BRAKING NEWS

Himanta Biswa Sarma :করিমগঞ্জবাসীর মন‌ জয় মুখ্যমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মার, শারদ-শুভেচ্ছা রাজ্যবাসীকেকরিমগঞ্জের একজনকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার ভাবনা

পিএফআই-এর সঙ্গে যোগাযোগকারীদের গ্রেফতার করা হবে

কাছাড়ের ডলু বাগানের চা শ্রমিকদের সঙ্গে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আলোচনা
করিমগঞ্জ (অসম), ১ অক্টোবর (হি.স.) : এলেন, ঘুরে ঘুরে দেখলেন পুজোমণ্ডপ, নিলেন মায়ের আশিস, সেইসঙ্গে করিমগঞ্জ শহরবাসীর মন‌ও জয় করলেন। মুখ্যমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সীমান্ত শহরবাসী দুর্গোৎসবে দ্বিগুণ আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। উৎসুক জনতাকে হাত নেড়ে শারদ-শুভেচ্ছাও জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তবে আজ রাজনৈতিক কোনও মন্তব্য থেকে বিরত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজোর আনন্দে শামিল হতে এসেছেন, তাই আজ কোনও রাজনীতি নয়। জেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে পুনরায় করিমগঞ্জ আসবেন বলে আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ সকাল সাড়ে এগারোটায় হেলিকপ্টারে মুখ্যমন্ত্রী শহরের সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের খেলার মাঠে অবতরণ করেন। সেখানে জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য, সাংসদ কৃপানাথ মালা, দুই বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল ও বিজয় মালাকার‌ সহ দলীয় কর্যকর্তাগণ মুখ্যমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। সেখান থেকে সোজা টাউন কালীবাড়িতে গিয়ে প্রথমে মা কালীকে প্রণাম নিবেদন করেন। তার পর কালীবাড়ি মণ্ডপে দেবী দুর্গার পুজার্চনা করেন তিনি। সেখানে পুজো শেষ করে রয়েল স্টার পুজো মণ্ডপের দ্বারোদঘাটন করেন।

তার পর সোজা চলে যান রামকৃষ্ণ মিশনে। সেখানে প্রথমে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মূর্তির সামনে কিছুক্ষণ ধ্যান করেন তিনি। মিশন প্রাঙ্গণে দুর্গা পূজার মণ্ডপ‌ও পরিদর্শন করেন তিনি।

সেখান থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সোজা চলে যান রাধামদনমোহন জিউর আখড়ায়। সেখানে মদনমোহনের মূর্তি দর্শনের পাশাপাশি দুর্গামূর্তিও দর্শন করেন। এর পর শহরের ক্লাব অগ্রগামী পুজো মণ্ডপে গিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে ক্লাবের পুজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর একে একে ইঅ্যান্ডডি কলোনি, ইয়ুথ কর্নার, শহরতলি, সুভাষ রোড ও শ্রীনগর সর্বজনীন পুজো মণ্ডপ, শতভিষা, পশ্চিমপল্লি, লঙ্গাই রোড সর্বজনীন সহ আরও বেশ কয়েকটি মণ্ডপের উদ্বোধন করে দেবী দুর্গা দর্শন করেন।

এছাড়া মুখ্যসমন্ত্রী বিভিন্ন ক্লাবের কার্যকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়‌ও করেন। আবার অনেকের আবদারে সেলফি পোজ দেন। তিনি দলীয় বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল এবং দলীয় নেতা বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের বাড়িতে গিয়ে দুর্গা পুজায় অংশগ্রহণ করেন। এক ফাঁকে মুখ্যমন্ত্ৰী ড. শৰ্মা করিমগঞ্জ শহরের থানারোডে অবস্থিত শ্রীমন্ত শংকরদেব নামঘরে গিয়ে গুরুদেবের প্রার্থনা করেছেন।

বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালের বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মুখ্য মন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, আজকের সফর মোটেও রাজনৈতিক সফর নয়। তিনি এসেছেন করিমগঞ্জবাসীর সঙ্গে পুজোর আনন্দে শামিল হতে। এখানে গোটা বছর ধরে চলে পুজোর প্রস্তুতি। এবার মহাষষ্ঠীতে এখানকার পুজোয় অংশ নিতে পেরে তিনি অত্যন্ত খুশি বলে জানান। বলেন, তিনি ফের করিমগঞ্জে আসবেন। আর তখন শহর সহ জেলার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এখানে পানীয় জল সহ আরও যে সব সমস্যা রয়েছে সে সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল বলে জানান। পরবর্তী সফরে এ সব নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এদিন মুখ্য মন্ত্রী জানান, করিমগঞ্জের একজন বিধায়ককে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার ভাবনা রয়েছে। তিনি পিএফআই প্রসঙ্গে বলেন, রাজ্য সরকার এই সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে পিএফআই-এর সঙ্গে যাদের সংযোগ রয়েছে তাদের খোঁজ চলছে। কাউকে রেয়াত দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কাছাড়ের ডলু বাগানের চা শ্রমিকদের বিষয়ে বলেন, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শিলচরে বসবে রাজ্যপ ক্যাবিনেট। তখন তিনি নিজে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।

মুখ্য।মন্ত্রী জানান, সরকারি তরফে দুর্গা পুজার জন্য কোনও ক্লাবকে পুঁজি দেওয়া অসম্ভব। এট হল সম্পূর্ণ ধর্মীয় বিষয়। বিহুর জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, দুর্গা পুজা আর বিহু সম্পূর্ণ পৃথক। বিহু একটা সংস্কৃতি। আর দুর্গা পুজা ধর্মীয় উৎসব। তাই এ নিয়ে বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের গলা ফাটানোর কোনও মানে নেই বলে জানান। তিনি সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে পুজোর কদিন সুন্দরভাবে কাটানোর প্রার্থনা করেন।

মুখ্যরমন্ত্রীর আগমনের জন্য শনিবার সীমান্ত শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করে তোলা হয়। মুখ্যামন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার রাস্তাগুলোর নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে এসপিজির টিম বিশেষ দায়িত্ব পালন করে। বলতে গেলে শনিবার মহাষষ্ঠীতে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার সফরকে কেন্দ্র করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মোড়ে দেওয়া হয় গোটা শহরকে। সফরকে কেন্দ্র করে জেলার সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো।

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসাবে ছিলেন শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায়, লক্ষ্মীপুরের বিধায়ক কৌশিক রাই, উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কংগ্রেস নেতা কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, বিধায়ক সিদ্দেক আহমেদ, বিজেপির এসসি মোর্চার প্রদেশ সভানেত্রী মুন স্বর্ণকার, জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য প্রমুখ। সেই সঙ্গে শহরের পুজো মণ্ডপ দর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পরিবহণ নিগমের অধ্যক্ষ মিশনরঞ্জন দাস, জেলা তফশিল উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ দাস, শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান দেবব্রত সাহা, পুরপতি রবীন্দ্র দেব, ডা. মানস দাস, অমরেশ রায়, শিপ্রা গুন, উপ-পুরপতি সুখেন্দু দাস, রাজশেখর দত্ত, অমিত পাল, পাপ্পু কুরি সহ জেলা বিজেপির বিভিন্ন স্তরের কার্যকর্তাগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *