BRAKING NEWS

ডিমা হাসাওয়ে নিপকোর জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্পের টারবাইন পাইপে বিস্ফোরণ, হত ইঞ্জিনিয়ার সহ তিন, বাড়তে পারে মৃত্যুর সংখ্যা

উমরাংসো (অসম), ২৬ মার্চ (হি.স.) : ডিমা হাসাও জেলার অন্তৰ্গত উমরাংসোর পাঁচ কিলো এলাকায় নর্থ-ইস্টার্ন ইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (নিপকো)-এর খানডং ড্যামের জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্পের জলপরিবাহী একটি টারবাইন পাইপে বিস্ফোরণ হয়েছে। এ ঘটনায় এক ইঞ্জিনিয়ার ও এক ম্যানেজার সহ তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ শনিবার সকাল প্রায় ১০টায় সংঘটিত বিস্ফোরণে টারবাইন পাইপ লাইন দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১২ হাজার লিটার গতিতে জল প্রবাহিত হচ্ছিল। জানা গেছে, সকালে যখন খানডং ড্যামের টার্বাইন বিস্ফোরিত হয় সে সময় ড্যামের ৫ নম্বর স্ল্যুইচ গেট খোলা ছিল। পাইপে বিস্ফোরণ সংঘটিত হলে এই তিন কর্মচারী জলের স্রোত আটকাতে গেট বন্ধ করতে যান। তখন বাঁধভাঙা জলের স্রোতে নেমে আসা পাথর ও গাছের কবলে পড়ে তাঁরা হারিয়ে যান। দমকল বাহিনী এবং এসডিআরএফের জওয়ানরা প্ৰথমে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত তিনজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. বাইলুংদা মাদাম তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহতদের একজন উজান অসমের যোরহাটের বাসিন্দা নিপকোর ইঞ্জিনিয়ার অনুপম শইকিয়া, সিভিল ম্যানেজার জয়ন্ত হাজরিকা এবং কন্ট্রাকচুয়াল কর্মচারী ডিমা হাসাও জেলার দিয়ুংব্রার বাসিন্দা ডিমিরাজ জহরি বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করছেন নিপকো কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সে সময় খানডং ড্যামের জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্পে আরও কয়েকজন কর্মরত ছিলেন।
জলের তোড়ে আর কোনও কর্মচারী নিখোঁজ হয়েছেন কিনা, তাই তালাশি অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে রাতের অন্ধকার নেমে আসায় এবং বৃষ্টিপাতের দরুন তালাশি অভিযান আপাতত বন্ধ করেছেন অভিযানকারীরা। এছাড়া ড্যাম সংলগ্ন এলাকায় কর্মচারী ও তাঁদের পরিবার পরিজন ও বাসিন্দাদের উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছেন নিপকো কৰ্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মার্চ রাত থেকে ডিমা হাসাও জেলা এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে সমগ্র ডিমা হাসাও জেলায় ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। এছাড়া প্রবল বৃষ্টিতে খানডং ড্যামে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় এত বড় দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর ভোর প্রায় পাঁচটা নাগাদ ডিমা হাসাও জেলার উমরাংসো কপিলি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পস্থলে জল পরিবাহী পাইপ লাইন বিস্ফোরণের ফলে মহাজলপ্রলয়ের কবলে পড়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন পাওয়ার হাউসে কর্মরত জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট নামলাই, জয়সিং টিসু, দক্ষিণ ভারতের একটি ব্যক্তিগত সংস্থার কর্মী রাজু রেড্ডি ও সাফাই কর্মী প্রেমপাল বাল্মিকী। মাটি-পাথর, বালি-সহ জলের স্রোতে এই চারজন সন্ধানহীন হয়ে গিয়েছিলেন। পাঁচদিন পর প্রকল্পস্থলে জলের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার পর এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ বাহিনী অভিযান আরম্ভ করে নিখোঁজ চারজনকে উদ্ধার করেছিল। সেবার নিখোঁজ চার কর্মীকে উদ্ধারের জন্য এনডিআরএফ ও এসডিআরএফের মোট ৯০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *