করণদিঘি, ১০ অক্টোবর (হি.স.) : রাজবংশী প্রথা মেনে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন করণদিঘি ব্লকের গিরুলভাশায় অনুষ্ঠিত হয় ক্ষেতি লক্ষ্মীপুজো। রাজবংশী সমাজের রীতিনীতি মেনেই ২০০ বছরে থেকে এই পুজো হয়ে আসছে।
প্রাচীনকাল থেকে রাজবংশী সমাজের জমিদার জোতদাররা ঘটা করে বেশি ফসল পাওয়ার জন্য ক্ষেতি লক্ষ্মী মায়ের আরাধনা করতেন। কথিত আছে, একদা এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, অনাবৃষ্টির কারণে জমিতে ফসল না ফলায় অনাহারেই দিন কাটছিল এলাকার বাসিন্দাদের। সেই বছরেই গ্রামবাসীরা ধানের জমিতে লক্ষ্মীপুজো করার পরে ফিরে আসে সোনার ফসল। তারপর থেকেই এই লক্ষ্মীপুজোর নাম হয় ক্ষেতি লক্ষ্মীপুজো। কেউ কেউ একে ডাক লক্ষ্মী বলেন। মূলত, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন অনুষ্ঠিত হয় ক্ষেতি লক্ষ্মীপুজো।
পুজো কমিটির সদস্য দেবকুমার সিংহ জানান, পূর্ণিয়ার রাজা পিসি লাল চৌধুরীর আমল থেকেই গরুল ভাষাতে শুরু হয় লক্ষ্মীপুজো। সহজ সরল রাজবংশী সমাজের পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে ক্ষেতি লক্ষ্মীপুজোকে ঘিরে সকাল থেকেই উন্মাদনা দেখা দিয়েছে। এইদিনে রাজবংশী সমাজ বাড়ির আঙিনায় গোবরের প্রলেপ দেয়। ধানখেতে দেওয়া হয় ধূপধুনো যাতে ফসল উৎপাদন বেশি হয়। জমিদারি প্রথা বিলীন হয়ে যাওয়ার পরে রাজবংশী সমাজের পুরুষ ও মহিলারা নিষ্ঠার সঙ্গেই ক্ষেতি লক্ষ্মীপুজো করে চলেছেন।
পুজো কমিটি সভাপতি মণিলাল সিংহ জানান, পুজো উপলক্ষ্যে মেলা হবে। মেলায় তালের হাতপাখা পাইকারি ও খুচরো বিক্রি হয়। বাংলা ও বিহার থেকে পাইকাররা তালের হাতপাখা কিনতে আসেন।