BRAKING NEWS

জিবিপি হাসপাতালে পেটের টিউমারের জটিল অস্ত্রোপচারে মৃত্যুমুখ থেকে কিশোরীর প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসকরা

আগরতলা, ১৬ সেপ্টেম্বর : জিবিপি হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ কিশোরীর পেটের টিউমারের জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মৃত্যুমুখ থেকে বাঁচালেন চিকিৎসকরা। ওই কিশোরীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাধানগর মটরস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুটি সংস্থার সদস্যরা উদ্ধার করে আগরতলা জিবিপি হাসপাতালে এনে ভর্তি করান। মেয়েটি শারীরিক দুর্বলতা ও পেটব্যাথাজনিত সমস্যায় ভুগছিল। গত ২১ আগস্ট ২০২২ মেয়েটিকে আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ (এজিএমসি) অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের চিকিৎসকরা চিকিৎসা শুরু করেন।

হাসপাতালে আনুষঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টে মেয়েটির পেটে একটি টিউমার ধরা পরে। গত ৭ সেপ্টেম্বর আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ (এজিএমসি) অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ জে এল বৈদ্যের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল মেয়েটির টিউমারটির সফল অস্ত্রোপচার করেন। চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় তাকে অস্ত্রোপচারের লক্ষ্যে ডাঃ তপন দেববর্মা ও ডাঃ রণজিৎ রিয়াং দুইজন অ্যানেসথেসিওলজিস্টকে অ্যানেসথেসিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেয়েটি এতটাই অসুস্থ ছিল যে সে অ্যানেসথেসিয়া নেওয়ার মত অবস্থায় ছিল না।

অপারেশনের পর তাকে পাঁচদিন অ্যানেসথেসিয়া আইসিইউতে রাখা হয়। বর্তমানে মেয়েটি সুস্থ ও স্বাভাবিক আছে।

উল্লেখ্য সিধাই মোহনপুর মহকুমার অধীন চাঁচুবাজারের অন্তর্গত বৈরাগী পাড়ার বাসিন্দা এই মেয়েটির বয়স যখন ছয় বৎসর ছিল তখন তার মায়ের মৃত্যু হয়। মেয়েটির বাবা তখন দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং বর্তমানে দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি কারাগারে বন্দী রয়েছেন। মেয়েটি তখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। মেয়েটি তখন তার দাদুর সাথে থাকত। বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশুনা করার সময় সে ধীরে ধীরে ধূমপান, গাঁজা, ডেনড্রাইট, ট্যাবলেট, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ড্রাগস গ্রহণ সহ বিভিন্ন ধরনের নেশা জাতীয় সামগ্রীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়ও সে নেশাসক্ত ছিল।

মেয়েটি ২০১৬-২০১৭ সালে একটি বাড়িতে গৃহ পরিচারিকা হিসাবে নিযুক্ত হয়। কিন্তু মেয়েটি তখনও নেশা জাতীয় দ্রব্য ছাড়তে পারছিল না এবং সে তখন মাদকদ্রব্য ক্রয়ের জন্য নানা অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হয়ে পড়ে। এভাবে মাদকের চাহিদা পূরণ করতে গৃহ পরিচারিকার কাজ ছেড়ে মেয়েটি রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করতে শুরু করে। এরপর মেয়েটি প্রচন্ড অসুস্থ ও শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে রাধানগর মটরস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার পাশে পড়েছিল।

তারপর দুটি সংস্থার সদস্যরা সেখান থেকে আগরতলা গভর্নমেন্ট – মেডিক্যাল কলেজ (এজিএমসি) অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। চিকিৎসকদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা পরিষেবা লাভের ফলে মেয়েটি এখন বিপদমুক্ত এবং সে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পথে অগ্রসর হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা এক প্রেস রিলিজে এই সংবাদ জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *