আগরতলা, ২ সেপ্টেম্বর : রাজ্যে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি যোজনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। এই যোজনা রূপায়ণে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর নোডাল দপ্তর হিসেবে কাজ করবে। এজন্য নেওয়া হবে মাস্টার প্ল্যান। কেন্দ্রীয় সরকার চলতি অর্থবছরে এজন্য শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরকে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আজ সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্রা একথা জানান। তিনি জানান, ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগম রাজ্যের সমস্ত শিল্প কেন্দ্রগুলিতে শিল্প পরিকাঠামোর উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা চাওয়া হবে। তিনি আরও জানান, সারুমে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকাঠামোর উন্নয়নে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগম উদ্যোগ নিয়েছে। উদ্যোগপতিদের নির্বাচনের জন্য শিল্প উন্নয়ন নিগম আরএফপি তৈরি করেছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিশেষ সচিব জানান, রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনাময় সেক্টরে বিনিয়োগের জন্য গত ২০২১ সালের ৯ ও ১০ ডিসেম্বর ডেস্টিনেশন ত্রিপুরা-বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। এই সম্মেলনে বাংলাদেশ ও ভারতের একশোর উপরে শিল্পপতি এবং উদ্যোগপতিরা অংশগ্রহণ করেন। এই বাণিজ্য সম্মেলনে কৃষি, প্রাণীপালন, পর্যটন, প্রযুক্তি ইত্যাদি মিলিয়ে মোট ৮১টি মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রায় ২,৮০০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ স্বাক্ষরিত হয়। তিনি আরও জানান, গত ৪ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে যেখানে বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩৯০ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা তা ২021-22 অর্থবর্ষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,০০৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিশেষ সচিব জানান, রাজ্যের আনারস এবং কাঁঠালের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি দক্ষ শ্রমিক এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর ত্রিপুরা পাইনাপেল অ্যান্ড জ্যাকফ্রুট মিশন চালু করেছে। তিনি জানান, বর্তমানে ত্রিপুরায় ৪৬ হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে রাবার বাগান রয়েছে। রাবার উৎপাদন হচ্ছে ৯০ হাজার ৭১২ টিপিএ। মুখ্যমন্ত্রী রাবার মিশন প্রকল্পে আরও ৩০ হাজার হেক্টর এলাকায় রাবার বাগান করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। রাবার উৎপাদন বৃদ্ধি এবং উৎপাদনে সমস্যা নিরসনে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর মিনি রাবার মিশন প্রকল্প হাতে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। রাবার শিটের মান বাড়ানোর উদ্দেশ্যে পিএমইজিপি ও স্বাবলম্বন প্রকল্পের আওতায় আধুনিক স্মোক হাউস এবং রাবার প্রসেসিং সেন্টার গড়ার পরিকল্পনা দপ্তর হাতে নিয়েছে। চা শিল্পের উন্নতিকল্পে চা নিলাম কেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে মোট ৯৫৫ জন যুবক যুবতীকে প্রধানমন্ত্রী এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রামে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ৬১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব জানান, দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিতে রাজ্যে সংকল্প স্কিমে বিভিন্ন স্বসহায়ক দলের ৩৯০ জন সুবিধাভোগীদের নিয়ে এন্টারপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম করা হয়েছে। সামর্থ প্রকল্পে বিভিন্ন হ্যান্ডলুম ক্লাস্টারে ২৫৮ জন মহিলাকে জল জীবন মিশনের আর্থিক সহায়তায় ৩৪০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা স্বপ্না দেবনাথ, দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা সঞ্জয় চক্রবর্তী।

