BRAKING NEWS

Cancel : আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত অসমের পাহাড় লাইনে সমস্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বাতিল

হাফলং (অসম), ২২ মে (হি.স.) : উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত পাহাড় লাইনে সমস্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বাতিল করে দিয়েছে। প্রকৃতির তাণ্ডবে লামডিং-বদরপুর হিল সেকশনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে লামডিং-বদরপুর হিল সেকশনের প্রায় ৫৮টি জায়গায় ভূমিঙ্খলনের ফলে রেলপথ বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রকৃতির কালরূপে পাহাড় লাইনের সবচেয়ে বড় রেল স্টেশন নিউহাফলং স্টেশন সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া লামডিং-বদরপুর হিল সেকশনের বেশ কয়টি রেল সেতুর ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। বেশ কিছু রেল সেতুর অ্যাপ্রচোর মাটি সরে গেছে। এমন-কি পাহাড় লাইনের অনেক স্থানে রেল লাইনের নীচ থেকে মাটি সরে গিয়ে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক স্থানে রেল লাইন শূন্যে ঝুলছে। তাছাড়া অনেক স্থানে রেল লাইনের পাশের মাটি নদীতে তলিয়ে গেছে।

এরই মধ্যে লামডিং-বদরপুর পাহাড় লাইনকে সচল করে তুলতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেলপথ মেরামতির কাজ চালিয়েছে। পাহাড় লাইনের বিভিন্ন স্থানে রেলপথ মেরামতির জন্য স্পট টেন্ডার ডেকে বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। পাহাড় লাইনের বিভিন্ন ধস-বিধ্বস্ত এলাকায় উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের শীর্ষ আধিকারিকরা ক্যাম্প করে রেলপথ মেরামতির কাজ নিজেরা তদারকি করছেন। কেননা, লামডিং-বদরপুর হিল সেকশন হচ্ছে বরাক উপত্যকা সহ ত্রিপুরা, মণিপুর (কাছাড় জেলা-ঘেঁষা অঞ্চল) ও মিজোরামের লাইফ লাইন।

এই পাহাড় লাইনই ত্রিপুরা, মণিপুর, মিজোরাম এবং বরাকের তিন জেলা রেলপথের সংযোগী। এই রেলপথ দিয়েই বরাক উপত্যকা সহ এই তিনটি রাজ্যের পণ্য সামগ্রী নিয়ে যাওয়া হয়। তবে গত ১৪ মে লামডিং-বদরপুর হিল সেকশনে ধস নেমে এই রেলপথটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ে।

এদিকে এখন পর্যন্ত নিউহাফলং স্টেশনে ধস সরানোর কাজে হাত দিতে পারেনি রেল বিভাগ। কারণ নিউহাফলং স্টেশন যাওয়ার পথটি সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে অবিলম্বে নিউহাফলং স্টেশনকে পূর্বের রূপ ফিরিয়ে আনতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কাজে হাত দেবে বলে জানা গিয়েছে।

অন্যদিকে রেলপথ বন্ধ হয়ে পড়ার দরুন এবার সড়কপথে ক্র্যুইজারে হাফলং থেকে লামডিংয়ের ভাড়া হয়েছে ৫০০ টাকা। তাছাড়া শিলচর থেকে মেঘালয়, লংকা হয়ে হাফলং আসতে ক্র্যুইজার গাড়িতে যাত্রীদের কাছ থেকে ১,৭০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

ডিমা হাসাও জেলায় যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটেছে এরজন্য ব্রডগেজ ও মহাসড়কের কাজকেই দায়ী করেছেন উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য দেবোলাল গার্লোসা। তিনি বলেন, ব্রডগেজ ও মহাসড়কের কাজ করতে গিয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি নির্মান সংস্থাগুলি। এই দুটি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে অপরিপক্ক ও অবৈজ্ঞানিক ভাবে অবাধে পাহাড় কেটে ফেলায় এবং পাহাড়ি নদীর গতিপথ বন্ধ করে দেওয়ার ফলেই এ ধরনের দুর্যোগ সংঘটিত হয়েছে বলে মনে করেন করেন দেবোলাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *