করিমগঞ্জ (অসম), ১৬ মে (হি.স.) : গত ৪৮ ঘণ্টায় তেমন ভারী বৃষ্টিপাত না হলেও করিমগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। করিমগঞ্জ শহর সহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি একই। লঙ্গাই ও সিংলা নদী বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও, শহরের গা ঘেঁষে যাওয়া কুশিয়ারা নদী প্রতিবেদন পাঠানো পর্যন্ত বিপদসীমার প্রায় এক মিটার উপর দিয়ে বইছে। যে কোনও সময় শহর ও গ্রাম বন্যার কবলে পড়তে পারে। এই আতঙ্কে রয়েছেন জেলার তিনটি নদীর তীরবর্তী মানুষ। পরিস্থিতির দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে জেলা প্রশাসন সহ দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী। বন্যার মোকাবিলা করতে দফায় দফায় বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করেছেন জেলাশাসক মৃদুল যাদব।
গত দুদিন থেকেই বৃষ্টির প্রভাব কম। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও সূর্যের উঁকিঝুঁকি দেখে বন্যাক্রান্ত জেলাবাসীকে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে দেখা যাচ্ছে। তবে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত জনমনে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ জল বিপদসীমার প্রায় এক মিটার উপর দিয়ে বইছে। ফলে যে কোনও সময় অবস্থা বেগতিক হতে পারে। এই আতঙ্কে আছেন জনগণ।
কুশিয়ারার জলস্ফীতি থেকে শহরকে বাঁচাতে একদিকে যেমন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ মাঠে নেমেছে, অন্যদিকে সীমান্তে কড়া সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে বিএসএফ ও পুলিশ বাহিনী। শহরের গা ঘেঁষে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর জল যাতে শহরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য শহরের বিসর্জনঘাটে মাটি-ভরতি বস্তা দিয়ে অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ। বাঁধের উপর রাউন্ড দ্য ক্লক কড়া নজর রেখে চলছে জেলা প্রশাসন সহ জলসম্পদ বিভাগ। পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা দফায় দফায় নদীর বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করছেন।
এদিকে জমা জলের দরুন শহরের সাধারণ জনতা এবং ব্যবসায়ীরা নানা ভাবে তথা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যার কারণে গ্রামাঞ্চলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। এতে কৃষককুলকে আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বন্যার জল বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ছাউনিতে প্রবেশ করেছে। ফলে কুশিয়ারার প্রলয় থেকে বাঁচতে জগন্নাথ ও চাঁদশ্রীকোণা বিএসএফ ক্যাম্প থেকে জওয়ানরা তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে জলের মধ্যে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে জওয়ানরা ক্যাম্প পাহারা দিচ্ছেন। শহরের স্টিমারঘাট সহ জবাইনপুর ও চড়াকুড়ি বিএসএফ ক্যাম্পে বন্যার জল প্রবেশ করেছে।