গরিব মানুষের জীবনযন্ত্রণা অনেকগুণ বেড়েছে। সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী সম্পাদক কালিকুমার দে। প্রতিবেদনের উপর মোট পঁচিশজন প্রতিনিধির আলোচনার পর তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সম্মেলনে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানে দেশের গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার বিপদ, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, শনবিলের সংস্কার সহ বিলে মৎস্যজীবীদের অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখা, কৃষক উচ্ছেদ বন্ধ করা, কৃষকের পাট্টা দান, প্রতি পঞ্চায়েতে কৃষকের ফসলের সরকারি ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি একগুচ্ছ প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সম্মেলনে সোনাচান্দ সিনহাকে সভাপতি, কালিপদ নাথকে সম্পাদক করে ১৪ জনের জেলা কমিটি এবং ৪৫ জনের ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল নির্বাচিত করা হয়। একই সঙ্গে আগামী ২৯-৩১ অক্টোবর নলবাড়িতে অনুষ্ঠেয় রাজ্য সম্মেলনের জন্য ১১ জন প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। সমাপ্তি ভাষণে নির্মল দে শ্রমজীবী মানুষের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার উপর জোর দেন। কৃষক, শ্রমিক শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলনের সাথে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিরোধ করার প্রয়াস, প্রচার চালানোর উপর তিনি অগ্রাধিকার দেন। এ-জন্য শ্রমিক, কৃষক পরিবারের সব সদস্যদের তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সবশেষে শ্রমিক, কৃষক ঐক্যের স্লোগানের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি হয়।