BRAKING NEWS

Yassin Malik : ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নয়াদিল্লি, ২৫ মে (হি. স.) : সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মে অর্থ জোগানের মামলায় কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা ইয়াসিন মালিকের সাজা ঘোষণা করল দিল্লির পাটিয়ালা হাউজ কোর্ট । কাশ্মীরের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল আদালত। বুধবার বিকেলে রায় শোনাল দিল্লির বিশেষ এনআইএ আদালত। দু’টি মামলায় ইয়াসিনকে যাবজ্জীবনের সাজা শোনানো হয়েছে। তাঁকে জরিমানাও করা হয়েছে।

ইয়াসিন মালিকের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা রুজু রয়েছে। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ, জঙ্গি সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ রয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের লিবারেশন ফ্রন্টের এই প্রধানের বিরুদ্ধে।

জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ যদিও ইয়াসিনের মৃত্যুদণ্ডই চেয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে আনা কোনও অভিযোগেরই বিরোধিতা করেননি ইয়াসিন। আদালত সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১২০-বি ধারায় ১০ বছরের সাজা হয়েছে ইয়াসিনের। জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। ১২১ ধারায় যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। ১২১-এ ধারায় ১০ বছরের সাজা এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ইউএপিএ আইনের ১৮ ধারায় ১০ বছরের সাজা, ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে ইয়াসিনকে। ২০ নম্বর ধারায় ১০ বছরের সাজা এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩৮ ও ৩৯ নম্বর ধারায় ৫ বছর করে জেল এবং ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।


যদিও নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবি করছেন ইয়াসিন। আদালতে তিনি বলেন, “এনকাউন্টারে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর ৩০ মিনিটের মধ্যে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। অটল বিহারি বাজপেয়ী আমাকে পাসপোর্ট দিয়েছিলেন। আমি অপরাধী নই। তাই আমাকে নিজের বয়ান রেকর্ড করার সুযোগ দিয়েছিল ভারত।” ইয়াসিন জানান, ১৯৯৪ সালে অস্ত্রত্যাগের পর থেকে মহাত্মা গান্ধী নীতি মেনে, তাঁর আদর্শ অনুসরণ করেই এগিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “তার পর থেকে কাশ্মীরে অহিংস রাজনীতিরই অংশ আমি।”তিনি আরও জানিয়েছেন, দেশের সাত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। গত ২৮ বছর উপত্যকায় সন্ত্রাস অথবা হিংসার সঙ্গে তাঁর কোনও রকম সংযোগ নেই বলেও দাবি করেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবিকে কার্যত চ্যালেঞ্জই জানান। ইয়াসিনের সাফ বক্তব্য, “গত ২৮ বছরে কোনও রকম সন্ত্রাসী কাজকর্ম অথবা হিংসা, নাশকতায় যদি যুক্ত হয়ে থাকি আমি, এবং তা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে মৃত্যুদণ্ড মাথা পেতে নেব। কোনও ভাবেই প্রাণভিক্ষা চাইব না। আদালত যা রায় দেবে, মাথা পেতে নেব।”


এই সাজা ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকেই থমথমে উপত্যকা। সমস্ত দোকান, বাজার, ব্যবসা বন্ধ একাধিক এলাকায়। রাস্তায় যানবাহন চোখে পড়ছে অল্পবিস্তর। শ্রীনগরের মত স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টের এনআইএ আদালতের বাইরে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হয়। আদালতে পৌঁছন এনআইএ-এর স্পেশাল বিচারপতি প্রবীন সিং। কড়া পাহারায় দিল্লি পুলিশ।


উল্লেখ্য, ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অপরাধে, ১২১ ধারায় ইয়াসিনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়েছিল এনআইএ । অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের আর্জিই জানানো হয়। আর এই মামলায় সর্বনিম্ন সাজা যাবজ্জীবন। ইয়াসিনের আইনজীবী তাই মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবনের আর্জি জানিয়েছেন। সেই আর্জিই মঞ্জুর করল পাটিয়ালা হাউজ কোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *